আমীরুল মু’মিনীন হযরত উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-এর মাথা মুবারক বেয়ে রক্তের প্রবাহ এবং পাকিস্তানী প্রধানমন্ত্রীর আনন্দে গদগদ হবার ঘটনা প্রসঙ্গ

সংখ্যা: ১৭৮তম সংখ্যা | বিভাগ:

বায়তুল মোকাদ্দাস বিজিত হলো। কিন্তু তখনও চাবি দেয়া হয়নি। বলা হলো, খলীফা স্বয়ং আসলে তাঁর কাছে চাবি দেয়া হবে। সত্যিই আমীরুল মু’মিনীন হযরত উমর বিন খত্তাব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বায়তুল মোকাদ্দাস রওয়ানা হলেন। যখন পৌঁছলেন, তখন তাঁর হাতে ছিলো উটের রশি আর তাঁর গোলাম ছিলো উটের উপর। ইহুদী ও নাছারারা আসমানী কিতাব মিলিয়ে দেখলো এরকমটিই লিখা আছে। অতএব, আর পারা যাবে না নিশ্চিত হয়ে, তারা বায়তুল মোকাদ্দাসের চাবি বুঝিয়ে দিলো।

এরপর তারা নিবেদন করলো, আমীরুল মু’মিনীন, হযরত উমর বিন খত্তাব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-এর সম্মানে এক ভোজ দেয়ার। তাও অনুমোদিত হলো। ভোজসভায় দেখা গেলো আমীরুল মু’মিনীন হযরত উমর বিন খত্তাব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু দস্তরখানায় পড়ে যাওয়া রুটি টুকিয়ে টুকিয়ে খাচ্ছেন।পাশ থেকে কেউ একজন, রাজদরবারে এভাবে টুকিয়ে খাবারের ব্যাপারে আপত্তি জানালে তিনি দ্বীপ্ত কণ্ঠে বলে উঠলেন, আমি কী আমার হাবীব, নূরে মুজাস্সাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সুন্নত ছেড়ে দিব- এসব নাদান, কাফিরদের জন্য?

কবি ইকবাল এ প্রসঙ্গে বলেছেন, “ঐ যামানার মুসলমান সম্মানিত কুরআন-সুন্নাহ অনুসরণ করে আর তোমরা লাঞ্ছিত পদদলিত হচ্ছ কুরআন-সুন্নাহ ছেড়ে দিয়ে।”

কবি ইকবাল যদি বেঁচে থাকতেন তাহলে তিনি আজ ভীষণ মুষড়ে পড়তেন এই জন্য যে, ‘খোদ তার স্বপ্নের দেশের প্রধানমন্ত্রী কী লজ্জাস্করভাবে কুরআন-সুন্নাহ ছেড়ে ভিনদেশী, বিধর্মী তথা পাকিস্তানের শত্রুরাষ্ট্র কথিত ভারতের নায়িকার পদচুম্বনকারীতে পরিণত হয়েছে’- তা দেখে।

 ইন্টারনেট সূত্রে জানা যায়, “ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সম্প্রতি পাকিস্তান সফরে গিয়ে সেখানের প্রধানমন্ত্রী ইউসুফ রাজা গিলানিকে বিশেষ একটি উপহার দিয়েছেন। আর তা হলো বলিউড তারকা ঐশ্বরিয়া রাই অভিনীতি একবাক্স চলচ্চিত্রের ডিভিডি। উপহার পেয়ে যারপরনাই বিস্মিত ও আনন্দিত গিলানি। ৫৫ বছরের গিলানির প্রিয় চলচ্চিত্র তারকা বলিউডের ঐশ্বরিয়া রাই। কথাটা জানতেন প্রণব মুখার্জী। তাই পাকিস্তানে যাওয়ার সময় অ্যাশের একগুচ্ছ ছবি সঙ্গে নেন তিনি। গিলানি তার বই ‘চাহ এ ইউসুফ সে সাদা’ এ লিখেছেন, জেলে থাকাকালে ল্যাপটপে ঐশ্বরিয়ার ছবি দেখে সময় কাটাতেন। পারভেজ মুশাররফের শাসনামলে ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল অবধি তিনি কারারুদ্ধ ছিলেন। পাকিস্তানের এক টিভি চ্যানেলের সঙ্গে সাক্ষাতকালে গিলানি বলেছেন, তিনি পাকিস্তানে ভারতের ছবি দেখানোর পক্ষে। গানের প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী জানান, ভারতের লতা মুঙ্গেশকার তার প্রিয় শিল্পী।”

