আকমালুল মাওজূদাত, আজমালুল মাখলূক্বাত, আল্মুওয়াইইয়াদু বিওয়াদ্বিহিল বাইয়্যিনাত, হাবীবুল্লাহ, নূরে মুজাস্সাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর বৈশিষ্ট্য থেকেই সমস্ত আম্বিয়া আলাইহিমুস্ সালাম ও আওলিয়ায়ে কিরামগণ বৈশিষ্ট্যের অধিকারী হয়েছেন

সংখ্যা: ১৮৫তম সংখ্যা | বিভাগ:

انك لعلى خلق عظيم

অর্থ: “নিশ্চয়ই আপনি সুমহান চরিত্রের অধিকারী।” (সূরা ক্বলম-৪)

হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম স্বয়ং ইরশাদ করেন,

بعثت لاتمم حسن الاخلاق

অর্থ: “উত্তম চরিত্রের পরিপূর্ণতা বিধানের জন্য আমি প্রেরিত হয়েছি।” (কানযুল উম্মাল)

অন্য এক বর্ণনায় আছে,

بعثت لاتمم مكارم الاخلاق

অর্থ: “উত্তম চারিত্রিক গুণাবলীকে পূর্ণতা দেয়ার উদ্দেশ্যে আমাকে প্রেরণ করা হয়েছে।” (কানযুল উম্মাল)

 আয়াতে কারীমা ও হাদীছ শরীফ-এর বর্ণনা দ্বারা প্রতীয়মান হয়, আখিরী নবী হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর পবিত্র সত্তায় সকল সৌন্দর্য ও উত্তম আখলাক্ব সন্নিবেশিত ছিলো। আর কেনই বা এরকম হবে না? তাঁর শিক্ষক যে ছিলেন স্বয়ং আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন, যিনি সমস্ত ইলমের উৎস।

মূলতঃ হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস্ সাল্লামগণ নবী ও রসূল হিসেবে-ই বিলাদত শরীফ লাভ করেন। সেজন্য কিতাবে উল্লেখ করা হয়েছে-

النبى نبيا ولو كان صبيا.

নবী ও রসূলগণ বাল্যকালেও নবী রসূলই হয়ে থাকেন। উনাদের বাল্যকালীন কোন অবস্থাও নুবুওওয়াত ও রিসালতের পরিপন্থী হয় না। (আল ইতকান)

আমাদের প্রাণের আঁক্বা, আঁক্বায়ে নামদার, সাইয়্যিদুনা হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদত দিবস-এর সময় দু’খানা হাত ও মাথা মুবারক আকাশের দিকে উত্তোলন করে রেখেছিলেন। এটি তো একটি প্রসিদ্ধ ঘটনা। হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, “জাহিলী যুগের আচার অনুষ্ঠানের প্রতি জীবনে আমি কখনো আকর্ষণ বোধ করিনি। আল্লাহ পাক আমাকে সর্বাবস্থায়ই হিফাযত করেছেন। প্রথম জীবন থেকেই আমার অন্তরে মূর্তি পূজা এবং (অশ্লীল) কবিতা আবৃত্তির প্রতি ঘৃণা সৃষ্টি করে দেয়া হয়েছিল।”

বাল্যবেলা থেকে আম্বিয়া আলাইহিমুস্ সালামগণকে আখলাক্বে হাসানার বৈশিষ্ট্য প্রদান করা হয়েছে। রিসালত ও নুবুওওয়াত-এর কার্যাবলী দিয়ে তাঁদেরকে সুদৃঢ় করে দেয়া হয়েছে এবং অনবরত আল্লাহ পাক-এর তরফ থেকে পবিত্র সুবাস এসে তাঁদেরকে সুবাসিত করেছে। এমনকি চূড়ান্ত পর্যায়ের উন্নত মর্যাদা এবং কামালিয়াতের শেষ স্তর লাভ করে তাঁরা কৃতকার্য হয়েছেন। এসবই তাঁরা লাভ করেছিলেন মেহনত, রিয়াযত ও কঠোর সাধনা ব্যতিরেকে। যেমন আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন, “যখন আক্বল পূর্ণতায় পৌঁছে দৃঢ়তা অর্জন করলো, তখন আমি ইলম ও হিকমত দান করলাম।”

হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস্ সালামগণের উপরোক্ত গুণাবলীর অংশ বিশেষ কোনো কোনো ওলীআল্লাহগণেরও হাছিল হয়ে থাকে। তবে তাঁদের সমস্ত গুণাবলী অর্জন করা ওলীআল্লাহগণের পক্ষে সম্ভব নয়। আর ইসমত (গুনাহ থেকে নিরাপত্তা) তো কেবল নবী-রসূলগণের জন্যই খাছ। তবে ওলীআল্লাহগণ মহান আল্লাহ পাক-এর তরফ থেকে মাহফুয হয়ে থাকেন।

বিভিন্ন গুণাবলীতে যাবতীয় আখলাক্ব ও খাছলত, ছিফাতে জামালী ও জালালী ইত্যাদির পরিপ্রেক্ষিতে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সালাম-এর  পবিত্র ব্যক্তিত্ব এত উন্নত, উত্তম, পূর্ণাঙ্গ, সুন্দর, সুদর্শনীয়, উজ্জ্বল ও সুদৃঢ় ছিল যে, তা ছিলো সীমার অতীত, সংখ্যার ঊর্ধ্বে। আম্বিয়া আলাইহিমুস্ সালামগণ ছিলেন চন্দ্রতুল্য আর তিনি ছিলেন সেই চন্দ্রের উপর কিরণ সঞ্চারণকারী সূর্য। তাঁরা সকলেই ছিলেন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নূরে জামালের প্রতিবিম্বের আধার। বস্তুত আল্লাহ পাক এবং তাঁর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর জন্যই সমস্ত সৌন্দর্য।

হযরত ইমাম বুসিরী রহমতুল্লাহি আলাইহি ‘কাছীদায়ে বুরদায়’ কী সুন্দরভাবে তা ফুটিয়ে তুলেছেন- “সমস্ত আম্বিয়া আলাইহিমুস্ সালামগণ যে সকল মু’জিযা সহকারে দুনিয়াতে এসেছেন এসব কিছুই তাঁদের কাছে এসেছে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নূরে জামাল থেকে। বস্তুতঃ তাঁরা সকলেই ছিলেন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নূরে জামালের প্রতিবিম্বস্বরূপ। নিঃসন্দেহে তিনিই হলেন ফযীলতের সূর্য। আর অন্যান্য নবী আলাইহিমুস্ সালামগণ হলেন নক্ষত্রতুল্য। আর নক্ষত্রের আলোর বহিঃপ্রকাশ তো ঘটে তখনই যখন সূর্য থাকে অনুপস্থিত। হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাগর তুল্য। সাগরের সীমাহীন পানিরাশি থেকে অন্যেরা যেনো অঞ্জলি পেতে কিছু আহরণ করে নিচ্ছেন। অথবা তিনি হলেন মুষলধারার বৃষ্টি যা থেকে কেউ এক চুমুক গ্রহণ করে কণ্ঠনালী সিক্ত করে নিচ্ছে।”

মুহম্মদ ইরফানুল হক।

মহান আল্লাহ পাক তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে নবী-রসূল হিসেবে, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হিসেবে, উনার মাহবূব, মুরাদ ও সমগ্র কায়িনাতের মালিক হিসেবে সৃষ্টি মুবারক করেছেন

নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আব্বা-আম্মা আলাইহিমাস সালাম উনারাই হচ্ছেন সম্মানিত ঈমান। উনাদের মুহব্বত মুবারক ব্যতীত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কালিমা শরীফ পূর্ণ হয় না

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের প্রতি সমস্ত সৃষ্টির হক

মওযূ ও ছহীহ হাদীছ শরীফ নির্ণয়ের প্রকৃত মানদণ্ড

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আবনাউ রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত বানাতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র গোলামী মুবারক করা সমস্ত সৃষ্টির জন্য ফরয