“তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ‘তত্ত্ব’ ব্যর্থ স্বীকারের পর গণতন্ত্রের ‘তন্ত্র’ও যে ভুল মন্ত্র তথা মরিচিকা মাত্র এবং ইসলামের দৃষ্টিতে তাহা হারাম ও নাজায়িয”- সেইটা বুঝিতে দেশবাসী মুসলমানদের আর কতদিন লাগিবে? (২)

সংখ্যা: ১৮০তম সংখ্যা | বিভাগ:

রাজাকার, ধর্মব্যবসায়ী, জামাতীরা এখন আর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের রূপকার দাবি করে তাদের কৃতিত্ব জাহির করে না। জামাতীরা যে ইসলাম করেনা তারা যে মূলতঃ রাজনীতি করে তা তাদের গুরু গো’আযম তার আত্মজীবনী “জীবনে যা দেখলাম” গ্রন্থে অকপটে স্বীকার করেছেন। আবার গো’আযম যে এ তথ্য ব্রিটিশ প্রথা হতে চুরি করেছেন তার প্রমাণও ঐ বইয়ে রয়েছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের গ্যাঁড়াকলে পড়ে হাসফাঁস করছে আবাল-বৃদ্ধ-বণিতা সবাই। তত্ত্বাবধায়ক সরকার তত্ত্বের মাঝে যে কত সর্বনাশা বীজ লুকাইয়া ছিলো তা এখন হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে সবাই।

গত ০১-০৮-০৮ তারিখে “দৈনিক আল ইহসান” সেকেন্ড লিড করেছে, “ইসি’র নিষেধাজ্ঞা হাইকোর্টে বাতিল।” ‘দৈনিক আল ইহসান‘ ছাড়াও অন্য সব পত্রিকাও এ বিষয়টি লিড নিউজ করে।

উল্লেখ্য, তত্ত্ববধায়ক সরকারের রহস্যজনক আশীর্বাদে ইসিই যেন দেশের দ-মু-ের একচ্ছত্র বিধান কর্তা হয়ে উঠেছিলো। ধরাকে সরা জ্ঞান করার মত অহংকারবোধের ঊর্ধ্বে তারা উঠেছিলো।

“তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রথম প্রাধান্য বিষয় নির্বাচন- এ প্রচারণার প্রেক্ষিতে তারা নির্বাচনের নামে যা-ইচ্ছা তাই করে যাচ্ছিলো।

সংবিধান, আইন, দেশ, দেশবাসী, ৯৫% মুসলমান দেশবাসীর ধর্মীয় অনুভূতি সব কিছুকেই তারা পা দিয়ে মাড়িয়ে যাচ্ছিলো। (নাঊযুবিল্লাহ)

কিন্তু তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ক্ষমতায় পোদ্দারি দেখানো সেই ইসি অবশেষে মুখ থুবরে পড়েছে। মুখে চুনকালি মেখে প্রধান নির্বাচন কমিশনার অবশেষে স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছে, “তার সংস্কার বাস্তবায়িত হয়নি। নির্বাচন বিধিমালা প্রযোজ্য হয়নি।”

এদিকে ইসি’র জারিকৃত অধ্যাদেশ, আদেশ একের পর এক ভুল প্রমাণিত হচ্ছে। ইসি’র নিষেধাজ্ঞা হাইকোর্ট কর্তৃক বাতিল সম্পর্কিত রিপোর্টে গতকাল প্রায় সব পত্র-পত্রিকারই ভাষ্য ছিলো নিম্নরূপ-

“নির্বাচন সংক্রান্ত অধ্যাদেশে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে ৪ মাস কারাদ-ের বিধান রাখা হয়েছে। কিন্তু নির্বাচন কমিশন সংবিধান লঙ্ঘন করলে কী হবে তা বলা হয়নি।

নির্বাচন কমিশন একের পর এক সংবিধান লঙ্ঘন করে চলেছে। এজন্য কমিশনারদের আত্মসম্মান নিয়ে পদত্যাগ করা উচিত।”

উল্লেখ্য, যে সংবিধানের উপর ভর করে ইসি একের পর এক আদেশ জারি করেছে সেই ইসিই যে সংবিধানের রশি কাটছে তা আজ জনসম্মুখে, মিডিয়ায়, পত্র-পত্রিকায় প্রচারিত ও উচ্চারিত মহা সত্য।

