ছহিবাতু সাইয়্যিদি সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ, সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি আলাল আলামীন, হাবীবাতুল্লাহ, রহমাতুল্লিল ‘আলামীন, ছাহিবায়ে নেয়ামত, যিক্রুল্লাহ, আল ওয়াসীলাতু ইলাল্লাহ, আল ওয়াসীলাতু ইলা রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুত্বহ্হার, মুত্বহ্হির, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম, সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নছীহত শরীফ (৯)

সংখ্যা: ২৯২তম সংখ্যা | বিভাগ:

নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি ঈমান এনে উনার আনুগত্য করা ফরয

মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র সূরা আহযাব শরীফ উনার ৪৫-৪৭ নং পবিত্র আয়াত শরীফে ইরশাদ মুবারক করেন,

يَاۤ أَيُّـهَا النَّبِيُّ إِنَّۤا أَرْسَلْنَاكَ شَاهِدًا وَّمُبَشِّرًا وَّنَذِيْـرًا. وَدَاعِيًا إِلَى اللهِ بِإِذْنِهٖ وَسِرَاجًا مُنِيْـرًا. وَبَشِّرِ الْمُؤْمِنِيْنَ بِأَنَّ لَهُمْ مِّنَ اللهِ فَضْلًا كَبِيْـرًا

হে মহাসম্মানিত নবী পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমি আপনাকে উপস্থিত বা হাযির-নাযির, সুসংবাদ প্রদানকারী, সতর্ককারী এবং মহান আল্লাহ পাক উনার হুকুমে উনার দিকে আহবানকারী ও উজ্জ্বল প্রদীপ রূপে প্রেরণ করেছি। আপনি মু’মিনদেরকে এ বিষয়ে সুসংবাদ মুবারক প্রদান করুন যে, (আপনি) উনাদের জন্য মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে বিরাট অনুগ্রহ মুবারক।

আর দারেমী শরীফে পবিত্র হাদীছ শরীফ ইরশাদ মুবারক হয়েছে,

عَنْ رَبِيْعَةَ الْـجُرَشِيَ رَضِيَ اللهُ تَـعَالٰى عَنْهُ قَالَ أَتَى النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقِيْلَ لَهُ لِتَـنَمْ عَيْـنُكَ وَلِتَسْمَعْ أُذُنُكَ وَلِيَـعْقِلْ قَـلْبُكَ قَالَ فَـنَامَتْ عَيْـلٰى وَسَمِعَتْ أذْنَاىَ وَعَقَلَ قَـلْبِىْ قَالَ فَقِيْلَ لِي سَيِّدٌ بَنٰى دَارًا فَصَنَعَ فِيْـهَا مَأْدُبَةً وَأَرْسَلَ دَاعِبًا فَمَنْ أَجَابَ الدَّاعِيَ دَخَلَ الدَّارَ وَأَكَلَ الْمَأْدُبَةِ وَرَضِيَ عَنْهُ السَّيِّدُ وَمَنْ لَـمْ يُـجِبِ الدَّاعِيَ لَـمْ يَدْخُلِ الدَّارَ وَ مَنْ لَـمْ يَأْكُلْ مِنَ الْمَأْدُبَةِ وَسَخَطَ عَلَيْهِ السَّيِّدُ قَالَ فَاللهُ السَّيِّدُ وَ مُحَمَّدٌ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الدَّاعِى وَالدَّارُ الْإِسْلَامُ وَالْمَأْدُبَةُ الْـجَنَّةُ

হযরত রবিয়াতাল জুরাশি রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, কতিপয় হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট আসলেন। অতঃপর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে উদ্দেশ্য করে বলা হলো, আপনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল মুনাওওয়ার মুবারক অর্থাৎ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র চোখ মুবারক যেন ঘুমিয়ে থাকেন, আপনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল হায়া’ অর্থাৎ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কান মুবারক যেন শুনতে থাকেন, আপনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল আছল মুবারক অর্থাৎ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র অন্তর মুবারক যেন বুঝতে থাকেন। তিনি বললেন, অতঃপর আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল মুনাওওয়ার মুবারক অর্থাৎ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র চক্ষু মুবারক ঘুমিয়ে রইলেন, আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল হায়া’ অর্থাৎ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কর্ণদ্বয় মুবারক শুনতে থাকলেন এবং আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল আছল মুবারক অর্থাৎ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্রঅন্তর মুবারক উপলব্ধি করতে থাকলেন। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেন, আমাকে বলা হলো, একজন সাইয়্যিদ (বাড়ির মালিক) তিনি একটি বাড়ি তৈরী করলেন। সেখানে তিনি খাবারের আয়োজন করলেন এবং একজন আহবানকারী প্রেরণ করলেন। অতঃপর যে ব্যক্তি আহবানকারী উনার ডাকে সাড়া দিবে, সেই ব্যক্তি ঘরে প্রবেশ করবে এবং খাদ্য খাবে এবং যিনি সাইয়্যিদ (বাড়ির মালিক) তিনি তার প্রতি সন্তুষ্ট হবেন। আর যে ব্যক্তি আহবানকারী উনার ডাকে সাড়া দিবে না, সে ব্যক্তি ঘরে প্রবেশ করবে না এবং খাদ্যও খাবে না। সাইয়্যিদ তিনি তার প্রতি সন্তুষ্ট হবেন না। অতঃপর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি হচ্ছেন “সাইয়্যিদ”, আর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হচ্ছেন “আহবানকারী”, এবং ঘর হচ্ছে ‘ইসলাম’, আর খাবার হচ্ছে “জান্নাত”। সুবহানাল্লাহ!

