ভারতে মসজিদ মাদ্রাসা মুসলমানদের ঘর ভাঙ্গা, তথা শহীদ করা চলছেই নাউযুবিল্লাহ! শত বৎসর থেকে হাজার বৎসরের পুরানো মসজিদও আমলে নেয়া হচ্ছে না নাউযুবিল্লাহ! তথাকথিত ধর্মনিরপেক্ষবাদী ভারতে মুসলিম নির্যাতনের  বিরুদ্ধে সরকারের ও জনগণের শক্ত প্রতিবাদ করা দরকার

সংখ্যা: ২৯৫তম সংখ্যা | বিভাগ:

ফাওয়াদ ভারতের রাজধানী দিল্লির যে মাদ্রাসায় থাকত, সেখানে যে চারপাশে অনেক গাছ।

বছর দুয়েক আগে হঠাৎ করেই বাবা আর মা মারা যাওয়ার পরে পড়শি রাজ্য থেকে দিল্লির যে মাদ্রাসায় থাকতে এসেছিল ফাওয়াদ, জায়গাটা সেকারণেই ভাল লেগে গিয়েছিল, নিরাপদ মনে হয়েছিল জায়গাটা।

পাশের মসজিদেও ছিল সবুজ রঙের ছড়াছড়ি – ছাদের কড়িকাঠ, খিলান – সেসবও ছিল সবুজ রঙের।

ছিল। এখন আর নেই।

কারণ ফাওয়াদদের মাদ্রাসাসহ প্রায় ৬০০ বছরের পুরনো আখুন্দজি মসজিদটাই সপ্তাহ দুয়েক আগে বুলডোজার দিয়ে ভেঙ্গে দিয়েছে দিল্লি ডেভেলপমেন্ট অথরিটি বা ডিডিএ।

প্রাচীন ওই মসজিদ, একটি মাদ্রাসা যেখানে ফাওয়াদ এবং আরও ২৫ জন শিক্ষার্থী থাকত, যাদের বেশিরভাগই এতিম। মসজিদ পরিসরেই অবস্থিত এক সুফি সাধকের মাজারও ভেঙে দেওয়া হয় ৩০শে জানুয়ারি।

কিন্তু ‘আগে থেকে ঘোষণা করা হয় নি’

মসজিদের সঙ্গে যুক্ত মানুষরা বলছে, মসজিদটি ভাঙা হবে, এমন কোনও ঘোষণা আগে থেকে করা হয়নি।

বিবিসি নয়জন শিশুর সঙ্গে কথা বলেছে, যারা জানিয়েছে, ভোর ৫টায় তারা যখন ফজরের নামাযের জন্য ঘুম থেকে উঠেছিল, তখনই তারা বিকট শব্দ শুনতে পায়।

তাদেরই একজন ওমরের মনে আছে, কয়েক ডজন পুলিশ, কয়েকটি বুলডোজার এবং কিছু রাগী চেহারার লোক চিৎকার করে আমাদের বাইরে আসতে বলছিল।

এমন সময় ইমাম সাহেব ছুটে এলেন। ‘দৌড়াও, পালাও’ বলে চিৎকার করে ওঠেন তিনি।

“যা পাও নিয়ে দৌড়াও,” শিশুদের উদ্দেশ্যে বলেন তিনি।

ওমর দৌড়িয়েছিল শুধু একটা সোয়েটার আর চপ্পল হাতে। তার বন্ধু মুরীদ সেটাও করতে না পেরে খালি পায়ে পালিয়ে যায়। আরও পাঁচটি শিশু, যাদের বয়স ১০ বছর, তারাও কোনও শীতের পোষাক বা জুতো পড়ার সময় পায় নি।

মসজিদটির ইতিহাস সম্পর্কে জানা যায়, যে এটি ত্রয়োদশ শতকে রাজিয়া সুলতানা নির্মাণ করেছিলেন, যাকে ভারতীয় উপমহাদেশের প্রথম নারী মুসলিম শাসক হিসাবে বিবেচনা করা হয়।

