মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ, মহাসম্মানিত ইজমা শরীফ এবং মহাসম্মানিত ক্বিয়াস শরীফ উনাদের আলোকে- মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক যারা ভাঙবে, ভাঙ্গার কাজে সাহায্য-সহযোগিতা করবে বা সমর্থন করবে তাদের প্রত্যেকের শরঈ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড ও তৎসংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া- (পর্ব-৩৩)

সংখ্যা: ২৯৭তম সংখ্যা | বিভাগ:

(৩৬তম ফতওয়া হিসেবে)

“মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ, মহাসম্মানিত ইজমা শরীফ এবং মহাসম্মানিত ক্বিয়াস শরীফ উনাদের আলোকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক যারা ভাঙবে, ভাঙ্গার কাজে সাহায্য-সহযোগিতা করবে বা সমর্থন করবে তাদের প্রত্যেকের শরঈ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড ও তৎসংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া” পেশ করতে পারায় মহান আল্লাহ পাক উনার, উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব মাহবূব, নূরে মুজাসসাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র খেদমত মুবারক-এ বেশুমার শুকরিয়া আদায় করছি। সুবহানাল্লাহ!

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক সংশ্লিষ্ট বিষয়ে কতিপয় সুওয়াল-জাওয়াব

(পূর্বপ্রকাশিতের পর)

সুওয়াল-৬

মসজিদ কমিটি, মুতাওয়াল্লী, মসজিদের খতীব ছাহেব ও মসজিদের ইমাম ছাহেব কি মসজিদ ভাঙ্গার অনুমতি দিতে পারে?

জাওয়াব: মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক ভাঙ্গার অনুমতি দেয়ার অধিকার মাখলূক্বাতের কারো নেই। কারণ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক হচ্ছেন যিনি খ্বালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ঘর মুবারক। এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ঘর মুবারক উনার মালিক হচ্ছেন স্বয়ং মহান আল্লাহ পাক তিনি নিজেই। এই প্রসঙ্গে যিনি খ্বালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,

وَاَنَّ الْمَسٰجِدَ لِلّٰهِ

অর্থ: “আর নিশ্চয়ই সমস্ত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারকসমূহ মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য। অর্থাৎ সমস্ত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারকসমূহ হচ্ছেন মহান আল্লাহ পাক উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ঘর মুবারক।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা জিন শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ১৮)

আর মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছেন,

عَنْ حَضْرَتْ اَبِـى الدَّرْدَاءِ رَضِىَ اللهُ تَـعَالـٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَلْمَسَاجِدُ بُـيُـوْتُ اللهِ

অর্থ: “হযরত আবূ দারদা রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারকসমূহ হচ্ছেন মহান আল্লাহ পাক উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ঘর মুবারক।” সুবহানাল্লাহ! (শু‘আবুল ঈমান শরীফ ৪/৩৮০, জামিউল আহাদীছ লিস সুয়ূত্বী ২২/১৫৪, কানজুল উম্মাল ৭/৫৭৯ ইত্যাদি)

‘শারহু যাদিল মুস্তাক্বনি’ কিতাবে বর্ণিত রয়েছেন,

اَلشَّخْصُ اِذَا اَوْقَفَ مَسْجِدًا خَرَجَ مِنْ مِلْكِهٖ حَتّٰـى صَاحِبُ الْاَرْضِ لَا يَسْتَطِيْعُ اَنْ يَّــتَصَرَّفَ فِـيْهِ لِاَنَّهٗ خَرَجَ مِنْ مِلْكِـيَّـتِهٖ لِلّٰهِ{وَاَنَّ الْمَسَاجِدَ لِلّٰهِ} فَالْـمَسْجِدُ اِذَا اَوْقَفَ خَرَجَ عَنْ مِلْكِـيَّةِ صَاحِبِهٖ