ইসি’র আদেশ যে ভুল হচ্ছে হাইকোর্ট তা বার বার বলছে। ইসি যে বার বার সংবিধান বিরোধী কাজ করছে- আইনজীবীরা, সংবিধানবোদ্ধারা তা ক্ষুব্ধ দৃষ্টিতে প্রত্যক্ষ করছেন।

সেই সাথে মহা ক্ষুব্ধতার সাথে প্রত্যক্ষ করছেন যামানার মুজাদ্দিদ, মুজাদ্দিদে আ’যম-এর তাজদীদী মজলিস “আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত”ও।

প্রসঙ্গতঃ উল্লেখ্য, স্বাধীনতা উত্তর ৯৫% মুসলমানের এদেশে “ছবি তোলা হারাম”-

ছবির প্রতি মুসলমানদের এরূপ নিষেধাজ্ঞা সম্বলিত ধর্মীয় অনুভূতির কারণে কোন সরকারই ভোটার কার্ডের জন্য ছবি তোলার পক্ষে কোনো সরকারি আদেশ দেয়নি।

কিন্তু অল্প পানির মাছ- বর্তমান নির্বাচন কমিশনার, বর্তমান তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আশীর্বাদের গন্ধ পেয়েই রাতারাতি ঘোষণা দিলো ‘ছবি তোলার বিরুদ্ধে বললে এক বছর জেল ও জরিমানা হবে’।

কেবলমাত্র মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী-এর বেমেছাল প্রতিবাদ ও তাজদীদের কারণেই নির্বাচন কমিশন সে বিষয়ে ক্ষ্যান্ত হয়।

কিন্তু তারপরেও ধর্মব্যবসায়ী উলামায়ে ‘ছূ’দের বদ পরামর্শে তারা ঠিকই ছবি তোলার পক্ষে বা ছবিসহ ভোটার আইডি কার্ডের পক্ষে সেনাবাহিনীকে লেলিয়ে দেয়।

অথচ বাংলাদেশ সংবিধানের ৪১ অনুচ্ছেদে ধর্মীয় অধিকার সংরক্ষণের কথা স্পষ্টভাবে বলা আছে।

হিন্দুদের ক্ষেত্রে সরকার পুলিশ-বিডিআর দিয়ে পূজা করিয়ে দেয়। অর্থাৎ তাদের ধর্মীয় অধিকার সংরক্ষণ করে-

তাহলে মুসলমানদের ধর্মীয় রীতি হলো, ধর্মের দাবি হলো- ধর্মের অধিকার হলো, মুসলমানদের ধর্মীয় অধিকার হলো,

“ছবি না তোলা, মদ না খাওয়া, শুকরের গোশ্ত না খাওয়া।”

উল্লেখ্য, কোন মুসলমানকে জোর করে মদ খাওয়ানো যেমন, মুসলমানকে শুকুরের গোশত খেতে সরকারি আদেশ জারী করা যেমন,

ঠিক কোন মুসলমানকে “ছবি তুলতে বাধ্য করাও একই রকম শক্ত ও কঠিন হারাম কাজে বাধ্য করার শামীল”।

উল্লেখ্য, ছবি তোলার বিরুদ্ধে মুসলমানদের এরকম শক্ত হারাম অনুভূতি বা নিষিদ্ধ অনুভূতি থাকার কারণেই দোর্দ- প্রতাপশালী জালিম ব্রিটিশ সরকার কখনও এদেশের মুসলমানদের ছবি তুলতে বাধ্য করেনি। বরং ব্রিটিশ সরকার টিপসইয়ের ব্যবস্থা করেছিলো। গতকালের দৈনিক আমাদের সময়ও শেষ পৃষ্ঠায় রিপোর্টে করেছে;

“হাতি-ঘোড়া গেল তল, পিপিলিকা বলে কত জল”- সে রকমই উদাহরণ তৈরি করলেন বর্তমান তত্ত্বাবধায়ক সরকারের নির্বাচন কমিশন।