আবার কেউ কেউ বলছে, এর বয়স আরও বেশি হতে পারে। মি. হাশমি বলে, কাঠামোটিতে ধূসর পাথরের ব্যবহার এই ইঙ্গিত দেয় যে এটি প্রায় ৬০০-৭০০ বছর আগে সুলতানি আমলে নির্মিত।

আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়ার (এএসআই) নথি থেকে জানা যায়, ১৮৫৩ সাল নাগাদ শেষ মুঘল সম্রাট বাহাদুর শাহ জাফরের আমলে মসজিদটির সংস্কার করা হয়।

এই ঘটনার রেশ না কাটতেই এবার উত্তরাখণ্ডে একটি মসজিদ ও মাদরাসা ভাঙার খবর পাওয়া গেছে। আর তা সামনে আসতেই ছড়িয়ে পড়েছে সহিংসতা, যাতে শহীদ হয়েছেন চারজন। এছাড়া আহত হয়েছে দুই শতাধিক মানুষ।

গত ৯ ফেব্রুয়ারি এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি। এতে জানানো হয়, সহিংসতার জেরে উত্তরাখণ্ডের নৈনিতালের হলদোয়ানিতে জারি করা হয়েছে কারফিউ। এছাড়া স্কুল বন্ধের পাশাপাশি ইন্টারনেট পরিসেবাও বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।

এরই মাঝে আবার নতুন করে ষড়যন্ত্র তৈরি হয়েছে কাশীর জ্ঞানবাপী মসজিদ নিয়ে।

আরো সীমাহীন উদ্ধত্যপূর্ণ মন্তব্য করে ফেললো বিজেপি এক সাংসদ।

তার দাবি, “রাম মন্দির ভেঙে যেমন বাবরি মসজিদ তৈরি হয়েছিল। ঠিক সেইভাবেই হিন্দু মন্দির ভেঙেই তৈরি হয় জামে মসজিদ।” তাই তার প্রস্তাব, “দিল্লির জামে মসজিদ ভাঙলেই দেবতার মূর্তি মিলবে।

২০১৫ সালেই সে বলেছিলো, “হিন্দু মহিলাদের অন্তত ৪টি করে সন্তান থাকা উচিত। তাহলেই হিন্দু ধর্মের সঠিক রক্ষা হবে।” তার ঠিক এক বছর পর দাদরিকাণ্ডকে সমর্থন করে সাক্ষী জানিয়েছিলো, “গরু পাচার বা গো-হত্যা রুখতে হিন্দুরা  প্রয়োজনে অস্ত্র হাতে নেবে।”

এদিকে অসমে বিজেপি সরকার গঠিত হওয়ার পর থেকেই নানাভাবে নিশানা করা হচ্ছে রাজ্যের ৩৫ শতাংশ জনসংখ্যার সংখ্যালঘু মুসলিমদের। বিজেপির দ্বিতীয় দফার সরকারে হিমন্ত বিশ্বশর্মা মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর শাসক দলের মুসলিম বিদ্বেষ আরও প্রকট হয়ে উঠেছে। রাজ্যের সবক’টি সরকারি মাদ্রাসা বন্ধ করার পর- গো-সংরক্ষণের নামে গো-গোশত নিষিদ্ধ থেকে শুরু করে বেছে বেছে সংখ্যালঘু অধ্যুষিত মহল্লাগুলিতে চালানো হচ্ছে উচ্ছেদ অভিযান। ইতিমধ্যে বনাঞ্চল সংলগ্ন এলাকা থেকে বিপুল সংখ্যক মানুষকে উচ্ছেদ করা হয়েছে- যার সিংহভাগই মুসলিম। অথচ এদের পুনর্বাসনের কোনও ব্যবস্থা করা হয়নি। এবার উচ্ছেদের নিশানা অসমের বিস্তীর্ণ চর-চাপুরি অঞ্চলে। সেখানেও বেছে বেছে সংখ্যালঘু মুসলিমদেরই টার্গেট করা হচ্ছে।

কেবল বাড়ি-ঘর নয়- সেইসঙ্গে অনেক মাদ্রাসা ও মসজিদও গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। মসজিদ ভাঙার সময় ইসলামী অনুভূতিকেও তোয়াক্কা করা হয়নি। যত্রতত্র ছড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে পবিত্র কুরআন শরীফ ও অন্যান্য ইসলামী পুস্তক। নাউযুবিল্লাহ!