অর্থ: “কোনো ব্যক্তি যখন কোনো মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক ওয়াক্বফ করে, তখন উক্ত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক তার মালিকানা থেকে বের হয়ে যায়। এমনকি যে ব্যক্তি জায়গা দান করেছে, সে কোনো প্রকার হস্তক্ষেপ করারও ক্ষমতা রাখে না। কেননা উক্ত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক তার মালিকানা থেকে বের হয়ে মহান আল্লাহ পাক উনার মালিকানায় চলে গেছেন। (আর মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,) নিশ্চয়ই সমস্ত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারকসমূহ মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য। অর্থাৎ সমস্ত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারকসমূহ উনাদের মালিক হচ্ছেন স্বয়ং যিনি খ্বালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি। সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা জিন শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ১৮) সুতরাং যখন কেউ কোনো মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক ওয়াক্বফ করে, তখন তা তার মালিকানা থেকে বের হয়ে যায়।”

কাজেই মহান আল্লাহ পাক উনার মালিকানাধীন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ঘর মুবারক- মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক। এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ঘর মুবারক কি করে জিন-ইনসানের পক্ষে ভাঙ্গা সম্ভব হতে পারে এবং কিভাবে তা ভাঙ্গার অনুমতি দিতে পারে? এসবই কাট্টা কুফরীর অন্তভুর্ক্ত এবং ঈমান-আমল বরবাদ হওয়ার ও জাহান্নামী হওয়ার কারণ। না‘ঊযুবিল্লাহ!

প্রকৃতপক্ষে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারকসমূহ উনাদের কমিটি, মুতাওয়াল্লী, খতীব ছাহেব ও ইমাম ছাহেব উনারা কেউই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারকসমূহ উনাদের মালিক নন। উনারা কেবল মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারকসমূহ সুষ্ঠভাবে ও শরীয়ত সম্মতভাবে পরিচালনাকারী মাত্র এবং উনাদেরকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারকসমূহ পরিচালনা বা রক্ষণাবেক্ষণের জন্য জিম্মাদার বানানো হয়েছে। উনাদের এই জিম্মাদারী হচ্ছে মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে আমানত স্বরূপ। এই আমানত পালনে ত্রুটি করলে মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট অবশ্যই জবাবের সম্মুখীন হতে হবে এবং কঠিন পরিণতি ভোগ করতে হবে।

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছেন- নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-

اَلَا كُلُّكُمْ رَاعٍ وَكُلُّكُمْ مَسْئُولٌ عَنْ رَعِـيَّـتِهِ

অর্থ: “সাবধান! তোমরা প্রত্যেকেই রক্ষক এবং তোমাদের প্রত্যেকেই তার রক্ষিত বা দায়িত্বাধীন বিষয় সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে।” (বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ, আবূ দাঊদ শরীফ, তিরমিযী শরীফ, মিশকাত শরীফ ইত্যাদি)

কাজেই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারকসমূহ কিভাবে টিকে থাকবে, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারকসমূহ উনাদের হুরমত বা সম্মান ও পবিত্রতা কিভাবে বজায় থাকবে সেই জিম্মাদারী পালন করাই হচ্ছে উক্ত ব্যক্তিবর্গ উনাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য।

অতএব উল্লেখিত ব্যক্তিবর্গ যেহেতু মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারকসমূহ উনাদের মালিক নন, তাই উনাদের কারোই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারকসমূহ ভাঙ্গার অনুমতি দেয়ার কোনো অধিকার নেই বা কেউই অধিকারও রাখেন না। কারণ প্রত্যেকেই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ উনার খাদিমের অন্তভুর্ক্ত।

এই জন্য এখনও মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কা’বা শরীফ এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদে নববী শরীফ উনাদের পরিচালনা ও তদারকীতে নিয়োজিত যারা রয়েছে তারাও খাদিম পরিচয় দিয়ে থাকে। যেমন তারা বলে থাকে ও লিখে থাকে, খাদিমুল হারামাইনিশ শারীফাইন। তারা কেউই কিন্তু মালিকানা দাবী করে না।