বলার অপেক্ষা রাখেনা, হাইকোর্টে নির্বাচন কমিশন বা ইসি’র দেয়া ছবি তোলার আদেশের বিরুদ্ধে যদি রিট করা হয়; তাহলে ইলেকশন কমিশন বা নির্বাচন কমিশনের এ আদেশও বাতিল বলে গণ্য হবে।

কারণ, ইসি সংবিধানে বর্ণিত মৌলিক অধিকারে তথা শতকরা ৯৫% মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতির বিরুদ্ধে আদেশ দিয়েছে।

ইসি দেশের রাষ্ট্রধর্ম ইসলামের বিরুদ্ধে আদেশ দিয়েছে।

ইসি বাংলাদেশ সংবিধানের প্রস্তাবনায় লিখিত ‘সর্বশক্তিমান আল্লাহ পাক-এর প্রতি পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস”-এর ব্যত্যয় করেছে।

ইসি- সর্বশক্তিমান আল্লাহ পাক-এর প্রতি অনাস্থা প্রকাশ করে, আল্লাহ পাক-এর আদেশের খিলাফ করে ছবি তোলার পক্ষে আদেশ দিয়েছে।

ইসি- সর্বশক্তিমান আল্লাহ পাক-এর প্রতি অবিশ্বাস ঘোষণা করে, আল্লাহ পাক কর্তৃক ঘোষিত ‘হারাম কাজ’ ছবি তোলার পক্ষে শক্ত নির্দেশ দিয়েছে।

কাজেই এখনও যদি ইসি’র এই আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিট করা হয় তাহলেও যে হাইকোর্ট ইসি’র ‘ছবি তোলার আদেশ’- বাতিল করবে তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

প্রসঙ্গতঃ গত ৩০শে জুলাই “দৈনিক যুগান্তরে” ছাপা হয়, “শিখ ছাত্রী ওয়াটকিন সিং (১৪)কে শিখদের ধর্মীয় চিহ্ন বালা ও লোহার কড়া পরতে লন্ডনের স্কুল নিষেধাজ্ঞা জারি করলে সে হাইকোর্টে মামলা করে। হাইকোর্ট তার ধর্মীয় রীতি অনুসারে বালা পরার অনুমতি দেয় তথা তার ধর্মীয় রীতির পক্ষে রায় দেয়।“

বলাবাহুল্য, নির্বাচন কমিশন একটা সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান। কাজেই এখানে সংবিধান বিশেষজ্ঞদের আসা উচিত ছিলো। কিন্তু এখানে এসে যারা হাঁটুর বুদ্ধি খাটাবেন তারা যে জগাখিচুরীর প্রমাণ দিবেন তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

গত একই  তারিখে (০১-০৮-০৮) “দৈনিক বাংলাবাজার” পত্রিকার প্রথম পৃষ্ঠায় দু’কলামব্যাপী শিরোনাম দেয়া হয়, “এবারের নির্বাচনে আইডি কার্ডের প্রয়োজন নেই- শাখাওয়াত।”

একেই বলে তুঘলকি কা-। এত হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করে, এত সৈনিক দাবড়িয়ে, সাধারণ জনগণকে ডা-া দিয়ে ঠা-া করে ছবিসহ আইডি কার্ড করে এখন তারা বলছেন যে, “এবারের নির্বাচনে আইডি কার্ডের প্রয়োজন নেই।”

অথচ এবারের নির্বাচন সংস্কারের নির্বাচন ঘোষণা দিলেন আর সে সংস্কারের অনবদ্য অঙ্গ হিসেবেই তারা আইডি কার্ডের জন্য এত কিছু করলেন।

মূলকথা হলো, “ছবি তোলা হারাম।” আর সে হারাম পথে চলায় তারা সফলতা পায়নি আদৌ।

বরং সারাদেশব্যাপী ছবির সাথে নামের মিল নেই। একজনের ছবির পাশে আরেক জনের নামসহ হাজারো ভুলের প্রেক্ষিতে তারা দেখছেন যে, আইডি কার্ড এবারে প্রয়োগ হলে জনবিস্ফোরণ ঘটবে। এবং তা আঁচ করতে পেরেই আত্মরক্ষার্থে তারা এখন বলে বেড়াচ্ছেন যে, এবারের নির্বাচনে আইডি কার্ডের প্রয়োজন নেই।

