কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে প্রাণীর মুর্তি তৈরী করা ও ছবি আঁকা, তোলা, তোলানো, রাখা, রাখানো, দেখা, দেখানো হারাম নাজায়িয হওয়ার অকাট্য প্রমাণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-৮

সংখ্যা: ১৭৬তম সংখ্যা | বিভাগ:

প্রকাশিত ফতওয়াসমূহ

সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীনের জন্যে এবং অসংখ্য দুরূদ ও সালাম আল্লাহ্ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর প্রতি। আল্লাহ্ পাক-এর অশেষ রহ্মতে “গবেষণা কেন্দ্র মুহম্মদিয়া জামিয়া শরীফ”-এর ফতওয়া বিভাগের তরফ থেকে বহুল প্রচারিত, হক্বের অতন্দ্র প্রহরী, বাতিলের আতঙ্ক ও আহ্লে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের আক্বীদায় বিশ্বাসী এবং হানাফী মাযহাব-এর অনুসরণে প্রকাশিত একমাত্র দলীল ভিত্তিক যামানার তাজদীদী মুখপত্র “মাসিক আল বাইয়্যিনাত” পত্রিকায় যথাক্রমে ১. টুপির ফতওয়া (২য় সংখ্যা) ২. অঙ্গুলী চুম্বনের বিধান (৩য় সংখ্যা) ৩. নিয়ত করে মাজার শরীফ যিয়ারত করা (৪র্থ সংখ্যা) ৪. ছবি ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় হারাম হওয়ার ফতওয়া (৫ম-৭ম সংখ্যা) ৫. জুমুয়ার নামায ফরযে আইন ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ফতওয়া (৮ম-১০ম সংখ্যা) ৬. মহিলাদের মসজিদে গিয়ে জামায়াতে নামায পড়া মাকরূহ্ তাহ্রীমী সম্পর্কে ফতওয়া (১১তম সংখ্যা) ৭. কদমবুছী ও তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১২তম সংখ্যা) ৮. তাহাজ্জুদ নামায জামায়াতে পড়া মাকরূহ্ তাহ্রীমী ও বিদ্য়াতে সাইয়্যিয়াহ্ এবং তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৩তম সংখ্যা) ৯. ফরয নামাযের পর মুনাজাত ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৪-২০তম সংখ্যা) ১০. ইন্জেকশন নেয়া রোযা ভঙ্গের কারণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (২১-২২তম সংখ্যা) ১১. তারাবীহ্-এর নামাযে বা অন্যান্য সময় কুরআন শরীফ খতম করে উজরত বা পারিশ্রমিক গ্রহণ করা জায়িয ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (২৩-২৪তম সংখ্যা) ১২. তারাবীহ্ নামায বিশ রাকায়াত ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (২৫-২৯তম সংখ্যা) ১৩. দাড়ী ও গোঁফের শরয়ী আহ্কাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৩০-৩৪তম সংখ্যা) ১৪. প্রচলিত তাবলীগ জামায়াত ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৩৫-৪৬তম সংখ্যা) ১৫. আযান ও ছানী আযান মসজিদের ভিতরে দেয়ার আহ্কাম এবং তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৪৭-৫০তম সংখ্যা) ১৬. দোয়াল্লীন-যোয়াল্লীন-এর শরয়ী ফায়সালা এবং তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৫১-৫২তম সংখ্যা) ১৭. খাছ সুন্নতী টুপি ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৫৩-৫৯তম সংখ্যা) ১৮. নূরে মুহম্মদী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও তাঁর প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৬০-৮২তম সংখ্যা) ১৯. ইমামাহ্ বা পাগড়ী মুবারকের আহ্কাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কিত ফতওয়া (৮৩-৯৬তম সংখ্যা) ২০. শরীয়তের দৃষ্টিতে আখিরী যোহ্র বা ইহ্তিয়াতুয্ যোহ্রের আহ্কাম এবং তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৯৭-১০০তম সংখ্যা)  ২১. জানাযা নামাযের পর হাত তুলে সম্মিলিতভাবে মুনাজাত করার শরয়ী ফায়সালা ও তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১০১-১১১তম সংখ্যায়) এবং  ২২. হিজাব বা পর্দা ফরযে আইন হওয়ার প্রমাণ ও তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১১২-১৩১তম সংখ্যা) ২৩. খাছ সুন্নতী ক্বমীছ বা কোর্তা এবং তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৪০তম সংখ্যা) ২৪. হানাফী মাযহাব মতে ফজর নামাযে কুনূত বা কুনূতে নাযেলা পাঠ করা নাজায়িয ও নামায ফাসিদ হওয়ার কারণ এবং তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৩২-১৫২তম সংখ্যা) ২৫. ইসলামের দৃষ্টিতে বিশ্বকাপ ফুটবল বা খেলাধুলা’র শরয়ী আহকাম ও তার সংশ্লিষ্ট ফতওয়া (১৫৫তম সংখ্যা) ২৬. হানাফী মাযহাব মতে পুরুষের জন্য লাল রংয়ের পোশাক তথা রুমাল, পাগড়ী, কোর্তা, লুঙ্গি, চাদর ইত্যাদি পরিধান বা ব্যবহার করা হারাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৫৩-১৬০তম সংখ্যা) ২৭.  এবং ১৬১তম সংখ্যা থেকে ইসলামের নামে গণতন্ত্র ও নির্বাচন করা, পদপ্রার্থী হওয়া, ভোট চাওয়া ও দেয়া হারাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া পেশ করার পাশাপাশি ১৬৮তম সংখ্যা থেকে-