কাজেই বান্দা কেবলমাত্র মহান আল্লাহ পাক উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ঘর মুবারক- মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক উনার খাদিম হতে পারে। কিন্তু মালিক হতে পারে না বা দাবিও করতে পারে না। বরং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ উনার মালিক হচ্ছেন স্বয়ং যিনি খ্বালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি।

অতএব মহান আল্লাহ পাক উনার মালিকানাধীন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ঘর মুবারক অর্থাৎ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক ভাঙ্গার অনুমতি কোনো ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গ অর্থাৎ রাজা-বাদশাহ, আমীর-ওমরাহ্, রাষ্ট্রপতি বা প্রধানমন্ত্রী কেউই দিতে পারে না বা দেয়ার অধিকারও রাখে না।

কাজেই যারা মহান আল্লাহ পাক উনার মালিকানাধীন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ঘর মুবারক অর্থাৎ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক ভাঙ্গার অনুমতি দিবে বা দেওয়ার জন্য বলবে এবং যারা সাহায্য-সহযোগীতা বা সমর্থন করবে তারা প্রত্যেকেই কাট্টা কুফরী করবে এবং ঈমান থেকে খারিজ হয়ে যাবে। কেননা যিনি খ্বালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-

وَمَنْ اَظْلَمُ مِـمَّنْ مَّنَعَ مَسٰجِدَ اللهِ اَنْ يُّـذْكَرَ فِـيْـهَا اسْـمُهٗ وَسَعٰى فِـىْ خَرَابِـهَا اُولٰٓئِكَ مَا كَانَ لَـهُمْ اَنْ يَّدْخُلُوْهَا اِلَّا خَآئِـفِيْـنَ لَـهُمْ فِـى الدُّنْـيَا خِزْىٌ وَّلَـهُمْ فِـى الْاٰخِرَةِ عَذَابٌ عَظِـيْمٌ

অর্থ: “ওই ব্যক্তির চেয়ে বড় যালিম আর কে? যে ব্যক্তি মহান আল্লাহ পাক উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারকসমূহে উনার যিকির মুবারক করতে, উনার সম্মানিত নাম মুবারক উচ্চারণ করতে বাধা দেয় এবং সেগুলোকে বিরান করতে চেষ্টা করে। (অর্থাৎ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক ভেঙ্গে ফেলে বা বন্ধ করে রাখে, হক্ব আদায় করে না তা’যীম-তাকরীম করে না) তাদের জন্য ভীত-সন্ত্রস্ত অবস্থায় অর্থাৎ খালিছ তওবা-ইস্তিগফার করা ব্যতীত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারকসমূহে প্রবেশ করা জায়িয নেই। তাদের জন্য রয়েছে ইহকালে লাঞ্ছনা এবং পরকালে কঠিন শাস্তি।” (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা বাক্বারা শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ১১৪)

এই সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ উনার ব্যাখ্যায় ‘তাফসীরে জালালাইন শরীফ ও তাফসীরে মাযহারী শরীফ’ উনাদের মধ্যে উল্লেখ রয়েছেন,

لَا اَحَدَ اَظْـلَمُ مِـمَّنْ مَّنَعَ مَسٰجِدَ اللهِ اَنْ يُّذْكَرَ فِـيْـهَا اسْـمُهٗ

অর্থ: “ওই ব্যক্তিই সবচেয়ে বড় যালিম, যে ব্যক্তি মহান আল্লাহ পাক উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারকসমূহে উনার যিকির মুবারক করতে, উনার সম্মানিত নাম মুবারক স্মরণ করতে বাধা দেয়।” (অর্থাৎ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ বিরাণ করে বন্ধ করে রাখে, হক্ব আদায় করে না তা’যীম তাকরীম করে না তারাই সবচেয়ে বড় যালিম)।” (তাফসীরে জালালাইন ১/২৪, তাফসীরে মাযহারী ১/১১৬)

