তাফসিরুল কুরআন কুরআন ও সুন্নাহ’র বিধান অনুসারে চলা প্রত্যেকের জন্য ফরয অন্যথায় পরিণতি অত্যন্ত ভয়াবহ-৫

সংখ্যা: ১৭৫তম সংখ্যা | বিভাগ:

واذا قيل لهم اتتعوا ما انزل الله قالوا بل نتبع ما الفينا عليه اباءنا او لو كان اباؤهم لايعقلون شيئا ولا يهتدون.

তরজমা: যখন তাদেরকে বলা হয়, আল্লাহ পাক যা নাযিল করেছেন তা তোমরা অনুসরণ কর। তখন তারা বলে, কখনই নয়, বরং আমরা আমাদের বাপ-দাদা, পূর্বপুরুষদেরকে যার উপর পেয়েছি তার অনুসরণ করবো। যদিও তাদের বাপ-দাদা, পূর্বপুরুষদের কোনই জ্ঞান ছিলনা এবং তারা সৎ পথে পরিচালিত ছিলনা। (সূরা বাক্বারা-১৭০)

আল্লাহ পাক-এর মতে মত হওয়া এবং আল্লাহ পাক-এর যিনি হাবীব, যিনি নবীদের নবী, রসূলদের রসূল হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর পথে পথ হওয়া ব্যতীত বান্দা ও উম্মতের জন্য কোন বিকল্প মত ও পথ নেই যে, সেই মত ও পথে বান্দা ও উম্মত চলতে পারে। কেননা আল্লাহ পাক তাঁর হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর মাধ্যমে এমন পরিপূর্ণ দ্বীন দিয়ে পাঠিয়েছেন যা পূর্বাপর সকল দ্বীন ও মতবাদ রহিতকারী।

এ প্রসঙ্গে কালামুল্লাহ শরীফে ইরশাদ হয়েছে-

هو الذى ارسل رسوله بالهدى ودين الحق ليظهره على الدين كله وكفى بالله شهيدا.

অর্থঃ “তিনি সেই আল্লাহ পাক যিনি তাঁর হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে হিদায়েত ও সত্য দ্বীনসহ অর্থাৎ কুরআন শরীফ ও সুন্নাহ শরীফ দিয়ে পাঠিয়েছেন পিছনের ওহীর দ্বারা নাযিলকৃত এবং পিছনের ও সামনের মানব রচিত মতবাদ সবকিছুর উপর প্রাধান্য দিয়ে বা বাতিল ঘোষণা করে। এ ব্যাপারে স্বাক্ষ্যদাতা হিসেবে আল্লাহ পাকই যথেষ্ট।” (সূরা ফাতহ্-২৮)

হাদীছ শরীফে বর্ণিত রয়েছে-

عن جابر رضى الله تعالى عنه عن النبى صلى الله عليه وسلم حين اتاه عمر رضى الله تعالى عنه فقال انا نسمع احاديث من يهود نعجبنا افترى ان نكتب بعضها فقال امتهوكون انتم كما تهوكب اليهود والنضارى لقد جئتكم بها بيضاء نقية ولو كانموسى حيا ماوسعه الا اتباعى.

অর্থঃ “হযরত জাবির রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হতে বর্ণনা করেন যে, একদিন হযরত উমর ইবনুল খত্তাব রদি¦য়াল্লাহু তায়ালা আনহু হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নিকট এসে বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ্ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমরা ইহুদীদের থেকে তাদের কিছু ধর্মীয় কথা শুনে থাকি, যাতে আমরা আশ্চর্যবোধ করি, এর কিছু আমরা লিখে রাখবো কি? হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, তোমরাও কি দ্বিধাদ্বন্দ্বে রয়েছ? যে রকম ইহুদী-নাছারারা দ্বিধাদ্বন্দ্বে রয়েছে? অবশ্যই আমি তোমাদের নিকট পরিপূর্ণ, উজ্জ্বল ও পরিষ্কার দ্বীন নিয়ে এসেছি। হযরত মূসা আলাইহিস্ সালামও যদি দুনিয়ায় থাকতেন, তাহলে তাঁকেও আমার অনুসরণ করতে হতো।” (মুসনাদে আহ্মদ, বাইহাক্বী, মিশকাত, মিরকাত, আশয়াতুল লুময়াত, লুময়াত, শরহুত্ ত্বীবী, তা’লীকুছ ছবীহ্ ইত্যাদি)