২৮তম ফতওয়া হিসেবে

“কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে প্রাণীর মুর্তি তৈরী করা ও ছবি আঁকা, তোলা, তোলানো, রাখা, রাখানো, দেখা, দেখানো হারাম নাজায়িয হওয়ার অকাট্ট প্রমাণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া” পেশ করে আসতে পারায় মহান আল্লাহ পাক-এর দরবারে বেশুমার শুকরিয়া জ্ঞাপন করছি। কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে প্রাণীর মুর্তি তৈরী করা, করানো ও ছবি আঁকা, তোলা, তোলানো, রাখা, রাখানো, দেখা, দেখানো হারাম নাজায়িয হওয়ার অকাট্য প্রমাণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া দেয়ার কারণ সুন্নতের পথিকৃত, হক্বের অতন্দ্র প্রহরী, দ্বীন ইসলামের নির্ভীক সৈনিক, সারা জাহান থেকে কুফরী, শিরিকী ও বিদ্য়াতের মূলোৎপাটনকারী, বাতিলের আতঙ্ক এবং আহ্লে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের আক্বীদায়  বিশ্বাসী একমাত্র দলীলভিত্তিক তাজদীদী মুখপত্র- “মাসিক আল বাইয়্যিনাত” পত্রিকায় এ যাবৎ যত লেখা বা ফতওয়াই প্রকাশ বা পত্রস্থ হয়েছে এবং ইনশাআল্লাহ হবে তার প্রতিটিরই উদ্দেশ্য বা মাকছূদ এক ও অভিন্ন। অর্থাৎ “মাসিক আল বাইয়্যিনাতে” এমন সব লেখাই পত্রস্থ  হয়, যা মানুষের আক্বীদা ও আমলসমূহ পরিশুদ্ধ ও হিফাযতকরণে বিশেষ সহায়ক।  বর্তমানে ইহুদীদের এজেন্ট হিসেবে মুসলমানদের ঈমান আমলের সবচেয়ে বেশী ক্ষতি করছে যারা, তারা হলো- ‘ওহাবী সম্প্রদায়’। ইহুদীদের এজেন্ট ওহাবী মতাবলম্বী উলামায়ে ‘ছূ’রা হারাম টিভি চ্যানেল, পত্র-পত্রিকা, কিতাবাদি ও বক্তব্য বা বিবৃতির মাধ্যমে একের পর এক হারামকে হালাল, হালালকে হারাম, জায়িযকে নাজায়িয, নাজায়িযকে জায়িয বলে প্রচার করছে।  স্মরনীয় যে, ইহুদীদের এজেন্ট, ওহাবী মতাবলম্বী দাজ্জালে কায্যাব তথা উলামায়ে ‘ছূ’রা প্রচার করছে “ছবি তোলার ব্যাপারে ধর্মীয় কোন নিষেধাজ্ঞা নেই” (নাউযুবিল্লাহ)। সম্প্রতি দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে, “নির্বাচন কমিশনার বলেছে, ছবি তোলার বিরুদ্ধে বললে জেল-জরিমানা হবে, নির্বাচন কমিশনার ভোটার আই. ডি কার্ডের জন্য ছবিকে বাধ্যতামূলক করেছে এবং ছবির পক্ষে মসজিদে মসজিদে প্রচারণা চালাবে বলেও মন্তব্য করেছে।  আর উলামায়ে ‘ছূ’রা তার এ বক্তব্যকে সমর্থন করে বক্তব্য দিয়েছে যে, “রাষ্ট্রীয় প্রয়োজনে পুরুষ-মহিলা সকলের জন্যই ছবি তোলা জায়িয।” (নাউযুবিল্লাহ) শুধু তাই নয় তারা নিজেরাও অহরহ ছবি তুলে বা তোলায়। অথচ তাদের উপরোক্ত বক্তব্য সম্পূর্ণ মিথ্যা, চরম বিভ্রান্তিকর ও কুফরীমূলক। তাদের এ বক্তব্যের কারণে তারা নিজেরা যেরূপ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, তদ্রুপ তাদের উক্ত কুফরীমূলক বক্তব্য ও বদ আমলের কারণে সাধারণ মুসলমানগণ ই’তেক্বাদী বা আক্বীদাগত ও আ’মালী বা আমলগত উভয় দিক থেকেই বিরাট ক্ষতির সম্মুক্ষীণ হচ্ছে। কারণ, তাদের উক্ত বক্তব্যের কারণে যারা এ আক্বীদা পোষণ করবে যে, “রাষ্ট্রীয় প্রয়োজনে ছবি তোলা জায়িয” তারা ঈমান হারা হয়ে কাট্টা কাফির ও চির জাহান্নামী হবে। কারণ শরীয়তের দৃষ্টিতে হারাম বা নাজায়িযকে হালাল বা জায়িয বলা কুফরী। কেননা কিতাবে স্পষ্টই উল্লেখ আছে যে,

استحلال المعصية كفر.

 অর্থাৎ, “গুণাহের কাজ বা হারামকে হালাল মনে করা কুফরী।” (শরহে আক্বাঈদে নাসাফী)       অতএব বলার আর অপেক্ষাই রাখেনা যে, উলামায়ে “ছূ”দের উক্ত বক্তব্য সাধারণ মুসলমানদের আক্বীদা বা ঈমানের জন্য বিশেষভাবে হুমকিস্বরূপ।  অনরূপ “ছবি তোলার ব্যাপারে ধর্মীয় কোন নিষেধ নেই বা রাষ্ট্রীয় প্রয়োজনে সকলের জন্য ছবি তোলা জায়িয” উলামায়ে “ছূ”দর এ কুফরীমূলক বক্তব্য সাধারণ মুসলমানদের আমলের ক্ষেত্রেও বিশেষ ক্ষতির কারণ। কেননা যারা তাদের উক্ত বক্তব্যের কারণে ছবি তুলবে (যদিও হারাম জেনেই তুলুক না কেন) তারা আল্লাহ পাক ও তাঁর হাবীব কর্তৃক নিষিদ্ধকৃত কাজে তথা হারাম কাজে মশগুল হবে যা শক্ত আযাব বা কঠিন গুণাহের কারণ। কেননা হাদীছ শরীফে ইরশাদ হয়েছে,

قال حدثنا الاعمش عن مسلم قال كنا مع مسروق فى دار يسار بن نمير فراى فى صفته تماثيل فقال سمعت عبد الله قال سمعت النبى صلى الله عليه وسلم يقول ان اشد الناس عذابا عند الله المصورون.

