যুগের আবূ জাহিল, মুনাফিক ও দাজ্জালে কাযযাবদের বিরোধিতাই প্রমাণ করে যে, রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিলআলুহুল আলী হক্ব। খারিজীপন্থী ওহাবীদের মিথ্যা অপপ্রচারের দাঁতভাঙ্গা জবাব-৪৯

সংখ্যা: ১৭৬তম সংখ্যা | বিভাগ:

মূলতঃ যুগে যুগে মিথ্যাবাদী আর মুনাফিকরাই হক্বের বিরোধিতা করেছে, হক্বের বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার করেছে। তাই মহান আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফে মুনাফিকদেরকে ‘কায্যাব’ বা মিথ্যাবাদী বলে উল্লেখ করেছেন। যেমন, পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফে ইরশাদ হয়েছে, “আল্লাহ পাক সাক্ষ্য দিচ্ছেন যে, নিশ্চয়ই মুনাফিকরা মিথ্যাবাদী।” (সূরা মুনাফিকুন/১)   উক্ত আয়াত শরীফ দ্বারা এটাই প্রমাণিত হয় যে যারা মুনাফিক তারা অবশ্যই মিথ্যাবাদী। আবার যারা মিথ্যাবাদী তারাই মুনাফিক। কেননা হাদীছ শরীফে মুনাফিকের যে  আলামত বা লক্ষণ উল্লেখ করা হয়েছে তন্মধ্যে একটি হলো মিথ্যা কথা বলা।” মুজাদ্দিদে আ’যম, রাজারবাগ শরীফের হযরত পীর ছাহেব ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী-এর যারা বিরোধিতাকারী তারা উক্ত আয়াত শরীফ ও হাদীছ শরীফেরই পূর্ণ মিছদাক।  অর্থাৎ তারা একই সাথে মুনাফিক ও কাট্টা মিথ্যাবাদী, তাই তারা মানুষদেরকে বিভ্রান্ত করার জন্যে স্মরণীকা বার্ষিকী, পত্র-পত্রিকা ও বক্তৃতার মাধ্যমে মিথ্যা ও প্রতারণার আশ্রয় নেয়। যেমন, যুগের আবূ জাহিল, মুনাফিক আব্দুল্লাহ ইবনে উবাই ইবনে সুলূলের বংশধর ও  দাজ্জালে কায্যাব, খারিজীপন্থী ওহাবীদের আরেকটি মিথ্যা অপপ্রচার হচ্ছে,

(১৪-১৫-১৬)

স্বপ্ন সম্পর্কে কায্যাবুদ্দীনের মিথ্যাচারিতা

আশাদ্দুদ দরজার জাহিল হেমায়েত উদ্দীন ওরফে কায্যাবুদ্দীন তার কলঙ্কিত রেসালা “ভান্ত মতবাদে” কয়েকটি স্বপ্নের কথা উল্লেখ করেছে। যেমন- “(১) কাঁচের ঘরে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ চারজন ওলীকে প্রবেশ করানো, (২) চার টুকরা বিশিষ্ট গোল টুটি খাছ সুন্নত হওয়া প্রসঙ্গে, (৩) স্বপ্নে “আওলাদে রসূল” হওয়ার সংবাদ পাওয়া।”

“মিথ্যাচারিতার খণ্ডনমূলক জবাব”

স্মর্তব্য যে, রাজারবাগ শরীফ-উনার মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার মাসিক আল বাইয়্যিনাত উনার ৫৩-৫৯ তম সংখ্যাগুরোতে শতাধিক দলীল দ্বারা প্রমাণ করে দিয়েছেন যে, “চার টুকরা বিশিষ্ট গোল টুপিই খাছ সুন্নত।”  অন্য কোন টুপিই খাছ সুন্নত নয়।

অতএব, কায্যাবুদ্দীনের বক্তব্য বা স্বীকারোক্তি মতেই ুক্ত স্বপ্নটি সহযোগী দলীল হিসেবে গ্রহণযোগ্য। যেহেতু উক্ত স্বপ্নটি হাদীছ শরীফ দ্বারা প্রমাণিত বিষয়ের অনুকূলে। তাই বলার অপেকষাই রাখেনা যে, উক্ত স্বপ্ন সম্পর্কে চুঁ-চেরা করার অর্থ হচ্ছে হাদীছ শরীফ বা খাছ সুন্নত সম্পর্কে চুঁ-চেরা করা, যা কাট্টা কুফরীর অন্তর্ভুক্ত।

