বিশ্ব সমাদৃত, হযরত আওলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিমগণের অনুপম মুবারক চরিত গ্রন্থ আখবারুল আখইয়ার- ১৩৯

সংখ্যা: ১৮০তম সংখ্যা | বিভাগ:

মূলঃ হযরত শায়খ আব্দুল হক মুহাদ্দিছে দেহ্লবী রহমতুল্লাহি আলাইহি,

ভাষান্তরঃ মাওলানা মুহম্মদ ফযলুল হক

হযরত খাজা মুঈনুদ্দীন র্খুরদ

রহমতুল্লাহি আলাইহি

(৭০২ হিজরী-৭৬১ হিজরী)

পূর্ব প্রকাশিতের পর

একবার এমন হলো যে, উলামায়ে কিরাম এবং মুদাররিসীনে ইজামগণের সাথে আলোচনার জন্য সুলতান মাহমূদ খিলজি আজমীর শরীফ গিয়েছিলেন। এমন সময় চিশ্ত খান যে কোন কারণে হযরত বায়েজীদ বুযূর্গ রহমতুল্লাহি আলাইহিকে হযরত খাজা সাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর মাযার শরীফে তা’লীম দেয়ার জন্য পাঠিয়েছিলেন। অল্প কয়েকদিনের মধ্যেই সেখানকার অধিকাংশ ছাত্ররা উনার কাছে পড়াশোনা করতে অস্বীকার করল। লোকজন ঐ সকল ঘটনা সুলতান মাহমূদ-এর কাছে পেশ করল। সুলতান মাহমূদ সমস্ত ঘটনা শ্রবণ করে তথাকার সমস্ত উলামায়ে কিরামগণকে হযরত বায়েজীদ বুযুর্গ রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর বংশ মর্যাদা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলেন। হযরত খাজা সাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর মাযার শরীফ-এর তিনজন খাদিম হযরত মাওলানা রুস্তম আজমীরী রহমতুল্লাহি আলাইহি যিনি আজমীর শরীফ-এর পুরাতন উলামাগণের অন্তর্ভুক্ত। তিনি এবং অন্যান্য কতিপয় উলামায়ে কিরামগণ সাক্ষী দিলেন যে, হযরত বায়েজীদ বুযুর্গ রহমতুল্লাহি আলাইহি আসলে হযরত শায়খ কিয়ামুদ্দীন বারইয়াল ইবনে হযরত শায়খ হুস্সামুদ্দীন ছুখতা ইবনে হযরত শায়খ ফখরুদ্দীন ইবনে হযরত খাজা মুঈনুদ্দীন হাসান চিশ্তী রহমতুল্লাহি আলাইহি ছিলেন। অর্থাৎ তিনি সুলত্বানুল হিন্দ হযরত খাজা সাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর বংশধরের অন্তর্ভুক্ত। যদি শুধুমাত্র হযরত খাজা হুসাইন নাগুরী রহমতুল্লাহি আলাইহি একাও উনার বংশ সম্পর্কে বর্ণনা করতেন তবেও যথেষ্ট ছিল কারণ তিনি আল্লাহ পাক-এর খালিছ ওলী এবং ঐ সিলসিলার মস্তবড় বুযূর্গ ওলীআল্লাহ ছিলেন। এছাড়া হযরত খাজা হুসাইন নাগুরী রহমতুল্লাহি আলাইহিও তাঁর মেয়েদেরকে হযরত খাজা বায়েজীদ বুযুর্গ রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর খিদমতে দিয়েছিলেন। এর দ্বারাও প্রমাণ হয়ে যায়, হযরত বায়েজীদ বুযুর্গ রহমতুল্লাহি আলাইহি সুলত্বানুল হিন্দ হযরত খাজা সাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর বংশধর। মূলত ইহাই প্রকৃত ও সত্য ঘটনা। (আল্লাহ পাকই সঠিক বিষয় অধিক অবগত)।

মূল ব্যাপার হচ্ছে ইমামুল আইম্মাহ, হাবীবুল্লাহ, সুলত্বানুল হিন্দ হযরত খাজা সাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর সন্তান-সন্ততি বা বংশধরগণ সংখ্যায় অনেক ছিলেন। কথিত আছে যে, হযরত খাজা সাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর কোন সন্তান সন্তুতি নেই। ইহা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন কথা। বরং হযরত খাজায়ে আজমীর রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর সন্তান-সন্ততি এবং মালফুজাতে চিশ্ত-এর সংখ্যা অনেক। হযরত শায়খ হামীদুদ্দীন রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর পুতি হযরত শায়খ ফরীদ রহমতুল্লাহি আলাইহি স্বীয় কিতাব “ছুরুরুচ্ছুদুর” এর মধ্যে তাঁর সম্মানিত দাদা-এর হাওয়ালা দিয়ে বর্ণনা করেছেন যে, আমাদের শায়খ রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর অনেক সন্তানাদি ছিলেন। ঐ যামানায় উনারা একবার আমাকে বললেন, হে হামীদ! কি ব্যাপার, আমরা আমাদের যুবক বয়সে যা কিছুই দুয়া করতাম তৎক্ষণাৎ তা কবুল হতো। কিন্তু এখন বৃদ্ধ অবস্থায় তার উল্টা হচ্ছে। এরপরে আমি আরয করলাম যে, শায়খ রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর খুব ভালভাবেই জানা আছে যে, যতক্ষণ পর্যন্ত আল্লাহ পাক-এর নবী হযরত ঈসা আলাইহিস্ সালাম স্বীয় মাতার রেহেম শরীফে ছিলেন ততক্ষণ হযরত মরিয়ম আলাইহাস্ সালাম-এর নিকট গরমকালে ঠা-ার ও ঠা-াকালে গরমের ফল কুদরতীভাবে আসতো। কিন্তু আল্লাহ পাক-এর নবী হযরত ঈসা আলাইহিস্ সালাম যমীনে তাশরীফ আনার পরে আর তা হলো না, হযরত মরিয়ম আলাইহাস্ সালাম উহা প্রাপ্তির অপেক্ষায় থাকলেন। ফলে আল্লাহ পাক বললেন,

وهزى اليك  بجذع  النخلة  تساقط عليك رطبا جنيا.

অর্থঃ “আপনি খেজুরের গাছ নাড়াচাড়া করেন, তাহলে তাজা খেজুর পেয়ে যাবেন। (সূরা মারইয়াম-২৫  )

তাঁর জীবনের প্রথম অবস্থা ও তখনকার অবস্থার মধ্যে এতটুকুই পার্থক্য ছিল। হযরত খাজা সাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি আমার ঐ উত্তর কবুল করলেন এবং পছন্দ করলেন। (অসমাপ্ত)

বিশ্ব সমাদৃত, হযরত আওলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিমগণের অনুপম মুবারক চরিত গ্রন্থ আখবারুল আখইয়ার- ১৩৭

বিশ্ব সমাদৃত, হযরত আওলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিমগণের অনুপম মুবারক চরিত গ্রন্থ আখবারুল আখইয়ার- ১৩৮

বিশ্ব সমাদৃত, হযরত আওলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিমগণের অনুপম মুবারক চরিত গ্রন্থ আখবারুল আখইয়ার-১৪০

বিশ্ব সমাদৃত, হযরত আওলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিমগণের অনুপম মুবারক চরিত গ্রন্থ আখবারুল আখইয়ার-১৪১

বিশ্ব সমাদৃত, হযরত আওলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিমগণের অনুপম মুবারক চরিত গ্রন্থ আখবারুল আখইয়ার-১৪২