শুধু বর্তমান প্রধানমন্ত্রী গিলানিই নয় সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফও ছিলেন আরেক ইন্ডিয়ান নায়িকার ভক্ত। সে নায়িকা নওয়াজের সাথে ফোনে কথা বললে তিনি আত্মহারা হয়ে উঠতেন।

বলার অপেক্ষা রাখেনা, পাকিস্তানের মত মুসলিম দেশের প্রধানমন্ত্রী যদি ভারতের নায়িকার পাগল হয় তাহলে পাকিস্তানের সার্বভৌমত্ব কত ঠুনকোর পর্যায়ে পৌঁছে এবং মুসলমান শাসকদের চারিত্রিক অবস্থানটা কত নিম্নপর্যায়ের ও লজ্জাকর প্রতিপন্ন হয়। অথচ সেটাই প্রকৃত সত্য। আর এ সত্যের মাঝেই প্রকাশ পায় যে, কেন সারাবিশ্বে মুসলমানদের এত দূরাবস্থা।

অর্ধ পৃথিবীর মালিক আমীরুল মু’মিনীন হযরত উমর রদিদ্বয়াল্লাহু তায়ালা আনহু ভিনদেশী রাষ্ট্রে গিয়েও আল্লাহ পাক-এর হাবীব, নূরে মুজাস্সাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর একটা সুন্নত ছাড়েননি। আর ভিনদেশী বা বেগানা মেয়ে লোকের দিকে তাকানো তো তাঁদের ক্ষেত্রে কল্পনা বা স্বপ্নেও চিন্তা করা ঈমানের খেলাফ।

বরং ইতিহাস হলো- একবার হযরত উমর বিন খত্তাব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু যখন আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর দরবার শরীফ-এ ঢুকলেন তখন দেখা গেলো তাঁর কপাল মুবারক ফেটে দর দর করে রক্ত পড়ছে বা ঝরছে। আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, হে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু! কে আপনার মাথায় আঘাত করলো?

জবাবে হযরত উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বললেন, “ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আরবের বুকে এমন কোন মা নেই, যে এমন কোন সন্তান প্রসব করেছে, যে হযরত উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-এর মাথায় আঘাত করতে পারে। তবে আপনার একটা হাদীছ শরীফ আমার মাথা ফাটিয়ে দিয়েছে।”

সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাস্সাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, সেটা কোন্ হাদীছ শরীফ?

আমীরুল মু’মিনীন হযরত উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বললেন, “আমি আমার মেয়ে উম্মুল মু’মিনীন হযরত হাফসা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা-এর সাথে বসা ছিলাম। হঠাৎ আমার মনে হলো, আপনি ইরশাদ করেছেন, “তোমরা কোন বেগানা মেয়েলোকের সাথে একাকী বসো না। তবে তোমাদের তৃতীয় সঙ্গী হবে শয়তান।” যদিও হাফসা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা আমার মেয়ে এবং উম্মুল মু’মিনীন তবুও সতর্কতা ও বেমেছাল তাক্বওয়াবশতঃ আমি লাফ দিয়ে ঘর থেকে বের হয়ে যাই। সে সময় দরজার চৌকাঠে লেগে আমার কপাল ফেটে যায়।” (সুবহানাল্লাহ)