প্রমাণিত হলো, যিনি জলীলুল ক্বদর রসূল, উলুল আযমি মিনার রুসূল, যিনি কালীমুল্লাহ আলাইহিস্ সালাম যাঁর উপর প্রধান চারখানা আসমানী কিতাবের অন্তর্ভূক্ত ‘তওরাত শরীফ’ নাযিল করা হয়েছিল, যিনি ইহুদী সম্প্রদায়ের নবী ও রসূল, স্বয়ং তিনিও যদি আখিরী রসূল হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর যামানায় আসতেন তাহলে উনার জন্যেও ফরয-ওয়াজিব হতো হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে ইত্তিবা বা অনুসরণ করা তথা কুরআন শরীফ ও সুন্নাহ শরীফ মুতাবিক চলা। এবং এর বাস্তব উদাহরণ হচ্ছেন আল্লাহ পাক-এর আরেক জলীলুল ক্বদর এবং উলুল আযমি মিনার রুসূল হযরত ঈসা আলাইহিস্ সালাম যিনি আল্লাহ পাক-এর কালিমা ও রূহ। যাঁর উপর ইন্জীল শরীফ নাযিল করা হয়েছিল। যে কিতাবখানাও চারখানা প্রধান আসমানী কিতাবের অন্তর্ভূক্ত। যাঁর উম্মত হলো খ্রিষ্টান সম্প্রদায়। আল্লাহ পাক তাঁকে আসমানে উঠিয়ে নেন। যখন হযরত ইমাম মাহদী আলাইহিস্ সালাম-এর প্রকাশ ঘটবে আল্লাহ পাক তখন পূনরায় তাঁর হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উম্মত হিসেবে তাঁকে যমীনে পাঠাবেন দাজ্জালকে হত্যা করার জন্য। তিনি যমীনে এসে আল্লাহ পাক-এর হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর প্রতি নাযিলকৃত কিতাব- কুরআন শরীফ ও সুন্নাহ শরীফ মুতাবিক আমল করবেন।

যদি তাই হয় তাহলে আল্লাহ পাক-এর হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর যারা উম্মত তারা কুরআন শরীফ ও সুন্নাহ শরীফের আদেশ- নিষেধ বাদ দিয়ে কি করে ইহুদী-খ্রিষ্টানদের প্রবর্তিত মনগড়া মতবাদ- গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, রাজতন্ত্রের নিয়ম-নীতি- ভোট, নির্বাচন, ছবি, বেপর্দা-বেহায়াপনা, গান-বাজনা, খেলাধুলা ইত্যাদি হারাম ও কুফরীতে মশগুল হতে পারে। আসলে এ সমস্ত লোক মুসলমান দাবী করলেও হাক্বীক্বত তারা মুসলমান নয়। বরং তারা ইহুদী-খ্রিষ্টানদের দোষর ও উচ্ছিষ্টভোগী গোলাম। ইহুদী-খ্রিষ্টানদের সাথেই হবে তাদের হাশর-নশর। যাদের পরিণাম ফল অত্যন্ত ভয়ঙ্কর। (অসমাপ্ত)

তাফসীরুল কুরআন: কুরআন ও সুন্নাহ’র বিধান অনুসারে চলা প্রত্যেকের জন্য ফরয অন্যথায় পরিণতি অত্যন্ত ভয়াবহ-৬

তাফসীরুল কুরআন:

তাফসীরুল কুরআন

তাফসীরুল কুরআন

তাফসীরুল কুরআন: কুরআন ও সুন্নাহ’র বিধান অনুসারে চলা প্রত্যেকের জন্য ফরয অন্যথায় পরিণতি অত্যন্ত ভয়াবহ-৮