ছহিবাতু সাইয়্যিদি সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ, সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি আলাল আলামীন, হাবীবাতুল্লাহ, রহমাতুল্লিল ‘আলামীন, ছাহিবায়ে নেয়ামত, যিক্রুল্লাহ, আল ওয়াসীলাতু ইলাল্লাহ, আল ওয়াসীলাতু ইলা রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুত্বহ্হার, মুত্বহ্হির, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম, সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নছীহত শরীফ (১২)

সংখ্যা: ২৯৫তম সংখ্যা | বিভাগ:

মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম

উনাদের ফযীলত মুবারক

 

(পূর্বে প্রকাশিতের পর)

উল্লেখ্য যে, শিয়াদের আক্বীদা হচ্ছে, মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা হচ্ছেন পাঁচ জন তথা পাক পাঞ্জাতন। উনারা হলেন-

১. নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি

২. সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ আন নুরুর রবিয়া হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি

৩. সাইয়্যিদুনা ইমামুল আউওয়াল হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহু আলাইহিস সালাম তিনি ৪. সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছানী আলাইহিস সালাম তিনি

৫. সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ আলাইহিস সালাম তিনি।

কিন্তু যারা সুন্নি দাবিদার তারাও বছরের পর বছর ধরে  মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মধ্য থেকে শুধুমাত্র উপরোক্ত ৫ জন উনাদের ছানা-ছিফত মুবারক, সাওয়ানেহ উমরী মুবারকই আলোচনা করে আসছে। আর অন্যান্য হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের বিষয়গুলো ছিল আলোচনার বাইরে। কিন্তু আমরা পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফে দেখতে পাই মহান আল্লাহ পাক তিনি সম্মানিত ও পবিত্র সূরা তওবা শরীফ উনার ১২৮ নং পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন-

لَقَدْ جَاءَكُمْ رَسُوْلٌ مِّنْ أَنْـفُسِكُمْ عَزِيْـزٌ عَلَيْهِ مَا عَنِتُّمْ حَرِيْصٌ عَلَيْكُمْ بِالْمُؤْمِنِيْنَ رَءُوْفٌ رَّحِيْمٌ

তোমাদের কাছে তোমাদের জন্য একজন রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তাশরীফ মুবারক এনেছেন। তোমাদের দুঃখ-কষ্ট উনার জন্য বেদনাদায়ক। তিনি তোমাদের ভালাই চান। তিনি মু’মিনদের প্রতি স্নেহশীল, দয়ালু।

আর ‘বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফের পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, মহান আল্লাহ পাক তিনি রহমত মুবারক উনাকে একশত ভাগে বিভক্ত করেন। ৯৯ ভাগ রহমত মুবারক উনার নিকট রেখে বাকী ১ ভাগ রহমত মুবারককে আবার ১০০ ভাগে বিভক্ত করেন। আর সেখান থেকে ৯৯ ভাগ রহমত মুবারক নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে হাদিয়া মুবারক করেন এবং ১ ভাগ রহমত মুবারক গোটা মাখলুকাতের মাঝে বন্টন করে দেন।

ফিকিরের বিষয় হলো, দশ হাজার ভাগের একভাগ রহমত মুবারক সমস্ত মাখলুকাতের মধ্যে বণ্টন করে দেয়া হয়েছে। সেখান থেকে এক যাররা পরিমাণ রহমত মুবারক লাভ করার কারণে আমরা একে অপরকে মুহাব্বত করি। এমনকি এই মুহাব্বত মানুষ থেকে শুরু করে একটা ক্ষুদ্রতম প্রাণীর মাঝেও পরিলক্ষিত হয়। আমরা এই মুহাব্বতের কারণে পরিবারের সদস্যদের মধ্যে একজন থেকে অপরজনকে আলাদা করতে পারিনা। তাহলে যিনি সমস্ত রহমত মুবারকের মালিক তিনি কিভাবে উনার পরিবারের একজন থেকে অপরজনকে আলাদা করে দেখতে পারেন! মূলত, এভাবে চিন্তা করাটাও উনার শান মুবারক উনার খিলাফ তথা কুফরী হবে। মূলত, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পরিবারের সকল সদস্যগণই মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের অন্তর্ভুক্ত।

পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র হাদীছ শরীফে অসংখ্যভাবে হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের ফাযায়িল ফযীলত গুরুত্ব তাৎপর্য সম্পর্কে বর্ণনা করা হয়েছে।

পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনার সম্মানিত ও পবিত্র সূরা আহযাব শরীফ, সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৫৬, উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-

إِنَّ اللهَ وَمَلَائِكَتَهٗ يُصَلُّوْنَ عَلَى النَّبِيِّ يَا أَيُّـهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُـوْا صَلُّوْا عَلَيْهِ وَسَلِّمُوْا تَسْلِيْمًا

নিশ্চয়ই খলিক মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং সমস্ত হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারা হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি ছলাত শরীফ পাঠ করে থাকেন। কাজেই হে ঈমানদারগণ! তোমরাও উনার পবিত্রতম নূরানী শান মুবারকে ছলাত শরীফ পাঠ করো এবং সালাম দেয়ার যথার্থ নিয়মে সালাম দাও।

