জামাত জামায়াতীদের আদর্শ বিবর্জিত একটি দল; যারা সাক্ষাৎ ধর্মব্যবসায়ী ও সুস্পষ্ট মুনাফিক এবং সৃষ্টির নিকৃষ্ট জীব

সংখ্যা: ১৮৪তম সংখ্যা | বিভাগ:

‘আবূ দাউদ শরীফ’-এর হাদীছ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে, “নিশ্চয়ই আল্লাহ পাক এই উম্মতের মাঝে প্রত্যেক হিজরী শতকের শুরুতে একজন মুজাদ্দিদ পাঠাবেন। যিনি উম্মাহ্র মাঝে, দ্বীনের মাঝে অনুপ্রবেশকারী সব বেশরা, বিদ্য়াতকে মিটিয়ে সত্যিকার ও শাশ্বত ইসলামকে তুলে ধরবেন। ইসলামকে জিন্দা করবেন।”

এ হাদীছ শরীফ-এর প্রেক্ষিতে বলতে হয় যে, এটা আজ অনিবার্য সত্য যে, ইমামুল আইম্মা, মুহ্ইস্ সুন্নাহ্, কুতুবুল আলম, আওলাদে রসূল, রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলীই বর্তমান যামানার মুজাদ্দিদ তথা মুজাদ্দিদে আ’যম।

“ইসলামের নামে গণতন্ত্র হারাম, নির্বাচন করা হারাম, নারী নেতৃত্ব হারাম”- এটা তাঁর অকাট্য তাজদীদ।

কিন্তু এটাকে নিয়েই যত বিপত্তি। এই তাজদীদের কারণে তথাকথিত ইসলামী রাজনীতিবিদদের রাজনীতি হারাম হয়ে যায়। ইসলামের জন্য ভাল হলেও তাদের এমপি, মন্ত্রী তথা সরকারের শরিকদার হিসাবে ক্ষমতার ভাগাভাগি বন্ধ হয়ে যায়। তাদের স্বার্থ চরমই ক্ষুন্ন হয়। সুতরাং তাদের গোস্সা বহুগুণ বেড়ে যায়।

কিন্তু তারপরেও উল্লেখ করতে হয় যে, কোন ধর্ম-ব্যবসায়ীও যদি ধর্মের কথা পালন করতে চায়, শরীয়তের তথা ইসলামের আমল করতে চায় বা অন্তত যে সময়টুকুর জন্য তারা সত্যিকার ইসলামের কথা বলতে চায় কমপক্ষে সে সময়টার জন্য হলেও তাদেরকে বর্তমান যামানার মুজাদ্দিদ, মুজাদ্দিদে আ’যম রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী-এর ফতওয়ার দিকেই ইচ্ছায়-অনিচ্ছায় প্রত্যাবর্তন করতে হয়। তাঁর তাজদীদী ফতওয়ারই প্রতিধ্বনি করতে হয়।

এ প্রতিধ্বনি রয়েছে খোদ তথাকথিত আমীরে জামাতের পুস্তকে। ১৯৮৬ সালে প্রকাশিত তার ‘ইসলামী আন্দোলন ও সংগঠন’ শীর্ষক বইয়ে তিনি বলেন,

তৃতীয় অধ্যায়

ইসলামী আন্দোলনের সাফল্য

আল্লাহর দ্বীনের বিপরীত মতাদর্শের ভিত্তিতে পরিচালিত আন্দোলনের মৌলিক পার্থক্য সর্বত্রই সুস্পষ্ট। এ পার্থক্যের সূচনা হয় উভয়বিধ আন্দোলনের ধারক বাহকদের আক্বিদা বিশ্বাসকে কেন্দ্র করেই। জীব ও জগৎ সম্পর্কে দু’টি বিপরীতমুখী ধারণা ও বিশ্বাস আল্লাহ পাক-এর পথের আন্দোলন ও তাগুত বা গায়রুল্লাহর পথের আন্দোলনকে পরিপূর্ণরূপে দু’টি ভিন্ন খাতে পরিচালিত ও প্রবাহিত করে থাকে। এই পার্থক্য যেমন সূচীত হয় উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য নির্ধারণের ক্ষেত্রে তেমনি পার্থক্য সূচীত হয় কর্মসূচী গ্রহণের ক্ষেত্রেও। পার্থক্য সূচীত হয় কর্মপদ্ধতি ও কর্ম কৌশলের ক্ষেত্রেও। এভাবে আন্দোলনের চূড়ান্ত ফলাফল সফলতা ও ব্যর্থতার ক্ষেত্রেও অনৈসলামী আন্দোলন ও ইসলামী আন্দোলনের মধ্যে রয়েছে আকাশ পাতালের পার্থক্য।

