সম্পাদকীয়

সংখ্যা: ২৯৫তম সংখ্যা | বিভাগ:

প্রশংসা মুবারক খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য; যিনি সকল সার্বভৌম ক্ষমতার মালিক। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নবী আলাইহিমুস সালাম উনাদের নবী, রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি অফুরন্ত দুরূদ শরীফ ও সালাম মুবারক।

ট্রান্সজেন্ডার ইস্যু কি কোনো বিচ্ছিন্ন বা বিক্ষিপ্ত ঘটনা? নাকি জ্যামিতিক হারে বেড়ে যাওয়া বিভিন্ন অনৈসলামিক অনুষঙ্গদেরই একটা ধারাবাহিক কুফল। অনৈসলামিক সংস্কৃতিতে রাষ্ট্রযন্ত্রের উজার পৃষ্ঠপোষকতা ও প্রণোদনার প্রক্রিয়াগত উপজাত। পাশাপাশি ইসলাম ও মুসলমান বিদ্বেষী বিশ্ব মোড়লদের মিশন। মোসাদ, র, সি.আই. এর সম্মিলিত ষড়যন্ত্রের অপ প্রয়াস।

বাংলাদেশে গণতন্ত্র নেই বলে তথাকথিত বিশ্বমোড়লদের হাহাকার। বলাবাহুল্য গণতন্ত্রের চেতনার বিকাশেই এল.জি.বি.টি কিউ আন্দোলনের কুপ্রেরণা।

আমার ভোট আমি দেব, যাকে খুশি তাকে দেব; এই খেয়াল খুশীর গতিপথ আর ট্রান্সজেন্ডারের কু-মন্ত্রনার পরিক্রমা- বরাবর সমন্তরাল ও সমার্থক। কিন্তু এল.জি.বি.টি.কিউ তথা ট্রান্সজেন্ডার বিরোধী আন্দোলনকারীদের এমনকী তথাকথিত ইসলামী আন্দোলনকারীদেরও কথিত গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে কথা বলতে দেখা যায় না। অথচ এই গণতন্ত্রই যে এসব অসভ্য, কুৎসিত মনোবৃত্তির মা- তা অনুধাবনে তাদের নিরেট অক্ষমতা ও মূর্খতা।

আবারো বলতে হয় আজকের ট্রান্সজেন্ডার ইস্যূর ভিতটা তৈরী হয়েছে ইসলাম বিদ্বেষীদের বহুদিনের বহুমাত্রিক ষড়যন্ত্রের পরিক্রমায়। আর তথাকথিত ইসলামী আন্দোলনকারীদের বহুবিধ নিস্ক্রিয়তায়, নিবুর্দ্ধিতায়,  নফসের জ্ঞানহীনতায় ও নফসের চর্চায়। ট্রান্সজেন্ডারদের স্বার্থরক্ষায়, অবাধ চর্চায়, স্বাধীনতায় কুখ্যাত প্রথম আলো, সমমনা কুখ্যাত সুশীল, সমর্থক এনজিও এমনকী সংশ্লিষ্ট সরকারী কর্মকর্তারাও, ২০১৪ সাল থেকে বিভিন্ন সেমিনার, প্রোগ্রাম ইত্যাদি করে আসছে। কিন্তু গেলো ১০ বৎসরেও সেগুলোর বিরুদ্ধে শক্ত প্রতিবাদ ও জবাব দিয়ে তথাকথিত ইসলামী আন্দোলনকারীরা কোনো টু শব্দ করেনি। যে নিষ্ক্রিয়তায় শিক্ষামন্ত্রনালয়ে ঘাপটি মেরে থাকা মোসাদ, র, সি.আই.এর এজেন্ট যখন ৭ম শ্রেণীর প্রাঠ্যপুস্তকে ট্রান্সজেন্ডার কনসেপ্ট ঢোকালো তখন তারা খানিকটা নাড়া দিলো। তাতে সরকারের কর্তা ব্যক্তিদের কতটুকুই বা হুশ হলো? ৯৮ ভাগ জনগোষ্ঠী মুসলমানের সরকার সংশ্লিষ্ট শিক্ষামন্ত্রনালয় কী করে এখনও জড়তায় আচ্ছন্ন থাকতে পারলো? রাষ্ট্রদ্বীন ইসলাম বর্ণিত সংবিধানে শপথ নেয়া, সরকার কীভাবে টালবাহানার পথে চলতে পারলো? সরকার যদি ৯৮ ভাগ মুসলমানের দ্বীনী অনুভূতি উপলব্ধি করতে না পারে তাহলে ২৫ কোটি মুসলমানের নিরেট ঘৃণার লক্ষ্যস্থলে পরিণত হবে। রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যর্থ হবে।