 অর্থঃ হযরত আ’মাশ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু মুসলিম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, আমি মাসরুক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু এর সঙ্গে ইয়াসার ইবনে নুমাইরের ঘরে ছিলাম, তিনি তাঁর ঘরের মধ্যে প্রাণীর ছবি দেখতে পেলেন, অতঃপর বললেন, আমি হযরত আব্দুল্লাহ্র নিকট শুনেছি, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “নিশ্চয় মানুষের মধ্যে ঐ ব্যক্তিকে আল্লাহ্ পাক কঠিন শাস্তি দেবেন, যে ব্যক্তি প্রাণীর ছবি তোলে বা আঁকে।” (বুখারী শরীফ ২য় জিঃ, পৃঃ৮৮০)  উক্ত হাদীছ শরীফের ব্যাখ্যায় “উমদাতুল ক্বারী শরহে বুখারীতে” উল্লেখ আছে,

وفى التوضيح قال اصحابنا وغير هم صورة الحيوان حرام اشد التحريم وهم من الكبائر.

 অর্থঃ “তাওজীহ্” নামক কিতাবে উল্লেখ আছে যে, হযরত উলামায়ে কিরাম বলেন, জীব জন্তুর ছবি বা প্রতিমূর্তি নির্মাণ করা নিষেধ, বরং কঠোর নিষিদ্ধ কাজ (অর্থাৎ হারাম) এটা কবীরাহ্ গুনাহ্। অতএব, নিঃসন্দেহে বলা যায় যে, উলমায়ে “ছূ”দের উক্ত বক্তব্য ও বদ আমলের কারণে সাধারণ মুসলমানগণ ছবি তুলে প্রকাশ্য হারাম কাজে মশগুল হয়ে কঠিন আযাবের পাত্র হবে যা আমলের ক্ষেত্রে বিশেষভাবে ক্ষতিকর। কাজেই যারা এ ধরণের কুফরী আক্বীদায় বিশ্বাসী ও কুফরী বক্তব্য প্রদানকারী তারা ও হক্ব তালাশী সমঝদার মুসলমানগণ ঈমান ও আমলকে যেন হিফাযত করতে পারে। অর্থাৎ মূর্তি বা ছবিসহ সকল বিষয়ে আহ্লে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের আক্বীদার ন্যায় আক্বীদা পোষণ করতে পারে এবং কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজাম, ইজমা ও ক্বিয়াস মোতাবেক আমল করে আল্লাহ্ পাক-এর রেজামন্দী হাছিল করতে পারে। সে জন্যই “কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে প্রাণীর মুর্তি তৈরী করা ও ছবি আঁকা, তোলা, তোলানো, রাখা, রাখানো, দেখা, দেখানো হারাম- নাজায়িয হওয়ার অকাট্ট প্রমাণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কিত ফতওয়াটি” পুণরায় প্রকাশ করা হলো।

(পূর্ব প্রকাশিতের পর)

চাকরি, ব্যবসা, লেখা-পড়া, পাসপোর্ট, ব্যাংক একাউন্ট, জমি রেজিস্ট্রী ইত্যাদির জন্য ছবি তোলার বিধান

কেউ কেউ বলে থাকে যে, ছবি তোলা হারাম এটা আমরা মানি ও বিশ্বাস করি তাব কথা হলো সরকার অনেক ক্ষেত্রেই আমাদেরকে ছবি তুলতে বাধ্য করে থাকে। যেমন চাকরি, ব্যবসা, লেখা-পড়া, পাসপোর্ট, ড্রাইভিং লাইসেন্স, ব্যাংক একাউন্ট, জমি রেজিস্ট্রী ইত্যাদি অনেক ক্ষেত্রেই আমরা ছবি তুলতে বাধ্য। শরীয়তে এর ফায়ছালা কি?

এর জবাবে বলতে হয় যে, ইসলাম পরিপূর্ণ দ্বীন। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন,

اَلْيَوْمَ اَكْمَلْتُ لَكُمْ دِيْنَكُمْ وَاَتْـمَمْتُ عَلَيْكُمْ نِعْمَتِى وَرَضِيْتُ لَكُمُ اِلاسْلَامَ دِيْنًا.

অর্থঃ “আজ আমি তোমাদের জন্য দ্বীন ইসলামকে পরিপূর্ণ করে দিলাম। তোমাদের উপর আমার নিয়ামত সমাপ্ত করলাম। তোমাদের উপর আমার নিয়ামত সমাপ্ত করলাম। আর ইসলামকেই তোমাদের দ্বীন হিসেবে মনোনীত করে সন্তুষ্ট রইলাম।” (সূরা মায়িদা-৩)

অর্থাৎ দ্বীন ইসলামে সব বিষয়ের ফায়সালাই রয়েছে। তাছাড়া আল্লাহ পাক যে শুধু দ্বীনকে পরিপূর্ণ করেছেন তাই নয়। বরং এর সাথে সাথে দ্বীন ইসলামকে সহজও করে দিয়েছেন। এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ পাক পবিত্র কালামে পাকে ইরশাদ করেন,

وَمَا جَعَلَ عَلَيْكُمْ فِى الدِّيْنِ مِنْ حَرَجٍ

অর্থঃ ‘আল্লাহ পাক তোমাদের জন্য দ্বীনকে কঠিন করেননি।’ (সূরা হজ্জ-৭৮)