ইসলামী আন্দোলন যার জন্যে, যার নির্দেশে, এর সফলতা ও ব্যর্থতা নির্ণয় করতে হবে তাঁর দেয়া মানদ-েই। ইসলামী আন্দোলন আল্লাহ পাক-এর পথের আন্দোলন, আল্লাহ পাক-এর সন্তোষ অর্জনের আন্দোলন, আল্লাহ পাক-এর নির্দেশ পালনের আন্দোলন, সুতরাং এর সাফল্যের সংজ্ঞা গ্রহণ করতে হবে তাঁর কাছ থেকেই। তিনি সূরায়ে ‘ছফের’ মাধ্যমে আল্লাহর পথে মাল দিয়ে, জান দিয়ে জিহাদের যে নির্দেশ দিয়েছেন তাতো আখেরাতে আজাবে আলীম থেকে, কষ্টদায়ক শাস্তি থেকে বাঁচার উপায় হিসেবেই দিয়েছেন। অতঃপর এ কাজের দু’টো প্রতিদানের কথা উল্লেখ করছেন।

এক. “আল্লাহ তোমাদের গোনাহ্ মাফ করে দেবেন, এবং জান্নাতে স্থান দেবেন যার পাদদেশ দিয়ে ঝরণাধারা প্রবাহিত হবে। সদা বসন্ত বিরাজমান জান্নাতে আদ্নে উত্তম বাসস্থান তোমাদের দান করা হবে। এটাই হল সবচেয়ে বড় সাফল্য।” (সূরা আছ ছফ- ১২)

আল্লাহ পাক-এর এই ঘোষণা থেকে আমরা পরিষ্কার বুঝতে পারি আখিরাতের কামিয়াবীই হল বড় কামিয়াবী। ইসলামী আন্দোলনের ব্যক্তিদের সামনে এটাই হবে প্রধান ও মুখ্য বিষয়। এই দৃষ্টিকোণ থেকে বিচার করলে জাগতিকভাবে কোন একটা স্থানে ইসলামী আন্দোলন সফল হবে বা বিজয়ী হলেও আন্দোলনের সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা যদি আদালতে আখেরাতে আল্লাহর দরবারে সাফল্যের সনদ না পায় তাহলে ঐ ব্যক্তিদের আন্দোলন ব্যর্থ বলেই বিবেচিত হবে।….

দুইঃ “আর অপর একটি প্রতিদান যা তোমরা কামনা কর, পছন্দ কর তাও তোমাদেরকে দেয়া হবে। তোমাদের সেই বাঞ্ছিত আল্লাহ পাক-এর পক্ষ থেকে সাহায্য ও বিজয় সেও অতি নিকটেই হাছিল হবে।” (সূরা আছ ছফ- ১৩)

সূরায়ে নূরে এই দ্বিতীয় পর্যায়ের সাফল্য বা জাগতিক সাফল্যের কথা আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে একটা ওয়াদা আকারে এসেছে। অবশ্য সে ওয়াদা শর্তহীন নয়। দু’টো বড় রকমের শর্ত সাপেক্ষ। বলা হয়েছেঃ “তোমাদের মধ্য থেকে যারা ঈমান আনবে এবং ‘আমলে ছালেহ’ করবে এমন লোকদের জন্যে আল্লাহ ওয়াদা করেছেন যে, তিনি তাদেরকে সেইভাবে দুনিয়ার খেলাফত (নেতৃত্ব) দান করবেন, যেভাবে পূর্ববর্তী লোকদেরকে খেলাফত দান করা হয়েছে। তাদের জন্যে আল্লাহ যে দ্বীনকে পছন্দ করেছেন সেই দ্বীনকে মজবুত ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত করে দেবেন। তাদের বর্তমানের ভয় ও নিরাপত্তাহীনতার অবস্থা পরিবর্তন করে শান্তি ও নিরাপত্তা দান করবেন।” (আন্ নূর-৫৫)

উল্লিখিত আয়াতের আলোকে জাগতিক সাফল্যের চূড়ান্ত রূপ হল আল্লাহ পাক-এর সাহায্যে খোদাদ্রোহী শক্তিকে নেতৃত্ব কর্তৃত্বের আসন থেকে অপসারিত করে ঈমানদার ও সৎকর্মশীল লোকদের নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে পারা। …..