বর্ণিত পবিত্র আয়াত শরীফ এবং পবিত্র হাদীছ শরীফ দ্বারা যে বিষয়টি বুঝানো হয়েছে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার আদেশ মুবারকেই সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার দিকে আহবানকারী। যারা উনার সম্মানিত দাওয়াত মুবারক গ্রহণ করে পরিপূর্ণভাবে সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যে প্রবেশ করবেন, উনারাই জান্নাত উনার মধ্যে প্রবেশ করে জান্নাতী নিয়ামত মুবারক লাভ করতে পারবেন। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আনুগত্য করাই হলো, মহান আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন উনার আনুগত্য করা। সুবহানাল্লাহ! কেননা মহান আল্লাহ পাক তিনি  পবিত্র সূরা নিসা শরীফ উনার ৮০ নং পবিত্র আয়াত শরীফে ইরশাদ মুবারক করেন,

مَنْ يُّطِعِ الرَّسُوْلَ فَـقَدْ أَطَاعَ اللهَ وَمَنْ تَـوَلّٰى فَمَاۤ أَرْسَلْنَاكَ عَلَيْهِمْ حَفِيْظًا

যে ব্যক্তি মহাসম্মানিত রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আনুগত্য করল, সে মূলতঃ মহান আল্লাহ পাক উনারই আনুগত্য করল। আর যারা (আনুগত্য করা থেকে) ফিরে যাবে, আমি আপনাকে তাদের হিফাযতকারী হিসেবে পাঠাইনি।

অর্থাৎ যারা আনুগত্য না করে ফিরে যাবে তাদের কোনো দায়িত্ব গ্রহণ করা হবেনা। প্রসঙ্গত, বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফে পবিত্র হাদীছ শরীফ ইরশাদ মুবারক হয়েছে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কাছে কয়েকজন লোক আসলেন, তিনি উনাদেরকে এক আল্লাহ পাক উনার প্রতি ঈমান আনার দাওয়াত দিলেন, (অতঃপর তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন),

أَتَدْرُوْنَ الْإِيـْمَانُ بِاللهِ وَحْدَهٗ قَالُوا الله وَرَسُولُهٗ أَعْلَمُ قَالَ شَهَادَةُ اَلَّا إِلٰهَ إِلَّا اللهُ وَأَنَّ مُحَمَّدًا رَّسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ

নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, আপনারা কি জানেন, এক আল্লাহ পাক উনার প্রতি ঈমান কি? (হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম) উনারা বললেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার মহাসম্মানিত রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারাই সর্বাধিক জ্ঞাত। তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন, এক আল্লাহ পাক উনার প্রতি ঈমান হচ্ছে সাক্ষ্য দেয়া যে, মহান আল্লাহ পাক তিনি ব্যতীত কোনো ইলাহ নেই এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার মহাসম্মানিত রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।

অতএব, কেউ যদি শুধু “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ” বলে তাহলে এক আল্লাহ পাক উনার প্রতি ঈমান আনা শুদ্ধ হবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত “মুহাম্মাদুর রসূলুল্লাহ (ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)” না বলবে। অনুরূপভাবে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আনুগত্য করা ব্যতীত মহান আল্লাহ পাক উনার প্রকৃত আনুগত্য করাও হবে না। তাই, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি ঈমান এনে উনার আনুগত্য করা প্রত্যেকের জন্যই ফরয।

মহান আল্লাহ পাক তিনি যেন আমাদের সবাইকে দ্বীনের সহীহ-সমঝ দান করেন এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র সুন্নত মুবারক যথাসাধ্য অনুসরণ করে মহান আল্লাহ পাক উনার মুহাব্বত মুবারক অর্জন করার ও হক্কের উপর ইস্তেকামত থাকার তাওফীক্ব দান করেন। (আমীন)

ছহিবাতু সাইয়্যিদি সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ, সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি আলাল আলামীন, হাবীবাতুল্লাহ, রহমাতুল্লিল ‘আলামীন, ছাহিবায়ে নেয়ামত, যিক্রুল্লাহ, আল ওয়াসীলাতু ইলাল্লাহ, আল ওয়াসীলাতু ইলা রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুত্বহ্হার, মুত্বহ্হির, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম, সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নছীহত শরীফ (১২)

ছহিবাতু সাইয়্যিদি সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ, সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি আলাল আলামীন, হাবীবাতুল্লাহ, রহমাতুল্লিল ‘আলামীন, ছাহিবায়ে নেয়ামত, যিক্রুল্লাহ, আল ওয়াসীলাতু ইলাল্লাহ, আল ওয়াসীলাতু ইলা রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুত্বহ্হার, মুত্বহ্হির, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম, সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নছীহত শরীফ (১১)

ছহিবাতু সাইয়্যিদি সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ, সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি আলাল আলামীন, হাবীবাতুল্লাহ, রহমাতুল্লিল ‘আলামীন, ছাহিবায়ে নেয়ামত, যিক্রুল্লাহ, আল ওয়াসীলাতু ইলাল্লাহ, আল ওয়াসীলাতু ইলা রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুত্বহ্হার, মুত্বহ্হির, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম, সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নছীহত শরীফ (১০)