অন্যত্র আল্লাহ পাক আরো ইরশাদ করেন,

يُرِيْدُ اللهُ  بِكُمُ الْيُسْرَ وَلَا يُرِيْدُ بِكُمُ الْعُسْرَ

অর্থঃ ‘আল্লাহ পাক তোমাদের জন্য সহজ চান, কঠিন চান না।’ (সূরা বাক্বারা-১৮৫)

অন্যত্র আরো ইরশাদ হয়েছে,

لَاۤ اِكْرَاهَ  فِى الدِّيْنِ

অর্থাৎ “দ্বীনের মধ্যে কোন প্রকার কাঠিন্যতাা নেই।” (সূরা বাক্বারা- ২৫৬)

আর হাদীছ শরীফে উল্লেখ আছে,

ان الدين يسر

অর্থাৎ, ‘দ্বীন বা শরীয়ত হচ্ছে সহজ।’

তাই ইসলাম কোন ক্ষেত্রেই যেমন বাড়াবাড়ি বা জোড় জবরদস্তী করেনি বা করার অনুমতিও দেয়নি তেমনিভাবে কঠিনও করেনি।

বরং সহজ করে দিয়েছে। যেমন- ফরয নামাযের সময় ক্বিয়াম করা বা দাড়ানো হচ্ছে ফরয। এখন কেউ যদি এরূপ হয় যে, সে দাড়াতে সক্ষম নয় তার ব্যাপারে শরীয়তের ফায়ছালা কি? তার ব্যাপারে শরীয়তের ফায়ছালা হলো সে যদি দাড়াতে না পারে তবে সে বসে বসেই নামায আদায় করবে। যেহেতু সে দাড়ানোর ব্যাপারে মাজুর বা অক্ষম।

অনুরূপভাবে হারাম খাওয়া সকলের জন্যই হারাম। কিন্তু কেউ যদি একাধারে তিনদিন না খেয়ে থাকে তার নিকট যদি কোন হালাল খাদ্য মওজুদ না থাকে তবে তার ব্যাপারে শরীয়তের ফায়ছালা কি” তার ব্যাপারে শরীয়তের ফায়ছালা হলো- এমতাবস্থায় হারামটা তার জন্য মুবাহ হয়ে যায় জীবন রক্ষার্থে। এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ পাক বলেন,

فَاتَّقُوا اللهَ   مَا اسْتَطَعْتُمْ

অর্থাৎ, “তোমরা আল্লাহ পাককে ভয় কর তোমাদের সাধ্য ও সামর্থ্য অনুযায়ী। (সূরা তাগাবুন-১৬)

অর্থাৎ সাধ্যের বাইরে শরীয়ত কাউকে কোন আদেশ করেনি।

আল্লাহ পাক আরো ইরশাদ করেন,

لاَ يُكَلِّفُ اللهُ نَفْسًا  اِلاَّ وُسْعَهَا

অর্থাৎ, আল্লাহ পাক কাউকে তার সাধ্যের বাইরে কিছু চাপিয়ে দেন না। (সূরা বাক্বারা-২৮৬)

 আর উছুলের কিতাবে উল্লেখ আছে,

الضرورة تبيح الـمحذورات

অর্থাৎ, জরুরত হারামকে ‘মুবাহ’ করে দেয়। (উছূলে বাযদূবী, উছূলে কারখী)

শরীয়তের পরিভাষায় এরূপ অবস্থাকে ‘মাজুর বা অপরাগতা’ বলা হয়। ফিক্বাহ-এর কিতাবসমুহে এরূপ অসংখ্য মা’জুর এর মাসয়ালা বর্ণিত রয়েছে।

চাকরি-ব্যবসা

 

এখন চাকরি-ব্যবসা একটি জরুরী বিষয়। কারণ বেঁচে থাকতে হলে খেতে হবে। অর্থাৎ প্রত্যেককে বাঁচার জন্য তার জীবন রক্ষা করা হচ্ছে ফরয। আর সে জন্য হালাল রিযিক তালাশ করা বা কামাই করাও ফরয। এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন,

فَاِذَا قُضِيَتِ الصَّلٰوةُ فَانْتَشِرُوْا فِى الْاَرْضِ وَابْتَغُوْا مِنْ فَضْلِ اللهِ .

অর্থাৎ, “নামায শেষ করে তোমরা জমিনে ছড়িয়ে পড় এবং আল্লাহ পাক-এর ফযল তথা হালাল রিযিক অন্বেষণ কর।” (সূরা জুমুয়া-১০)

আর হাদীছ শরীফে ইরশাদ হয়েছে,

عن عبد الله رضى الله تعالى عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم طلب كسب الحلال فريضة بعد الفريضة.

অর্থাৎ, হযরত আব্দুল্লাহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বর্ণনা করেন, রসূলে পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, (পুরুষের জন্য) অন্যান্য ফরযের পর হালাল কামাই করাও ফরয। (বাইহাক্বী ফী শুয়াবিল ঈমান, মিশকাত-২৪২ পৃঃ)

এখন কারো জন্য যদি হালাল কামাই করতে গিয়ে চাকরি-ব্যবসা করতেই হয়। তবে তাকে প্রথমতঃ কোশেশ করতে হবে ছবি ছাড়া চাকরি ও ব্যবসা করার। যদি ছবি ছাড়া চাকরি-ব্যবসার কোন ব্যবস্থা না হয় তবে সেক্ষেত্রে মা’জুর বা অপরাগ হিসেবে চাকরি বা ব্যবসার ক্ষেত্রে যতটুকু প্রয়োজন ঠিক ততটুকুই ছবি তুলতে পারবে। তবে অবশ্যই তাও হারাম জেনেই তুলতে হবে।

পাসপোর্ট

যদি কারো পক্ষে দেশে থেকে জরুরত আন্দাজ হালাল কামাই করা সম্ভব না হয় এবং কেউ এরূপ অসুস্থ হয় যে- দেশে তাকে চিকিৎসা করে ভাল করা সম্ভব নয় বিদেশে নিলে ভাল হবে এক্ষেত্রে মা’জুর হিসেবে ছবিসহ পাসপোর্ট করে বিদেশ যেতে পারবে। এছাড়া ভ্রমণ বা জরুরত ব্যতীত অন্যকোন কারণে ছবিসহ পাসপোর্ট করা জায়িয নেই।