এই আয়াত শরীফের তাফসীরে উল্লেখ করা হয়েছে-

বিশিষ্ট ছাহাবী হযরত কা’ব বিন উজরাতা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমরা কিভাবে আপনার মুবারক শানে দরূদ শরীফ পাঠ করবো? তখন সাইয়্যিদুল আম্বিয়া ওয়াল মুরসালীন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সরাসরি উনাকে দরূদে ইবরাহীম পাঠ করে শুনিয়েছেন।

اللّٰهُمَّ صَلِّ عَلَى سَيِّدِنَا مَوْلَانَا مُحَمَّدٍ وَعَلٰى اٰلِ سَيِّدِنَا مَوْلَانَا مُحَمَّدٍ كَمَا صَلَّيْتَ عَلٰى سَيِّدِنَا إِبْـرَاهِيْمَ وَعَلٰى اٰلِ سَيِّدِنَا إِبْـرَاهِيْمَ إِنَّكَ حَمِيْدٌ مَجِيْدٌ

 اللّٰهُمَّ بَارِكْ عَلٰى سَيِّدِنَا مَوْلَانَا مُحَمَّدٍ وَّعَلٰى اٰلِ سَيِّدِنَا مَوْلَانَا مُحَمَّدٍ كَمَا بَارَكْتَ عَلٰى سَيِّدِنَا إِبْـرَاهِيْمَ وَعَلٰى اٰلِ سَيِّدِنَا إِبْـرَاهِيْمَ إِنَّكَ حَمِيْدٌ مَجِيْدٌ

উল্লেখ্য যে, বর্ণিত ‘দুরূদে ইবরাহীম’ শরীফ সাধারণভাবে পবিত্র নামাযের মধ্যেই পাঠ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তাহলে এ থেকে বুঝা যায় যে,

স্বয়ং মহান আল্লাহ পাক তিনিই পবিত্র নামাযের মধ্যে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে সাথে উনার মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস উনাদের মুবারক শানেও দরূদ শরীফ পাঠ করার নির্দেশ মুবারক দিয়েছেন।

অর্থাৎ হযরত আহলু বাইত আলাইহিমুস সালাম উনাদের উপর দরূদ শরীফ পাঠ না করলে নামায পূর্ণরূপে আদায় হয় না। উনাদের প্রতি দরূদ শরীফ পাঠ করা ইবাদত এবং দোয়া পরিপূর্ণ ও কবুল হওয়ার প্রধান উসীলা। সুবহানাল্লাহ!

পবিত্র হাদীছ শরীফে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন,

عَنْ حَضْرَتْ جَرِيْرِ بْنِ عَبْدِ اللهِ الْبَجَلِيْ رَضِيَ اللهُ تَـعَالٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنَا وَأَهْلُ بَـيْتِيْ شَجَرَةٌ فِي الْجَنَّةِ وَأَغْصَانُـهَا فِي الدِّيْنِ فَمَنْ تَمَسَّكَ دِيْـنًا إِتَّخَذَ رَبَّهٗ سَبِيْلًا

হযরত জারীর ইবনে আব্দুল্লাহ আল বাযালী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আমি এবং আমার মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম হলাম পবিত্র জান্নাত উনার একটি বৃক্ষ। পবিত্র দ্বীন ইসলাম হচ্ছে উহার শাখা। যে ব্যক্তি পবিত্র দ্বীনকে দৃঢ়ভাবে আঁকড়িয়ে ধরবে, সে ব্যক্তিই মহান আল্লাহ পাক উনাকে পাওয়ার সঠিক পথ পেয়ে যাবে। সুবহানাল্লাহ! [তাফসীরে রুহুল বয়ান ৮/২৩৯, তাফসীরে হাক্কী ১৩/৭৯, তাফসীরে কবীর] (চলবে)

ছহিবাতু সাইয়্যিদি সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ, সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি আলাল আলামীন, হাবীবাতুল্লাহ, রহমাতুল্লিল ‘আলামীন, ছাহিবায়ে নেয়ামত, যিক্রুল্লাহ, আল ওয়াসীলাতু ইলাল্লাহ, আল ওয়াসীলাতু ইলা রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুত্বহ্হার, মুত্বহ্হির, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম, সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নছীহত শরীফ (১১)

ছহিবাতু সাইয়্যিদি সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ, সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি আলাল আলামীন, হাবীবাতুল্লাহ, রহমাতুল্লিল ‘আলামীন, ছাহিবায়ে নেয়ামত, যিক্রুল্লাহ, আল ওয়াসীলাতু ইলাল্লাহ, আল ওয়াসীলাতু ইলা রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুত্বহ্হার, মুত্বহ্হির, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম, সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নছীহত শরীফ (১০)

ছহিবাতু সাইয়্যিদি সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ, সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি আলাল আলামীন, হাবীবাতুল্লাহ, রহমাতুল্লিল ‘আলামীন, ছাহিবায়ে নেয়ামত, যিক্রুল্লাহ, আল ওয়াসীলাতু ইলাল্লাহ, আল ওয়াসীলাতু ইলা রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুত্বহ্হার, মুত্বহ্হির, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম, সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নছীহত শরীফ (৯)