‘তাফসীরে সমরকন্দী শরীফ, তাফসীরে খাযিন শরীফ ও তাফসীরে বাগবী শরীফ’ উনাদের মধ্যে وَمَنْ اَظْـلَمُ “ওই ব্যক্তির চেয়ে বড় যালিম আর কে?” এই অংশের ব্যাখ্যায় উল্লেখ রয়েছেন, وَمَنْ اَكْفَرُ “ওই ব্যক্তির চেয়ে বড় কাফির আর কে? অর্থাৎ ওই ব্যক্তিই সবচেয়ে বড় কাট্টা কাফির, যে ব্যক্তি মহান আল্লাহ পাক উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারকসমূহে উনার যিকির মুবারক করতে, উনার সম্মানিত নাম মুবারক স্মরণ করতে বাধা দেয় এবং সেগুলোকে উজাড় বা বিরাণ করতে চেষ্টা করে।” (অর্থাৎ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক বন্ধ করে রাখে, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক ভাঙ্গে বা ভাঙ্গার কোশেশ করে অর্থাৎ হক্ব আদায় করে না, তা’যীম-তাকরীমের সাথে সংরক্ষণ করে না।) না‘ঊযুবিল্লাহ! (তাফসীরে সমরকন্দী শরীফ ১/৮৬, তাফসীরে খাযিন শরীফ ১/৭২, তাফসীরে বাগবী শরীফ ১/১৫৭ ইত্যাদি)

সুওয়াল-৭

অনেকে হাদীছ শরীফ উনার বরাত দিয়ে বলে- মহান আল্লাহ পাক তিনি সমস্ত যমীনকে সিজদার স্থান বানিয়ে দিয়েছেন। তবে কি সারা পৃথিবীর কিছুই ভাঙ্গা যাবে না?

জাওয়াব: অতীতের হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের উম্মতের ইবাদত ক্ববূল হওয়ার জন্য নির্ধারিত ইবাদতখানায় ইবাদত করা শর্ত ছিলো। অর্থাৎ ইবাদতখানা ব্যতীত ইবাদত করলে তা ক্ববূল করা হতো না। কিন্তু নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানার্থে উনার উম্মতের জন্য মহান আল্লাহ পাক তিনি সারা পৃথিবী, সমস্ত কায়িনাতকে পবিত্র এবং নামাযের স্থান নির্ধারণ করে দিয়েছেন। উনারা বাড়ি-ঘর, রাস্তা-ঘাট, হাট-বাজার, অফিস-আদালত, নদী, নালা, সমুদ্র ইত্যাদি যেখানেই নামায পড়–ন না কেন তা ক্ববূলযোগ্য হবেন। সুবহানাল্লাহ! যেমন- মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছেন,

عَنْ حَضْرَتْ اَبِـىْ هُرَيْـرَةَ رَضِىَ اللهُ تَـعَالـٰى عَنْهُ اَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ فُضِّلْتُ عَلَى الْاَنْۢبِيَاءِ بِسِتٍّ اُعْطِيْتُ جَوَامِعَ الْكَلِمِ وَنُصِرْتُ بِالرُّعْبِ وَاُحِلَّتْ لِـىَ الْغَنَائِمُ وَجُعِلَتْ لِـىَ الْاَرْضُ مَسْجِدًا وَّطَهُوْرًا وَاُرْسِلْتُ اِلَـى الْـخَلْقِ كَافَّةً وَخُتِمَ بِـىَ النَّبِيُّـوْنَ

অর্থ: “হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লারস্নাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, অন্যান্য হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের উপর আমাকে বিশেষ করে ৬টি বিশেষ খুছূছিয়াত বা বৈশিষ্ট্য মুবারক হাদিয়া মুবারক করা হয়েছে। যথা: (১) আমাকে সমস্ত ইলিম মুবারক হাদিয়া মুবারক করা হয়েছে, (২) আমাকে সম্মানিত রো’ব মুবারক হাদিয়া মুবারক করা হয়েছে, (৩) আমার জন্য গণীমতের মালকে হালাল করা হয়েছে, (৪) আমার জন্য, আমার সম্মানার্থে সারা পৃথবী, সমস্ত কায়িনাতকে সিজদার স্থান ও পবিত্র করা হয়েছে, (৫) আমি সমস্ত সৃষ্টির জন্য মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হিসেবে প্রেরিত হয়েছি এবং (৬) আমার দ্বারা হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের আগমন ধারা বন্ধ করা হয়েছে অর্থাৎ আমার পরে নতুন করে কোনো নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম আগমন করবেন না।” সুবহানাল্লাহ! (মুসলিম শরীফ, মেশকাত শরীফ)