ড্রাইভিং লাইসেন্স

যানবাহন বর্তমানে একটি জরুরী বিষয়। আর ড্রাইভার ব্যতীত যান বাহনের কোন চিন্তাই করা যায় না। তাছাড়া অনেকের জন্য ড্রাইভিং পেশাটাও যেহেতু হালাল কামাইয়ের একটি অন্যতম মাধ্যম তাই এক্ষেত্রে মা’জুর হিসেবে লাইসেন্স এর জন্য ছবি তোলা মুবাহ।

ব্যাংক একাউন্ট

যদি কারে জন্য টাকা-পয়সা, স্বর্ণালঙ্কার, নিজ ঘরে রাখা নিরাপদ মনে না হয়। বরং চুরি-ডাকাতির আশঙ্কা থাকে তবে এক্ষেত্রেও ছবিসহ ব্যাংক একাউন্ট করা মা’জুর হিসেবে মুবাহ হবে।

জমি রেজিস্ট্রী

জমি ক্রয় বিক্রয়ের বিষযটিও ক্ষেত্র বিশেষে জরুরী। কাজেই যদি কারো জন্য জমি ক্রয় করা বিক্রয় করা অপরিহার্য হয়েই পরে তবে সেক্ষেত্রে মা’জুর হিসেবে ছবিসহ জমি ক্রয় বিক্রয় করতে পারবে।

লেখা-পড়া

যেহেতু জরুরত আন্দাজ ইলম অর্জন করা সকলের জন্য ফরয। তার পাশাপাশি হুনর বা দুনিয়াবী জ্ঞান অর্জন করাও জরুরী বিধায় উল্লিখিত ক্ষেত্রে ছবি তোলার ব্যাপারে সকলে মা’জুর। তবে ছবি ছাড়া পড়া শুনা করার যদি কোন সুযোগ থাকে তবে সেক্ষেত্রে ছবিসহ  পড়া-শুনা করা জায়িয হবে না।

মূলতঃ উল্লিখিত প্রতিটি ক্ষেত্রেই আমরা মা’জুর। যেহেতু আমাদের দেশে খিলাফত জারী নেই। গণতান্ত্রিক সরকার জোড় পূর্বক অনেক শরীয়ত বিরোধী আদেশ আমাদের উপর চাপিয়ে দিয়ে থাকে। যেমন ছবি চাপিয়ে দিয়েছে। এক্ষেত্রে জরুরতে মা’জুর হিসেবে যারা ছবি তুলবে কোন গুণাহ হবে না বরং এ সমস্ত গুনাহের দায়-দায়িত্ব সরকারের উপরই বর্তাবে। কেননা হাদীছ শরীফে ইরশাদ হয়েছে,

عنْ جرير رَضِى الله تَعَالى عنه قال قال النبى صلى الله عليه وسلم من سن فى الاسلام سنة حسنة فله اجرها واجر من عمل بـها من بعده … ومن سن فى الاسلام سنة سيئة كان عليها وزرها ووزر من عمل بـها من بعده.

অর্থঃ “হযরত জারীর বিন আব্দুল্লাহ বাজালী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, “যে কেউ ইসলামে কোন উত্তম পদ্ধতি উদ্ভাবন করবে (যা শরীয়তসম্মত) তার জন্যে তিনি ছওয়াব পাবেন এবং তারপর যারা এ পদ্ধতির অনুসরণ করবে তার ছওয়াবও তিনি পাবেন। … আবার যে কেউ দ্বীন ইসলামে কোন শরীয়ত বিরোধী পদ্ধতি উদ্ভাবন করবে, তার গুনাহ সে পাবে এবং তার পরে যারা এ পদ্ধতির অনুসরণ করবে তাদের গুনাহও তার আমলনামায় দেয়া হবে।” (মুসলিম শরীফ)

তাই সরকারের জন্য দায়িত্ব-কর্তব্য হবে উল্লিখিত প্রতিটি ক্ষেত্রে ছবিকে বাদ দেয়া। যেহেতু শরীয়তে ছবি তোলা বা তোলার শক্ত হারাম ও কবীরা গুনাহ। কাজেই ৯৫% মুসলমানের এদেশে শরীয়ত বিরোধী ও গুনাহের কাজ মুসলমানের এদেশে শরীয়ত বিরোধী ও গুনাহের কাজ মুসলমানদের উপর জোর পূর্বক চাপিয়ে দেয়া সরকারের উচিত হবে না। যেখানে পরিচয় বা সনাক্ত করণের জন্য ছবি ছাড়া বৈধ আরো পদ্ধতি রয়েছে- যেমন ফিঙ্গার প্রিন্ট। সেখানে ছবিকে বাধ্যতামূলক করা হারাম ও কুফরী হবে।

আইডি কার্ডের জন্য ছবি তোলার

 শরয়ী বিধান

সাধারণভাবে কোন প্রকার আইডি কার্ড বা পরিচয় পত্রের জন্যই ছবি তোলা জায়িয নেই। ভোটার আইডি কার্ড ও ন্যাশনাল আইডি কার্ডের জন্যও ছবি তোলা জায়িয নেই। কারণ এগুলো কোনটাই জরুরতের মধ্যে পড়ে না। কাজেই সাধারণভাবে এক্ষেত্রে মা’জুরের মাসয়ালাও গ্রহণযোগ্য নয়।

তবে হ্যাঁ সরকার বা কোম্পানী অথবা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষ যদি জোরপূর্বক ছবিসহ পরিচয় পত্র করতে বাধ্য করে আর পরিচয় পত্র না করলে যদি চাকরি চলে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে তবে সেক্ষেত্রে সে মা’জুর বলে গণ্য হবে।