পাঠক! আমীরুল মু’মিনীন হযরত উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু পর্দার ব্যাপারে এত কঠোর ছিলেন বলেই কুরআন-সুন্নাহ্র উপর এত অটল ছিলেন বলেই তাঁরা অর্ধ পৃথিবীর মালিক হয়েছিলেন। তাঁদের প্রতাপে গোটা কাফির বিশ্ব থরথর করে কাঁপত।

আর আজকে নওয়াজ শরীফ ও গিলানি গং ভারতের বাজারী মেয়ের ভক্ত হবার এবং সেটাকে ফলাও করে প্রচার করার এবং সে বাজারী মেয়ের ছবি পেয়েই আনন্দে গদগদ হবার প্রেক্ষিতেই আমেরিকার আঙ্গুলি নির্দেশে তারা উঠানামা করে। কান ধরে উঠবস করে। মুশাররফকে হঠাতে কর্মসূচী গ্রহণ করে। পরমাণু শক্তিধর হয়েও ভারতের কাছে নতজানু পররাষ্ট্রনীতি প্রদর্শন করে। আর সারাদিন আমেরিকা, আমেরিকা জপ করে। তাদের পদলেহন করে আত্মতৃপ্ত হয়। (নাঊযুবিল্লাহ)

 উল্লেখ্য, এ শুধু পাকিস্তানের চিত্র নয়। মূলতঃ এ চিত্র গোটা মুসলিম বিশ্বের। গোটা মুসলিম বিশ্বের শাসক, সেনাবাহিনী, আমলা, মিডিয়া সব জায়গাই বিধর্মীরা মেয়ে লোক দিয়ে কব্জা ও করায়ত্ত করে রেখেছে। হাদীছ শরীফ-এ তাই ইরশাদ হয়েছে, “বণী ইসরাইলের পর আমার উম্মতের জন্য সবচেয়ে বেশি ভয় করি মেয়েলোকের ফিৎনাকে।”

মহান আল্লাহ পাক এ ফিৎনা সম্পর্কে আমাদের সবাইকে হিদায়েত দান করুন, হিফাযত করুন। (আমীন)

-মুহম্মদ ওয়ালীউর রহমান।

ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি ও ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা-৫০

বাতিল ফিরক্বা ওহাবীদের অখ্যাত মুখপত্র আল কাওসারের মিথ্যাচারিতার জবাব-১৩ হাদীছ জালিয়াতী, ইবারত কারচুপি ও কিতাব নকল করা ওহাবীদেরই জন্মগত বদ অভ্যাস

যুগের আবূ জাহিল, মুনাফিক ও দাজ্জালে কায্যাবদের বিরোধিতাই প্রমাণ করে যে, রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী হক্ব। খারিজীপন্থী ওহাবীদের মিথ্যা অপপ্রচারের দাঁতভাঙ্গা জবাব-৫১

‘থার্টিফাস্ট নাইট, ভালেন্টাইন ডে আর পহেলা বৈশাখের’ নামে হুজ্জোতির জন্য ধর্মব্যবসায়ীদের কৌশলগত নিষ্ক্রীয়তা, স্বার্থবাদী মৌসুমী রাজনৈতিক তৎপরতা এবং সংস্কৃতি বিপননকারীদের দূরভিসন্ধিতা ও মধ্যবিত্তের  তত্ত্ব-তালাশহীন প্রবণতা তথা হুজুগে মাতা প্রবৃত্তিই দায়ী

অবশেষে জামাতীরা স্বীকার করিল যে, মুক্তি পাইতে চাহিলে মুরীদ হইতে হয়। আল্লাহ পাক-এর ওলী বা দরবেশ হইতে পারিলে মুক্তি পাওয়া যায়। কিন্তু জামাতীরা তাহা নয় বলিয়াই আখিরাত তো দূরের কথা দুনিয়াতেই তাহারা দুর্নীতির দায়ে গ্রেফতার। আর মইত্যা রাজাকারের ফতওয়া অনুযায়ী তো- তাহাকেই কতল করা ওয়াজিব।