প্রসঙ্গত নাস্তিকদের কু চেতনা আর ট্রান্সজেন্ডারবাদীদের কুৎসিত কামনার মধ্যে কোনই পার্থক্য নেই। কাজেই মনের দুষ্ট খেয়ালকে পৃষ্ঠপোষকতা করা কোনো সরকারের কাজ হতে পারে না।

পাশাপাশি মনের স্বাধীনতা, মন চাচ্ছে তাই করব, মন চাচ্ছে না তাই করব না  এই স্বেচ্ছাচারিতার যারা বিস্তার ঘটাচ্ছে- সেই কুখ্যাত জাফর ইকবাল গংদের বিরুদ্ধেও সরকার নির্লিপ্ত থাকতে পারে না। কুখ্যাত জাফর গং অনেক আগ থেকে তাদের অপসাহিত্যের দ্বারা কোমলমতি শিশুদের ‘আমার জীবন-আমার মন। আমার মন যখন যা চায়- তাই করব’ এই স্বৈরাচারী মনোবৃত্তি তৈরী করে দিয়েছে। আর যে পরিক্রমায় তাদের দোসররা পাঠ্যপুস্তকে ট্রান্সজেন্ডার কনসেপ্ট প্রমোট করেছে। নাউযুবিল্লাহ।

তবে কুখ্যাত জাফর গংদের চেয়েও এক্ষেত্রে আসল ও বড় অপরাধী হলো জামাতী খারেজী, ওহাবী সালাফী, ধর্মব্যবসায়ীরা। কারণ তাদের আলোচনায় ওয়াজে মূলত: মনের বিরোধীতার বিষয়ে কিছু থাকে না মন বা নফসের খারাপ দিক ও প্রবনতার পরিচয় থাকে না। নফসের বিরুদ্ধে জিহাদের কথা থাকে না। অথচ তাবুকের জিহাদের পর নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আমরা এখন ছোট জিহাদ (তলোয়ারের জিহাদ) থেকে বড় জিহাদের (নফসের জিহাদের) দিকে প্রত্যাবর্তন করছি। সুবহানাল্লাহ।

মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, সে-ই সফলকাম হয়েছে, যে নিজের নফসকে পবিত্র করেছে। আর সে-ই ব্যর্থ হয়েছে, যে নিজের নফসকে কলুষিত করেছে।

বলাবাহুল্য এই নফসের প্রকার ভেদ কী, নফসের ধোকা কত শত? নফসের পরিশুদ্ধতা তথা তাযকিয়ায়ে নফস ইত্যাদির ইলম চর্চা আজ কথিত ইসলামী বক্তাদের মধ্যে নেই। যে কারণে তার তাছির সমাজ জীবনে, শিক্ষা জীবনে নেই। ফলত এই কলুষিত মনোবৃত্তির স্রোতা! এই কুৎসিত প্রবাহ থেকে বাঁচতে অনিবার্য তাযকিয়ায়ে নফসের পরিমন্ডলে প্রবেশ করা। নফসের বিরোধীতায় মশগুল হওয়া। মনের উপর নিয়ন্ত্রণ আনা। মনের গতি প্রকৃতি নির্ণয় করতে জানা। মনকে পবিত্র করা তথা নফসকে ইসলাহ করা। পরিমার্জন করা। সে প্রক্রিয়ায় চলা। নফসের পথ প্রদর্শকের কাছে সমর্পিত হওয়া অর্থাৎ হক্কানী রব্বানী ওলী আল্লাহর হাতে বাইয়াত হওয়া।  নফসের পরিশুদ্ধতা লাভ করা। তথা ইসলাহ প্রাপ্ত হওয়া।

ছহিবে সাইয়্যিদি সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ, রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ মুর্শির্দ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার নেক ছোহবত মুবারক-এ কেবলমাত্র নফসের পরিশুদ্ধি লাভ করা সম্ভব। খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদেরকে তা নছীব করুন। (আমীন)

সম্পাদকীয়

সম্পাদকীয়

সম্পাদকীয়

সম্পাদকীয়

সম্পাদকীয়