ছবি সম্পর্কিত নির্বাচন কমিশনের

বক্তব্য খণ্ডন

আইডি কার্ডের জন্য ছবিকে বৈধ করতে গিয়ে নির্বাচন কমিশন যে যুক্তি দেখিয়েছে তা শরীয়তের দৃষ্টিতে মোটেও গ্রহণযোগ্য নয়। বরং সম্পূর্ণই মনগড়া ও দলীলবিহীন। তারা প্রথম যে যুক্তি দিয়েছে তা হলো- যদি হজ্জের জন্য ছবি তোলা যায় তবে আইডি কার্ডের জন্য যাবে না কেন? তাদের এ বক্তব্যের জবাবে বলতে হয় যে, “হজ্জের জন্য ছবি তোলা যাবে বা জায়িয” এটা তারা কোথায় পেল? তারা কুরআন শরীফ-সুন্নাহ শরীফ থেকে একটি দলীলও কি পেশ করতে পারবে যে, হজ্জের জন্য ছবি তোলা জায়িয। কস্মিনকালেও তারা তা পারবে না। আর বিনা দলীলে কোন কথাই ইসলামে গ্রহণযোগ্য নয়। কাজেই, নির্বাচন কমিশনের উক্ত বক্তব্য ভুল ও বাতিল বলে প্রমাণিত হলো।

উল্লেখ, হজ্জের জন্যও যে ছবি তোলা কুরআন শরীফ-সুন্নাহ শরীফ-এর দৃষ্টিতে জায়িজ নেই তার দলীল ভিত্তিক আলোচনা সামনে আসবে ইনশাআল্লাহ।

তারা দ্বিতীয় যে যুক্তি পেশ করেছে তাহলো- “ভোট হচ্ছে আমানত ও আমানতের যাতে কেউ খিয়ানত করতে না পারে তাই ছবিযুক্ত আইডি কার্ড করাও জরুরী।”

তাদের উক্ত বক্তব্যের জবাবে প্রথমতঃ বলতে হয় যে, ভোট আমানত নির্বাচন কমিশনের এ বক্তব্য মোটেও সঠিক নয় এর স্বপক্ষে তারা কুরআন শরীফ-সুন্নাহ শরীফ থেকে কোন দলীলও পেশ করতে পারবে না। কারণ কুরআন শরীফ ও হাদীছ শরীফের কোথাও ভোটকে আমানত বলা হয়নি। তবে কোন কোন ধর্ম ব্যবসায়ী মৌলবী বা উলামায়ে ছূ কুরআন শরীফ-এর একখানা আয়াত শরীফ-এর অপব্যাখ্যা করে ভোটকে আমানত বলে থাকে। যা সম্পূর্ণরূপেই তাদের মণগড়া ও বানানো। উক্ত আয়াত শরীফ-এর শানে নুযূল ও ব্যাখ্যা আলোচনা করলেই স্পষ্ট হয়ে যাবে যে, উক্ত আয়াত শরীফ-এর সাথে ভোটের কোনই সম্পর্ক নেই।

আয়াত শরীফখানা হলোঃ

اِنَّ اللهَ  يَاْمُرُكُمْ اَنْ تُؤَدُّوا الْاَمٰنٰتِ اِلٰۤى اَهْلِهَا وَاِذَا حَكَمْتُمْ بَيْنَ النَّاسِ اَنْ تَحْكُمُوْا بِالْعَدْلِ اِنَّ اللهَ نِعِمَّا يَعِظُكُمْ بِهٖ  اِنَّ اللهَ كَانَ سَمِيْعًا بَۢصِيْرًا.

অর্থঃ- “নিশ্চয়ই আল্লাহ পাক তোমাদেরকে আদেশ করেন যে, তোমরা আদায় করে দাও আমানতসমূহকে তার হকদারদেরকে এবং যখন তোমরা মানুষের মধ্যে ফায়সালা বা বিচার করবে, তখন ন্যায়ের সাথে বিচার করো। নিশ্চয়ই আল্লাহ পাক তোমাদেরকে উত্তম উপদেশ দান করেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ পাক সর্বশ্রোতা ও সর্বদ্রষ্টা।” (সূরা নিসা-৫৮)

শানে নুযূল

হিজরতের পূর্বে জাহিলিয়াতের যুগে, সপ্তাহে দু’দিন সোমবার ও বৃহস্পতিবার কা’বা শরীফের দরজা খোলা হতো। যাতে যারা কা’বা শরীফে প্রবেশ করতে ইচ্ছুক, তাঁরা যেন প্রবেশ করতে পারে। এবং উক্ত ঘরের চাবির জিম্মাদার ছিলেন উসমান বিন তালহা।

একবার কা’বা শরীফের দরজা খোলার পর আল্লাহ পাক-এর রসূল হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কিছু সংখ্যক ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু আনহুমগণকে নিয়ে প্রবেশ করতে আসলে, তখন সে বাধা প্রদান করে এবং কিছু কটু কথা বলে। এ সকল অশালীন ও অশোভনীয় আচরণ লক্ষ্য করে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, “হে উসমান! এমন একদিন আসবে, যেদিন তুমি এ কা’বা ঘরের চাবি আমার হাতে দেখতে পাবে এবং এ চাবি যাকে ইচ্ছা তাকে দেয়ার অধিকারও আমার থাকবে।’ ইত্যাদি আরো কিছু কথা বরে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যিয়ারত করে চলে গেলেন।

পরবর্তীতে যখন মক্কা শরীফ বিজয় হলো, তখন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কা’বা ঘরের চাবি উসমান বিন তালহার কাছ থেকে নিয়ে কা’বা শরীফ খুলে তার মধ্যে প্রবেশ করে দু’রাকায়াত নামায পড়লেন। অতঃপর যখন বের হলেন, তখন হযরত আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ্ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমরা তো পানি পান করানোর জিম্মাদারীতে আছি, সুতরাং আমাদেরকে কা’বা ঘরের চাবিরও জিম্মাদার করে দিন।