এটা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার একখানা বিশেষ খুছূছিয়াত বা বৈশিষ্ট্য মুবারক যে, উনার সম্মানার্থে উনার উম্মতের জন্য সারা পৃথিবী, সমস্ত কায়িনাতকে সিজদার স্থান অর্থাৎ নামাযের স্থান বানানো হয়েছে ও পবিত্র করা হয়েছে। সুবহানাল্লাহ! তবে পূর্ববতীর্ উম্মতের ইবাদতখানার ন্যায় আখিরী উম্মতের ইবাদতের জন্য বিশেষ করে নামায আদায়ের জন্য যে স্থান নির্ধারণ করা হয়ে থাকে অর্থাৎ ওয়াকফ করা হয় সেটাই শরীয়তে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক নামে অভিহিত। এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক নির্মাণের জন্য এবং তা হিফাজতের জন্য, ইয্যত-হুরমত রক্ষার জন্য মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের মধ্যে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আদেশ-নির্দেশ মুবারক করা হয়েছে। যেমন- মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছেন,

عَنْ حَضْرَتْ اَنَسٍ رَضِىَ اللهُ تَـعَالـٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اِبْـنُوا الْمَسَاجِدَ

অর্থ: “হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, তোমরা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারকসমূহ নির্মাণ করো। অর্থাৎ ভাঙ্গার তো প্রশ্নই আসে না; বরং আরো বেশী মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ নির্মাণ করতে হবে।” সুবহানাল্লাহ! (মুছান্নাফে আবী শায়বাহ্ ১/২৭৪, আস সুনানুল কুবরাহ লিল বাইহাক্বী ২/৬১৫)

পরবর্তী সংখ্যার অপেক্ষায় থাকুন

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ, মহাসম্মানিত ইজমা শরীফ এবং মহাসম্মানিত ক্বিয়াস শরীফ উনাদের আলোকে- সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦তামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মানহানীকারীদের একমাত্র শরঈ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড এবং তৎসংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে আখাছ্ছুল খাছ সম্মানিত

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ, মহাসম্মানিত ইজমা শরীফ এবং মহাসম্মানিত ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে সম্মানিত ও পবিত্র ইসলামী মাস ও বিশেষ বিশেষ রাত ও দিন মুবারক উনাদের সম্মানিত আমল মুবারকসমূহ উনাদের গুরুত্ব, ফযীলত এবং বেদ্বীন-বদদ্বীনদের দিবসসমূহ পালন করা হারাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৫৯তম পর্ব)

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ, মহাসম্মানিত ইজমা শরীফ ও মহাসম্মানিত ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে সম্মানিত ও পবিত্র মাযহাব চতুষ্ঠয় উনাদের মধ্যে যে কোন একটি সম্মানিত ও পবিত্র মাযহাব মানা ও অনুসরণ করা ফরয ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-৭৭

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ, মহাসম্মানিত ইজমা’ শরীফ এবং মহাসম্মানিত ক্বিয়াস শরীফ উনাদের আলোকে-মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নতী লিবাস বা পোশাক পরিধান করা প্রত্যেক ঈমানদার পুরুষ ও মহিলা উনাদের জন্য ফরয ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (পর্ব-১০)

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ, মহাসম্মানিত ইজমা শরীফ এবং মহাসম্মানিত ক্বিয়াস শরীফ উনাদের আলোকে- সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦তামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মানহানীকারীদের একমাত্র শরঈ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড এবং তৎসংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে আখাছ্ছুল খাছ সম্মানিত বিশেষ ফতওয়া মুবারক (৩১তম পর্ব)