যারা ইসলামী আন্দোলনে অংশ গ্রহণ করবে তাদের সামনে উভয় প্রকারের সাফল্যই থাকতে হবে। তবে আল্লাহ যেটাকে প্রধান ও মূখ্য সাফল্য রূপে সামনে রেখেছেন- সেটাকেই মূখ্য হিসেবে গ্রহণ করতে হবে। মনে রাখতে হবে আখেরাতের সাফল্যই তাদের চরম ও পরম কাম্য হবে, তাদেরকে আল্লাহ উভয় ধরনের সাফল্য দান করবেন। কিন্তু দুনিয়ার সাফল্য যাদের মূখ্য কাম্য হবে আখেরাতের সাফল্য হবে গৌণ ও কম গুরুত্বপূর্ণ, তাদেরকে আল্লাহ তায়ালা উভয় জগতে ব্যর্থ করবেন। ……

সত্যের সংগ্রামে জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত টিকে থাকাই তো সফলতা। সত্যের এ সংগ্রামে ব্যর্থ হয় তারা যারা জাগতিক সাফল্যের বিলম্ব দেখে এবং আদৌ কোন সম্ভাবনা নাই মনে করে রণে ভঙ্গ দেয়, মাঝ পথে ছিটকে পড়ে। …..

উপরোল্লিখিত বক্তব্যের শেষ বাক্যটি পুরোভাবেই প্রযোজ্য হয়েছে বক্তব্য প্রদানকারী নিজামী-ইহুদীগং এর ক্ষেত্রে। তারা আজ কুরআন শরীফ-সুন্নাহ্ শরীফ-এর পথ থেকে ছিটকে পড়েছে।

তারা তাদের বিবৃত হারাম নারী নেতৃত্ব, ছবি, বেপর্দা, জনগণের সার্বভৌমত্ব স্বীকার, শহীদ মিনারে ফুল দেয়া, সুদ জায়িয করা, আমেরিকার তাবেদারী করা ও আনুগত্যতা পেশ করা ইত্যাদি সব হারাম কাজকে হালাল করেছে।

এতে করে তাদের দুনিয়াবী স্বার্থ কিছু হাছিল হয়েছে।

দেশদ্রোহী, রাজাকার নিজামী-ইহুদী দেশের মন্ত্রী এমপি হয়েছে। কিন্তু দেশে ইসলাম কিছু আসেনি। বরং মদের দাম কমেছে, আকাশ সংস্কৃতির মাধ্যমে বেহায়াপনার অবাধ বিস্তার ঘটেছে এমনকি খোদ জামাতীরা হিন্দু দেব-দেবীর পূজা অর্চনায় বাধ্য হয়েছে। ইহুদী খ্যাত জামাতী এম.পি বলতে বাধ্য হয়েছে: কৃষ্ণ ও রামকে সে শ্রদ্ধা করে। (নাউযুবিল্লাহ)

অর্থাৎ জোট সরকারের সুবাদে তাদের স্বার্থ হাছিল ছাড়া ইসলাম ও মুসলমানগণের কিছুই হয়নি।

আর এ বিষয়টি যে জামাতীদের অজানা ছিল তাও না। তাইতো উপরোল্লিখিত বক্তব্যে নিজামীর স্বীকারোক্তি: “কিন্তু দুনিয়ার সাফল্য যাদের মূখ্য কাম্য হবে আখেরাতের সাফল্য হবে গৌণ ও কম গুরুত্বপূর্ণ তাদেরকে আল্লাহ পাক উভয় জগতে ব্যর্থ করবেন।”