মূল কথা হলো, কায্যাবুদ্দীন কর্তৃক উল্লিখিত স্বপ্ন দু’টি সত্য, সঠিক ও শরীয়ত সম্মত। শরীয়ত বিরোধী কোন বক্তব্য বা বিষয়ই উক্ত স্বপ্নদ্বয়ে নেই। খোদ কায্যাবুদ্দীনের পক্ষেও সম্ভব হয়নি উক্ত স্বপ্ন দু’টিকে শরীয়ত বিরোধী প্রমাণ করা ইনশাআল্লাহ ক্বিয়ামত পর্যন্ত চেষ্টা করলেও সে তা প্রমাণ করতে পারবে না। সুতরাং, উক্ত স্বপ্ন নিয়ে চুঁ-চেরা করা নিজ জিহালতী ও গুমরাহীর বহিঃপ্রকাশ বৈ কিছু নয়।

তৃতীয় স্বপ্ন ও তার ব্যাখ্যামূলক জবাব

কায্যাবুদ্দীন এরপর তৃতীয় স্বপ্নের কথা উল্লেখ করতে গিয়ে লিখেছে, “স্বপ্নে স্বয়ং নবীজি নাকি তাকে বলেছেন তিনি “আওলাদে রসূল”। এরপর থেকে তিনি নিজেকে ‘আওলাদে রসূল’ পরিচয় দিয়ে থাকেন।” অর্থাৎ এর পূর্বে তিনি জানতেন না যে, তিনি আওলাদে রসূল।

আশাদ্দদু দরজার জাহিল কায্যাবুদ্দীনের উক্ত বক্তব্য সম্পূর্ণই মিথ্যা ও বানোয়াট। কারণ কায্যাবুদ্দীন উক্ত বক্তব্যের সপক্ষে একটি দলীলও পেশ করতে পারবে না। সে সাধারণ লোকদেরকে বিভ্রান্ত করার উদ্দেশ্যে নিজ থেকে উক্ত মিথৎ্যা ও বানোয়াট তথ্য প্রদান করেছে। কারণ বেশ কয়েক বছর পূর্বে শাস্তিবাগের এক বিশাল ওয়াজ মাহফিলে শ্রোতাদের পক্ষ থেকে রাজারবাগ শরীফ উনার হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনাকে প্রশ্ন করা হয়েছিল যে, “আপনার বংশ কি?” জবাবে হযরত পীর ছাহেব ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লহুল আলী তিনি বলেন, “আমাদের বংশ হচ্ছে ‘সাইয়্যিদ’ বংশ।” এরপর তিনি পূর্বপুরুষদের ইতিহাস তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “আমাদের পূর্বপুরুষ হযরত সাইয়্যিদ আবূ বকর মুজাদ্দিদী রহমতুল্লাহি আলাইহি আরব দেশ থেকে সুলতানুল হিন্দ, গরীবে নেওয়াজ, হাবীবুল্লাহ হযরত খাজা সাইয়্যিদ মুঈনুদ্দীন চিশতী আল হাসানী ওয়াল হুসাইনী ছুম্মা আজমিরী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সাথে প্রথমে আজমীর শরীফ তাশরীফ আনেন। অতঃপর সেখান থেকে দিল্লী, সেখান থেকে চট্টগ্রাম হয়ে বর্তমান নূরানীগঞ্জ জেলঅর ঐতিহাসিক ও ছূফী-সাধকদের কেন্দ্র সোনারগাঁয়ে তাশরীফ আনেন এবং ইলমে ঃিফক্বাহ ও ইলমে তাছাউফের তা’লীমে রত হন। সোনারগাঁয়ে এবং আড়াইহাজার থানার প্রভাকরদী গ্রামের ‘মিয়াবাড়ীতে’ পূর্বপুরুষদের মাযার শরীফ রয়েছে। কাজেই আওলাদে রসূল, হযরত আবূ বকর মুজাদ্দিদী রহমতুল্লাহি আলাইহি যিনি আরব দেশ থেকে তাশরীফ এনেছেন, উনারই বংশধর হচ্ছেন, রাজারবাগ শরীফ উনার হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম।

