ইমাম আবূ ইউসূফ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার প্রতি সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামে আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার অছিয়ত মুবারক (৫)
অসিয়ত মুবারক (৩৫): সাধারণ মানুষ আপনার সাথে অহেতুক তর্কে জড়িয়ে পড়লে কিংবা বাদানুবাদ করলে তাদের প্রতিউত্তর করবেন না। বরং সহনশীলতার পথ অবলম্বন করবেন। অন্যথায় তা আপনার মান-সম্মান বিনষ্টের কারণ হবে। ইলিমের ইহানত হবে।
অছিয়ত মুবারক (৩৬): সত্য কথা বলার ক্ষেত্রে কখনো কারো প্রভাব-প্রতিপত্তির পরোয়া করবেন না। যদিও তারা রাজা-বাদশা, আমির-উমরা হোক না কেন।
অছিয়ত মুবারক (৩৭): সাধারণ মানুষ যে পরিমাণ ইবাদত-বন্দেগী, যিকির-ফিকির করে সে পরিমাণ ইবাদত-বন্দেগী, যিকির-ফিকির করে পরিতুষ্ট হবেন না। বরং সাধারণ মানুষ থেকে অধিক পরিমানে যিকির-ফিকির, ইবাদত-বন্দেগী করবেন। সাধারণ মানুষ যখন আপনাকে তাদের চেয়ে অধিক ইবাদত-বন্দেগী, যিকির-ফিকির করতে না দেখবে তখন তারা আপনার সম্পর্কে খারাপ ধারণা পোষণ করবে। বলবে, ইবাদত-বন্দেগী, যিকির-ফিকিরে আপনার আগ্রহ কম। আর এই বিশ্বাস বদ্ধমূল হবে যে, আপনার ইলিম আপনাকে এতটুকু উপকার ও ফায়দা দিতে পারেনি যতটুকু তাদের অজ্ঞতা তাদেরকে ফায়দা দান করে। নাউযুবিল্লাহ!
এ জাতীয় অনেক কথা তারা বলতে থাকবে যা তাদের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। অথচ আপনি হয়তো একবারও ভাবেননি যে, আপনার কারণেই তাদের এ বদধারণার সৃষ্টি হয়েছে।
অছিয়ত মুবারক (৩৮): আপনি যদি এমন কোন শহরে বা স্থানে প্রবেশ করেন যেখানে কোন বিশেষ সম্মানের অধিকারী, হক্কানী-রব্বানী আলিম থাকেন সেখানে নিজের খ্যাতির ফিকির করবেন না। বরং সাধারণ লোকদের মত সেখানে অবস্থান করবেন। যাতে সাধারণ লোক ইহা মনে করে যে, আপনার উদ্দেশ্য এই নয় যে, তাদের মান-সম্মান নিঃশ্বেষ করে আপনি সেই স্থান নিজের জন্য প্রস্তুত করবেন। আর যদি এরূপ মনোভাব পোষণ করেন তাহলে তারা সকলে সম্মিলিতভাবে আপনার বিপক্ষে চলে যাবে। তারা আপনার মাযহাবের সমালোচনা করবে। আর সাধারণ লোকেরাও আপনার বিরোধিতায় সংঘবদ্ধ হবে। আপনার দিকে তারা রুক্ষ দৃষ্টিতে দেখতে থাকবে। আর এমনিই আপনি সকলের সমালোচনার পাত্রে পরিণত হবেন।
অছিয়ত মুবারক (৩৯): আহলে ইলিম অর্থাৎ কোন হক্কানী-রব্বানী আলিম উনার উপস্থিতিতে আপনি কোন ফতওয়া দিবেন না। যদিও সর্বসাধারণ আপনার ফতওয়া প্রত্যাশা করে। আর আহলে ইলিম অর্থাৎ হক্কানী-রব্বানী আলিম উনাদের সাথে তর্কযুদ্ধ ও কথা কাটাকাটিতে লিপ্ত হবেন না।
অছিয়ত মুবারক (৪০): আহলে ইলিম অর্থাৎ হক্কানী-রব্বানী আলিম উনাদের সামনে নির্ভরযোগ্য ও দলীল-প্রমাণ ছাড়া কোন কথা বলবেন না।
অছিয়ত মুবারক (৪১): কারো পীর-মাশায়িখ ও উস্তাদগণ সম্পর্কে কোন কটুক্তি করবেন না। কেননা, এতে তারাও আপনার পীর-মাশায়িখ ও উস্তাদগণের শানে কটুক্তি করা শুরু করবে। মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
وَلَا تَسُبُّوا الَّذِيْنَ يَدْعُوْنَ مِنْ دُونِ اللهِ فَـيَسُبُّوا اللهَ عَدْوًا بِغَيْرِ عِلْمٍ
অর্থ: আর কাফিরেরা মহান আল্লাহ পাক উনাকে বাদ দিয়ে যাদের উপাসনা করে, তোমরা তাদেরকে গাল-মন্দ করো না। এতে তারাও বিদ্বেষ ও অজ্ঞতাবশতঃ মহান আল্লাহ পাক উনার শানে মন্দ বলবে। নাউযুবিল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা আনয়াম শরীফ: সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ১০৮)