আজকে তাই হয়েছে। শরীয়তের ঘোষণা অনুযায়ী পরকালে জামায়াতীদের জন্য যেমন অপেক্ষা করছে আযাব তেমনি বর্তমানেও তারা জনরোষের সম্মুখীন। জোট সরকারের দুর্নীতির সহযাত্রী এবং বিশেষতঃ ইসলামের ছদ্মাবরণে তাদের হাজারো অপতৎপরতায় ভয়ঙ্কর ক্ষুব্ধ সাধারণ মানুষ। তাদের এখন ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা। আগামীতে তাদের জন্য রয়েছে আরো ঘনীভূত সঙ্কট। অর্থাৎ তারা তাদের স্বীকারোক্তি, ওদের বিবৃতি মোতাবেকই উভয় জগতে ব্যর্থ ও লাঞ্ছিত। তাদের দ্বারা গত অর্ধশত বছরে ইসলাম যেমন আসেনি কেয়ামত পর্যন্ত তেমনি আসবে না- এ কথা বলাইবাহুল্য এবং এ কথা নিজামী সাহেবও স্বীকার করেছেন। তিনি কুরআন শরীফ-এর সূরা নূরের ৫৫ নং আয়াত শরীফ-এর অবতারণা করেছেন: “তোমাদের মধ্যে থেকে যারা ঈমান এনেছে এবং আমলে ছালেহ করবে এমন লোকদের জন্য আল্লাহ পাক ওয়াদা করছেন যে, তিনি তাদেরকে খেলাফত দান করবেন।” কিন্তু কথা হল যে, নিজামী-ইহুদীদের এখন ঈমান নেই। তারা এখন হিন্দুদের রাম-কৃষ্ণ পূজা আর বিধর্মীদের সাথে সখ্যতায় বিশ্বাসী।

আর পত্রিকার পাতা উল্টালেই জামাতী মন্ত্রী-এমপি থেকে তাদের নেতা কর্মীদের আমলনামায় দেখা যায় শত শত কোটি টাকার দুর্নীতি থেকে আরম্ভ করে বিধবা বা নাবালিকা ধর্ষণ এমনকি নিজেদের সাথী কর্মীকে বলাৎকার পর্যন্ত করেছে। (নাঊযুবিল্লাহ)।

কাজেই এমন একটা জামাতকে যে আল্লাহ পাক কখনই খেলাফত দিবেন না তা জামাতের আমীর নিজেই ১৯৮৬ সালে তার লেখা ‘ইসলামী আন্দোলন ও সংগঠন’ নামক বইয়ের ৩১-৩৫ পৃষ্ঠায় লিখে গেছেন।

উল্লেখ্য, হাদীছ শরীফ-এ জামাতীদের সব ধর্মব্যবসায়ীকেই সৃষ্টির নিকৃষ্ট বলা হয়েছে।

মুহম্মদ মাহবুবুর রহমান

ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি ও ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা-৫০

বাতিল ফিরক্বা ওহাবীদের অখ্যাত মুখপত্র আল কাওসারের মিথ্যাচারিতার জবাব-১৩ হাদীছ জালিয়াতী, ইবারত কারচুপি ও কিতাব নকল করা ওহাবীদেরই জন্মগত বদ অভ্যাস

যুগের আবূ জাহিল, মুনাফিক ও দাজ্জালে কায্যাবদের বিরোধিতাই প্রমাণ করে যে, রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী হক্ব। খারিজীপন্থী ওহাবীদের মিথ্যা অপপ্রচারের দাঁতভাঙ্গা জবাব-৫১

‘থার্টিফাস্ট নাইট, ভালেন্টাইন ডে আর পহেলা বৈশাখের’ নামে হুজ্জোতির জন্য ধর্মব্যবসায়ীদের কৌশলগত নিষ্ক্রীয়তা, স্বার্থবাদী মৌসুমী রাজনৈতিক তৎপরতা এবং সংস্কৃতি বিপননকারীদের দূরভিসন্ধিতা ও মধ্যবিত্তের  তত্ত্ব-তালাশহীন প্রবণতা তথা হুজুগে মাতা প্রবৃত্তিই দায়ী

অবশেষে জামাতীরা স্বীকার করিল যে, মুক্তি পাইতে চাহিলে মুরীদ হইতে হয়। আল্লাহ পাক-এর ওলী বা দরবেশ হইতে পারিলে মুক্তি পাওয়া যায়। কিন্তু জামাতীরা তাহা নয় বলিয়াই আখিরাত তো দূরের কথা দুনিয়াতেই তাহারা দুর্নীতির দায়ে গ্রেফতার। আর মইত্যা রাজাকারের ফতওয়া অনুযায়ী তো- তাহাকেই কতল করা ওয়াজিব।