তখন নুরে মুজাস্সিাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আল্লাহ পাক-এর নির্দেশের অপেক্ষায় থাকলেন, কাকে এ চাবি দেয়া হবে, তখন উক্ত আয়াত শরীফ নাযিল করে তার মাধ্যমে আল্লাহ পাক জানিয়ে দিলেন।

আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ, নূরে মুজাস্সাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উসমান বিন তালহাকে ডেকে বললেন, “তোমার কি সেই কথা স্মরণ আছে যে, আমি বলেছিলাম কা’বা ঘরের চাবি আমার হাতে আসবে এবং যাকে ইচ্ছা তাকে দেয়ার অধিকার আমার থাকবে।’ অতঃপর তার নিকট চাবি অর্পণ করলেন এবং বললেন, এ চাবি ক্বিয়ামত পর্যন্ত তোমার বংশধরগণের নিকট থাকবে, যে এটি নিবে সে যালিমের অন্তর্ভুক্ত হবে।”

আল্লাহ পাক-এর রসূল, হাবীবুল্লাহ, নূরে মুজাস্সাম, রহমতুল্লিল আলামীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর উক্ত ভবিষ্যৎ বাণী সত্যে বাস্তবায়িত হওয়া দেখে তাঁর ইসলাম গ্রহণের পূর্ব সূক্ষ্ম আকাঙ্খা প্রবল হয়ে উঠল এবং তিনি ইসলাম গ্রহণ করলেন।

ব্যাখ্যা

উপরোক্ত আয়াত শরীফে আল্লাহ পাক আমানতসমূহের হক্বদার কে, তার প্রতিই তার প্রাপ্য আমানত আদায় করার জন্য আদেশ করেছেন। এখন আমানত কাকে বলে? এবং তা কি কি? এ প্রশ্নের জাওয়াবে হযরত মুফাস্সিরীনে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিমগণ উল্লেখ করেন,

আমানত সমূহ প্রধানতঃ তিন প্রকার-

(১) الامانة فى عبادة الله

অর্থঃ- ‘আল্লাহ পাক-এর ইবাদত সম্পর্কে আমানত।’

(২) الامانة مع النفس

অর্থঃ- “নফসের আমানত।”

(৩) امانة العبد مع سائر عباد الله

অর্থঃ- “বান্দার উপর অন্যান্য সকল আমানতসমূহ।”

অর্থাৎ (১) আল্লাহ পাক-এর আদেশ ও নিষেধ সমূহ, যেমন ওযু, গোসল, জানাবাত, নামায, রোযা, যাকাত ইত্যাদি ইবাদতসমূহ আদায় করা এবং এর থেকে বিরত না হওয়া।

(২) আল্লাহ পাক বান্দাদেরকে যে সমস্ত অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ দান করেছেন, যেমন- জিহ্বাকে হিফাযত করা, মিথ্যা, গীবত, চোগলখুরী থেকে, চক্ষুকে হারাম দৃষ্টি থেকে, কানকে গান-বাজনা, অশ্লীল বা ফাহেশা কথা-বার্তা। শোনা থেকে বিরত রাখা।

(৩) আল্লাহ পাক বান্দাদের পরস্পর পরস্পরের মধ্যে যে হক্ব দিয়েছেন। যেমন- মুয়ামেলাত, মুয়াশেরাত ইত্যাদি যথাযথাভাবে আদায় করা।

হাদীছ শরীফে ইরশাদ হয়েছে,

عن انس رضى الله تعالى عنه قال قلما خطبنا رسول الله صلى الله عليه وسلم الا قال لا ايـمان لـمن لا امانة له ولا دين لـمن لاعهد له.

অর্থঃ- “হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বর্ণনা করেন, আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাাদেরকে এরূপ উপদেশ খুব কমই দিয়েছেন যাতে এ কথাগুলো বলেননি যে, যার আমানত নেই, তার ঈমানও নেই এবং যার ওয়াদা ঠিক নেই, তার দ্বীনও নেই।” (বাইহাক্বী, মিশকাত)

এছাড়াও কুরআন শরীফে “সূরা বাক্বারার” ২৮৩ নং আয়াত শরীফে লেন-দেন প্রসঙ্গে আমানতের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

“সূরা আনফালের” ২৭ আয়াত শরীফে জিহাদ প্রসঙ্গে, “সূরা আহযাবের” ৭২ নং আয়াত শরীফে কুরআন শরীফ ও ইসলাম সম্পর্কে, “সূরা মু’মিনুন” ৮ নং আয়াত শরীপে, “সূরা মায়ারিজের” ৩২ নং আয়াত শরীপে মু’মিনের চরিত্র প্রসঙ্গে আমানতের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

অতএব, প্রত্যেক মুসলমান নর-নারীর দায়িত্ব ও কর্তব্য হচ্ছে, সে যেন কোন অবস্থায়ই আমানতের খেয়ানত না করে।

উল্লেখ্য, কুরআন শরীফের কোথাও ভোটকে আমানত বলে উল্লেখ করা হয়নি। শুধু তাই নয়, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াসের কোথাও ভোটকে আমানত বলে উল্লেখ করা হয়নি। কারণ ভোট প্রথা ইসলামের দৃষ্টিতে গ্রহণযোগ্য নয়। অর্থাৎ ইসলামের নামে করা সম্পূর্ণই হারাম।

যা ইসলামের নামে করা জায়িয নেই তা কি করে ঈমানদারদের জন্য আমানত বলে সাব্যস্ত হতে পারে?