স্বাভাবিকভাবেই এইভাবে উচ্ছেদ অভিযান চালানোয় সরকারের উদ্দেশ্য ও মানবিকতাবোধ নিয়ে তথা ভারতের তথাকথিত ধর্মনিরপেক্ষতা নিয়েও চিরাচড়িত জ্বলন্ত প্রশ্ন ফুসে উঠেছে। মুসলিম নির্যাতনের এবং মসজিদ মাদরাসা ধ্বংসের ভয়ঙ্কর চিত্রই প্রকাশ পেয়েছে নাউযুবিল্লাহ। এআইইউডিএফের বিধায়ক তথা রাজ্য জমিয়তে উলামায়ের নেতা ড. হাফিজ রফিকুল ইসলাম বলেন- এই উচ্ছেদ অভিযান ধর্মনিরপেক্ষ দেশে অমানবিক কাজ। হিটলারের যুগেও কোনও জাতিকে টার্গেট করে একতরফা এমন ঘটনা ঘটেছে বলে ইতিহাসেও হয়তো খুঁজে পাওয়া যাবে না।

কাজেই, ভারতব্যাপী ব্যাপক হারে মসজিদ-মাদরাসা ভাঙ্গা ও মুসলমানদেরকে নিজস্ব সম্পত্তি হতে উচ্ছেদের বিরুদ্ধে ভারত ও বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বের মুসলমান ও মুসলিম দেশের সরকারদেরকে সোচ্চার হতে হবে। শক্ত প্রতিবাদ করতে হবে। ভারতকে বয়কট করতে হবে। ভারত ও ভারতীয় পণ্য নিষিদ্ধ করতে হবে।

-মুহম্মদ মাহবূবুর রহমান।

ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি ও ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা-৫০

বাতিল ফিরক্বা ওহাবীদের অখ্যাত মুখপত্র আল কাওসারের মিথ্যাচারিতার জবাব-১৩ হাদীছ জালিয়াতী, ইবারত কারচুপি ও কিতাব নকল করা ওহাবীদেরই জন্মগত বদ অভ্যাস

যুগের আবূ জাহিল, মুনাফিক ও দাজ্জালে কায্যাবদের বিরোধিতাই প্রমাণ করে যে, রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী হক্ব। খারিজীপন্থী ওহাবীদের মিথ্যা অপপ্রচারের দাঁতভাঙ্গা জবাব-৫১

‘থার্টিফাস্ট নাইট, ভালেন্টাইন ডে আর পহেলা বৈশাখের’ নামে হুজ্জোতির জন্য ধর্মব্যবসায়ীদের কৌশলগত নিষ্ক্রীয়তা, স্বার্থবাদী মৌসুমী রাজনৈতিক তৎপরতা এবং সংস্কৃতি বিপননকারীদের দূরভিসন্ধিতা ও মধ্যবিত্তের  তত্ত্ব-তালাশহীন প্রবণতা তথা হুজুগে মাতা প্রবৃত্তিই দায়ী

অবশেষে জামাতীরা স্বীকার করিল যে, মুক্তি পাইতে চাহিলে মুরীদ হইতে হয়। আল্লাহ পাক-এর ওলী বা দরবেশ হইতে পারিলে মুক্তি পাওয়া যায়। কিন্তু জামাতীরা তাহা নয় বলিয়াই আখিরাত তো দূরের কথা দুনিয়াতেই তাহারা দুর্নীতির দায়ে গ্রেফতার। আর মইত্যা রাজাকারের ফতওয়া অনুযায়ী তো- তাহাকেই কতল করা ওয়াজিব।