মূলতঃ তত্ত্বাবধায়ক সরকার হলো গণতন্ত্রের “অবৈধ সন্তান”। অর্থাৎ যেখানে বৈধ গণতন্ত্র নেই সে অবৈধ গণতন্ত্রই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ন্যায় অবৈধ সন্তান প্রসব করে। কাজেই সে অবৈধ সন্তান যা কিছু করবে তার সবকিছুতেই হারামের ছাপ থাকবে। তার সবকিছুতেই ত্রুটি থাকবে। তার সবকিছু নিস্ফলা হবে- এটাই তো স্বাভাবিক।

প্রসঙ্গতঃ দুইশ’ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘রোড শো’ এসো বাংলাদেশ গড়ি’র নামে তত্ত্বাবধায়ক সরকার যে খেল-তামাশা করলো জনগণ তার সুফল কতটুকু পেলো? দুর্নীতি কতটুকু দূর হলো?

একটা দেশের সরকার, প্রশাসন, দেশের অর্থকে এভাবে নিজের খেয়াল-খুশী চরিতার্থকরণের অধিকার তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে কে দিলো? দেশটা কী তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বাবা-দাদার জমিদারী না তালুক?

দুর্নীতিবাজ রাজনীতিকদের জন্য যদি ওয়ান ইলেভেনের জন্ম হয় তবে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের তুঘলকি কা-ের জন্য যে কিছু হবেনা- বাংলাদেশের জনগণকে সেরকম বন্ধ্যা মনে করার বোকামী তত্ত্বাবধায়ক সরকার কি করে করতে পারলো? অথবা করতে পারছে?

মূলতঃ বাংলাদেশের জনগণ বন্ধ্যা নয়। এদেশের ভূমি খুব ঊর্বর। ঊর্বর এদেশের মানুষের মনন।

কাজেই এদেশের জনগণকে যদি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের তুঘলকি কান্ডের কুকীর্তিসহ দলীয় সরকারের দুর্নীতি তথা গোটা গণতন্ত্রের গলদটাই বুঝিয়ে দেয়া যায় তবে খুব সহজেই এদেশের গণমানুষ গণতন্ত্রের গণপ্রতিনিধির নামে দুর্নীতিবাজ মন্ত্রী, এমপি তথা গোটা গণতন্ত্রের বিরুদ্ধেই গণআন্দোলন শুরু করবে ইনশাআল্লাহ।

-মুহম্মদ তারিফুর রহমান, ঢাকা।

ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি ও ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা-৫০

বাতিল ফিরক্বা ওহাবীদের অখ্যাত মুখপত্র আল কাওসারের মিথ্যাচারিতার জবাব-১৩ হাদীছ জালিয়াতী, ইবারত কারচুপি ও কিতাব নকল করা ওহাবীদেরই জন্মগত বদ অভ্যাস

যুগের আবূ জাহিল, মুনাফিক ও দাজ্জালে কায্যাবদের বিরোধিতাই প্রমাণ করে যে, রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী হক্ব। খারিজীপন্থী ওহাবীদের মিথ্যা অপপ্রচারের দাঁতভাঙ্গা জবাব-৫১

‘থার্টিফাস্ট নাইট, ভালেন্টাইন ডে আর পহেলা বৈশাখের’ নামে হুজ্জোতির জন্য ধর্মব্যবসায়ীদের কৌশলগত নিষ্ক্রীয়তা, স্বার্থবাদী মৌসুমী রাজনৈতিক তৎপরতা এবং সংস্কৃতি বিপননকারীদের দূরভিসন্ধিতা ও মধ্যবিত্তের  তত্ত্ব-তালাশহীন প্রবণতা তথা হুজুগে মাতা প্রবৃত্তিই দায়ী

অবশেষে জামাতীরা স্বীকার করিল যে, মুক্তি পাইতে চাহিলে মুরীদ হইতে হয়। আল্লাহ পাক-এর ওলী বা দরবেশ হইতে পারিলে মুক্তি পাওয়া যায়। কিন্তু জামাতীরা তাহা নয় বলিয়াই আখিরাত তো দূরের কথা দুনিয়াতেই তাহারা দুর্নীতির দায়ে গ্রেফতার। আর মইত্যা রাজাকারের ফতওয়া অনুযায়ী তো- তাহাকেই কতল করা ওয়াজিব।