কাজেই স্বপ্নে নয় বরং তিনি পূর্ব থেকেই জানতেন  যে, তিনি সাইয়্যিদ বংশের এবং তিনি আওলাদে রসূল্ সুতরাং এটা অস্বীকার করা বা এ ব্যাপারে বিভ্রান্তি ছড়ানো জিহালতী ও গুমরাহী বৈ কিছুই নয়।

উল্লেখ্য যে, আওলাগেদ রসূল না হয়েও আওলাদে রসূল দাবী করা যেরূপ জাহান্নামী হওয়ার কারণ, তদ্রুপ কোন আওলাদে রসূলকে অস্বীকার করা বা অবজ্ঞা করাও জাহান্নামী হওয়ার কারণ। কাজেই বিনা তাহক্বীকে ও বিনা দলীলে কোন কথা বলাও যাবেনা এবং কারো কোন কথা বিশ্বাসও করা যাবে না। এছাড়াও কেউ যদি সত্যিই স্বপ্নে দেখেন যে, আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সু-র্সবাদ দিয়েছেন যে, তিনি “আওলাদে রসূল বা ‘হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বংশধর”, তবে অবশ্যই সেটা সত্য। কারণ, হাদীছ শরীফ-এ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ করেছেন, “যে স্বপ্নে আমাকে দেখলো সে সত্যিই দেখলো।” তাই অন্যান্যদের জন্যেও এটা বিশ্বাস করা ফরয/ওয়াজিব। তবে হ্যাঁম কে যদি মিথ্যা বলে থাকে তবে সেজন্যে তাকে জবাবদিহী করতে হবে। কারণ, হাদীছ শরীফ-এ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “যে ব্যক্তি স্বেচ্ছায় আমার নামে মিথ্যা বললো, যে যেন পৃথিবীতে থাকতেই তার স্থান জাহান্নামে নির্ধারণ করে নিন।”

অতএব, কেউ ‘আওলাদে রসূল’ বলে নিজেকে প্রকাশ করলে বিনা চুঁ-চেরায় তা মেনে নেয়া উচিত। সে ব্যাপারে কোন দলীল-প্রমাণ তলব করা উচিৎ নয়। এ প্রসঙ্গে একটি ঘটনা উল্লেখ কলে বিষয়টি আরো ভালভাবে বোধগম্য হবে।

সমরকন্দের এক মহিলা যিনি ‘আওলাদে রসূল’ ছিলেন। তিনি একবার অভাব-অনটনের কারণে সে এলাকার কাজী ছাহেবের নিকট গিয়ে বললেন, “হে কাজী ছাহেব! আমি একজন আওলাদে রসূল। আমি অভাবে আছি, তাই আপনার নিকট এসেছি কিছু সাহায্যের জন্য। আপনি আমাকে কিছু সাহায্য করুন। কাজী ছাহেব বললো, “আপনি যে ‘আওলাদে রসূল’ এর কোন প্রমাণ আপনার নিকট আছে কি?” মহিলা বললেন, “সত্যিই আমি ‘আওলাদে রসূল।” কাজী ছাহেব বললো, “না, বিনা দলীলে আমি আপনাকে ‘আওলাদে রসূল’ মেনে নিতে পারিনা। আর আমার পক্ষে আপনাকে সাহায্য করাও সম্ভব নয়।” মহিলা কাঁদতে কাঁদতে সেখান থেকে চলে গেলেন। রাস্তায় সাক্ষাৎ হলো এক বিধর্মীর সাথে। লোকটি মহিলাকে কাঁদতে দেখে জিজ্ঞেস করলো, ‘আপনি কাঁদছেন কেন? মহিলা বললেন, ‘আমি অভাবের কারণে কাজী ছাহেবের নিকট গিয়ে বললাম, আমি আওলাদে রসূল আমাকে কিছু সাহায্য করুন। কাজী ছাহেব আমার নিকট ‘আওলাদে রসূল’ হওয়ার প্রমাণ তলব করল। প্রমাণ না দিতে পারায় সে আমাকে ফিরিয়ে দিল।’ তখন লোকটি বললো, ‘আমি মুহব্বত ও সম্মান করি। আপনার যতদিন ইচ্ছা আপনি এবং আপনার আওলাদগণ আমার এখানেই থাকবেন। আপনার সমস্ত ব্যয়ভার আমিই বহন করব।’

