তাফসীরুল কুরআন:  কুরআন ও সুন্নাহ’র বিধান অনুসারে চলা প্রত্যেকের জন্য ফরয অন্যথায় পরিণতি অত্যন্ত ভয়াবহ-১১

সংখ্যা: ১৮১তম সংখ্যা | বিভাগ:

وَاِذَا قِيْلَ لَـهُمُ اتَّبِعُوْا مَاۤ اَنْزَلَ اللهُ  قَالُوْا بَلْ نَتَّبِعُ مَاۤ اَلْفَيْنَا عَلَيْهِ اٰبَآءَنَا اَوَلَوْ كَانَ اٰبَآؤُهُمْ لَا يَعْقِلُوْنَ شَيْئًا وَّلَا يَهْتَدُوْنَ

তরজমাঃ যখন তাদেরকে বলা হয়, আল্লাহ পাক যা নাযিল করেছেন তা তোমরা অনুসরণ কর। তখন তারা বলে- কখনই নয়, বরং আমরা আমাদের বাপ-দাদা, পূর্বপুরুষদেরকে যার উপর পেয়েছি তার অনুসরণ করবো। যদিও তাদের বাপ-দাদা, পূর্বপুরুষদের কোনই জ্ঞান ছিলনা এবং তারা সৎ পথে পরিচালিত ছিলো না। (সূরা বাক্বারা-১৭০)

তাফসীরঃ আয়াত শরীফ-এর ব্যাখ্যায় হাদীছ শরীফে বর্ণিত রয়েছে-

عن عبد الله بن عمرو رضى الله تعالى عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم لا يؤمن احدكم حتى يكون هواه تبعا لما جئت به.

অর্থঃ “হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আল্লাহ পাক-এর হাবীব নূরে মুজাস্সাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, কোন ব্যক্তি  মু’মিন হতে পারবে না, যে পর্যন্ত তার প্রবৃত্তি আমি যা এনেছি (কুরআন শরীফ ও সুন্নাহ শরীফ) তার অধীন বা অনুগত না হয়। (শরহুস্ সুন্নাহ, মিশকাত)

অর্থাৎ যে মু’মিন বা মুসলমান হবে তাকে অবশ্যই আল্লাহ পাক-এর মতে মত এবং আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর পথে পথ হতে হবে। উনারা যে আদেশ নির্দেশ করেছেন সে অনুযায়ী চলতে হবে। অন্যথায় আল্লাহ পাক ও তাঁর হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর মত ও পথের, আদেশ ও নির্দেশের খিলাফ চলে মু’মিন বা মুসলমান দাবি করা, পরিচয় দেয়া আদৌ শুদ্ধ হবে না। সে পরিচয়, ও দাবি আল্লাহ পাক ও তাঁর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর কাছে গৃহীত হবে না।

যেমন আল্লাহ পাক স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন-

اطيعوا الله ورسوله  ان كنتم مؤمنين.

অর্থঃ “আল্লাহ পাক ও তাঁর হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর ইতায়াত বা আনুগত্য কর যদি তোমরা মু’মিন হয়ে থাক।” (সূরা আনফাল-১)

আল্লাহ পাক অন্যত্র আরো বলেন-

يايها الذين امنوا اتقوا الله حق تقاته ولا تموتن الا وانتم مسلمون.

অর্থঃ “হে ঈমানদারগণ! আল্লাহ পাককে ভয় করার মতো ভয় করো। আর তোমরা পরিপূর্ণ মু’মিন বা মুসলমান না হয়ে মৃত্যুবরণ করো না।” (সূরা আলে ইমরান-১০২)

এ আয়াত শরীফ-এর মধ্যে আল্লাহ পাক কিন্তু স্পষ্টই বলে দিয়েছেন, যারা নামে মাত্র মুসলমান, ইলম, আক্বীদা, আমল, ইখলাছের বিষয়ে যাদের কোন খবর নেই এবং যারা কুরআন শরীফ ও সুন্নাহ শরীফ-এর খিলাফ হারাম-নাজায়িয, বিদয়াত-বেশরা কাজে অভ্যস্ত এসব গোনাহগার, ফাসিক মুসলমান ব্যক্তিদের সম্বোধন করে আল্লাহ পাক বলেছেন যে, তোমরা তোমাদের রব, খালিক, মালিক আল্লাহ পাককে ভয় করার মতো ভয় করো। অর্থাৎ আল্লাহ পাক-এর নাযিলকৃত হুকুম বা আদেশ-নির্দেশের খিলাফ কোন কাজ তোমরা করো না। কারণ ইন্তিকালের পর তোমাদের কৃতকর্মের ব্যাপারে জবাবদিহী করতে হবে।

যেমন হাদীছ শরীফে এসেছে-

الناس  نيام اذا ماتوا انتبهوا.

অর্থঃ “মানুষ ঘুমের মধ্যে রয়েছে যখন তারা ইন্তিকাল করবে তখন সজাগ বা জাগ্রত হবে।”

অর্থাৎ ইন্তিকাল হওয়ার সাথে সাথে দুনিয়াবী জিন্দেগীতে সে কি আমল করেছে তার সুক্ষ্মাতিসুক্ষ্ম হিসাব তাকে দিতে হবে। সে যদি হিসাব দিতে সক্ষম হয় তাহলে তো পার পেয়ে গেল। আর আল্লাহ পাক না করুন, সে যদি হিসাব দিতে আটকা পড়ে যায় তাহলে তার আফসুস, হায়-হুতাশের সীমা থাকবে না। সে কঠিন আযাবে-গযবে গ্রেফতার হয়ে যাবে। নাউযুবিল্লাহ।

এ কারণে আল্লাহ পাক আগেই সতর্ক করে দিয়েছেন যে, আমল-আখলাক্ব শুদ্ধ করে, কুরআন শরীফ ও সুন্নাহ শরীফ-এর হুকুম আহকাম মেনে পরিপূর্ণ মু’মিন মুসলমান হয়ে তারপর ইন্তিকাল করো। এর পূর্বে ইন্তিকাল করো না।  (অসমাপ্ত)

তাফসীরুল কুরআন: কুরআন ও সুন্নাহ’র বিধান অনুসারে চলা প্রত্যেকের জন্য ফরয অন্যথায় পরিণতি অত্যন্ত ভয়াবহ-৮

তাফসীরুল কুরআন : কুরআন ও সুন্নাহ’র বিধান অনুসারে চলা প্রত্যেকের জন্য ফরয অন্যথায় পরিণতি অত্যন্ত ভয়াবহ-৯

তাফসীরুল কুরআন: মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ পালনই সর্বশ্রেষ্ঠ আমল

তাফসীরুল কুরআন: কুরআন ও সুন্নাহ’র বিধান অনুসারে চলা প্রত্যেকের জন্য ফরয অন্যথায় পরিণতি অত্যন্ত ভয়াবহ-১০

তাফসীরুল কুরআন: মুসলমানের জন্য ইসলাম ব্যতীত অন্য কোন ধর্ম ও মতবাদের নিয়ম-নীতি গ্রহণ করা কুফরী