এদিকে সেদিন রাত্রিবেলঅয় কাজী ছাহেব স্বপ্নে দেখে যে, আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অনেকগুলো বালাখানাসহ অপেক্ষায় আছেন। কাজী ছাহেব বললো, ‘বালাখানাগুলো কাদের জন্য।’ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেন, ‘বালাখানাগুলো মুসলমানদের জন্য।’ কাজী ছাহেব বললো, ‘আমিও তো মুসলমান। দয়া করে আমাকে একটি বালাখানা দিন।’ হুযূর পাক ছল।লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেন, ‘তুমি যে মুসলমান তার কোন দলীল-প্রমাণ আছে কি? তুমি যদি বিনা দলীলে আমার ‘আওলাদকে’ মেনে নিতে ও বিশ্বাস করতে না পার তবে আমি তোমাকে বিনা দলীলে কিভাবে ‘মুসলমান’ মেনে নিতে পারি?’

কাজেই কেউ যদি নিজেকে ‘আওলাদে রসূল’ বলে প্রকাশ করে তবে সকলের উচিৎ তা বিনা চুঁ-চেরায় বিশ্বাস করা বা মেনে নেয়া। তবে হ্যাঁ, সে যদি মিথ্যা দাবী করে থাকে তবে তাকে কঠিন আযাব ভোগ করতে হবে। হাদীছ শরীফ-এ ইরশাদ মুবারক হয়েছে, “যে নিজ বংশ পরিবর্তন করলো সে জাহান্নামী।”

উপরোক্ত আলোচনা দ্বারা সুস্পষ্ট ও অকাট্যভাবেই প্রমাণিত হলো যে, “আওলাদে রসূল” সম্পর্কিত কাযযাবুদ্দীনের উক্ত বক্তব্য সম্পূর্ণ মিথ্যা ও দলীলবিহীন।

-মুহম্মদ ইবনে ইছহাক, বাসাবো, ঢাকা।

চাঁদ দেখা ও নতুন চন্দ্রতারিখ নিয়ে প্রাসঙ্গিক আলোচনা-১৮

ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি ও ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা-৪৯

বাতিল ফিরক্বা ওহাবীদের অখ্যাত মুখপত্র আল কাউসারের মিথ্যাচারিতার জবাব-১২ হাদীছ জালিয়াতী, ইবারত কারচুপি ও কিতাব নকল করা ওহাবীদেরই জন্মগত বদ অভ্যাস

‘থার্টিফাস্ট নাইট, ভালেন্টাইন ডে আর পহেলা বৈশাখের’ নামে হুজ্জোতির জন্য ধর্মব্যবসায়ীদের কৌশলগত নিষ্ক্রীয়তা, স্বার্থবাদী মৌসুমী রাজনৈতিক তৎপরতা এবং সংস্কৃতি বিপননকারীদের দূরভিসন্ধিতা ও মধ্যবিত্তের  তত্ত্ব-তালাশহীন প্রবণতা তথা হুজুগে মাতা প্রবৃত্তিই দায়ী

পহেলা বৈশাখ বাংলা সনের প্রথম দিন। দিনটি পালিত হচ্ছে বাঙালীর ঐতিহ্য ধরে রাখার চেতনা হিসেবে। মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ইত্যাদি পরিচয়ের বাইরে আলাদাভাবে এ বাঙালী পরিচয়ের দাবী। কিন্তু পহেলা বৈশাখ উদযাপনকারীরা একদিকে যেমন জানেনা যে, বাংলা সনের ‘সন’ কথাটি আরবী। ‘পহেলা’ শব্দটি ফারসী। আর হালখাতা শব্দতো প্রকাশ্য মুসলমানী।