অতএব, প্রমাণিত হলো যে, উলামায়ে ‘ছূ’দের ‘ভোটকে আমানত বলে উল্লেখ করাটা’ সম্পূর্ণরূপে তাফসীর বির রায় তথা মনগড়া তাফসীর বা ব্যাখ্যার অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।

উল্লেখ্য, কুরআন শরীফের তাহরীফ, তাবদীল অর্থাৎ পরিবর্তন, পরিবর্ধন যেমন নাজায়িয ও কুফরী তেমনি তাফসীর বিররায় তথা মনগড়া তাফসীর বা ব্যাখ্যা করাও নাজায়িয ও কুফরী।

এ সম্পর্কে হাদীছ শরীফে ইরশাদ হয়েছে,

عن ابن عباس رضى الله تعالى عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم من قال فى القران برايه فليتبوأ مقعده من النار. وفى رواية من قال فى القران بغير علم فليتبوأ مقعده من النار.

অর্থঃ “হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন, আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি কুরআন শরীফ সম্পর্কে মনগড়া কথা বলে, সে যেন (দুনিয়ায় থাকতেই) তার স্থান জাহান্নামে নির্ধারণ করে নেয়। অপর রেওয়ায়েত বর্ণিত রয়েছে, যে ব্যক্তি কুরআন শরীফ সম্পর্কে ইলম ব্যতীত অর্থাৎ বিনা প্রমাণে মনগড়া কোন কথা বলে, সে যেন (দুনিয়ায় থাকতেই) তার স্থান দোযখে করে নেয়।” (তিরমিযী, মিশকাত, মিরকাত)

হাদীছ শরীফে আরো ইরশাদ হয়েছে-

من فسر القران براية فقد كفر

অর্থঃ- “যে ব্যক্তি কুরআন শরীফের মনগড়া ব্যাখ্যা করলো, সে কুফরী করলো।” (ইহইয়াউ উলুমিদ্দীন)

এতএব, নির্বাচন কমিশন যে, ভোটকে আমানত বলেছে, তা ভুল ও দলীলবিহীন বলে প্রমাণিত হলো। সাথে সাথে তার উক্ত যুক্তিও মনগড়া ও বাতিল বলে প্রমাণিত হলো।

দ্বিতীয়তঃ বলতে হয় যে, ইসলামের দৃষ্টিতে ভোট দেয়া, চাওয়া, পদপ্রার্থী হওয়া হারাম। নিম্নে এ সম্পর্কিত কিছু দলীল আদিল্লা পেশ করা হলো।

ভোট তথা নির্বাচনভিত্তিক গণতন্ত্রের উৎপত্তি হয় আখেরী রাসূল, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর জমিনে আগমণের অনেক পূর্বে। যার প্রবর্তক হচ্ছে ইহুদী ও নাছারা।

নির্বাচন হচ্ছে গণতন্ত্রের মূল ভিত্তি। কেননা নির্বাচনের মাধ্যমেই গণতন্ত্র বাস্তবায়িত হয়। আর নির্বাচনের প্রয়োজন তখনই হয় যখন কোন পদে একাধিক ব্যক্তি প্রার্থী হয়। একাধিক প্রার্থীর মধ্যে উক্ত পদ একজনকে দেয়ার লক্ষ্যেই নির্বাচনে অনুষ্ঠিত হয়। আর উক্ত নির্বাচন ভোট প্রয়োগের মাধ্যমেই বাস্তবায়িত হয়। তাই সংক্ষেপে প্রমাণসহ নির্বাচনের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস নিম্নে তুলে ধরা হলো-

নির্বাচনের প্রাচীন ইতিহাস

প্রাচীন গ্রীসে খ্রীস্টপূর্ব পঞ্চম এবং ষষ্ঠ শতাব্দীতে নির্বাচন প্রথা চালু ছিল। এছাড়া রোমান সিনেটেও এ পদ্ধতি চালু ছিল। তবে ঊষবপঃরড়হ সম্পর্কে ধর্ম, মিথলজি বিষয়ক ঊহপুপষড়ঢ়বফরধ গধহ, গুঃয’ং গধমরপ  এ বলা হয়েছে- ঊষবপঃরড়হ, ঃযব ড়িৎষফ রং ফবৎরাবফ ভৎড়স ঃযব এৎববশ ড়িৎফ বষড়মব (পযড়রপব) ঞযব রফবধ রং নধংরপ ঃড় ঃযব ঃৎধফরঃরড়হধষ ংঃৎঁপঃঁৎব ড়ভ ঈযৎরংঃরধহ ঃযবড়ষড়মু. অর্থাৎ ইলেকশন বা নির্বাচন শব্দটি উৎসরিত হয়েছে বা উৎপত্তি লাভ করেছে গ্রীক শব্দ বষড়মব হতে যার অর্থ ছিল পছন্দ। নির্বাচনের ধারণা প্রাচীন খ্রীস্টীয় ধর্মতত্ত্বের ব্যাখ্যার উপর প্রতিষ্ঠিত।

 এ ব্যাখ্যাটি এরূপ যে, তাদের  এড়ফ নির্দিষ্ট কিছু ব্যক্তিবর্গ অথবা জাতিকে বিশেষ কোন দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে তার বিধান চালাতেন। এ প্রসঙ্গে উল্লেখ করা হয়েছে, ঞযব রফবধ ঃযধঃ এড়ফ ংঢ়বপরধষষু পযড়ংবং পবৎঃধরহ রহফরারফঁধষং ড়ৎ হধঃরড়হং ভড়ৎ ংড়সব ঢ়বপঁষরধৎ ৎড়ষব রহ ঃযব ংপযবসব ড়ভ যরং ঢ়ৎড়ারফবহপব রং শযড়হি ধং বষবপঃরড়হ.

উল্লেখ্য, খ্রীস্টান ধর্মতত্ত্বে নির্বাচনের ধারণাটি অদৃষ্টবাদ থেকে এসেছে। এ সম্পর্কে বলা হয়েছেঃ ষহ ঈযৎরংঃরধহ ঃযবড়ষড়মু ঃযব রফবধ ড়ভ বষবপঃরড়হ নবপধসব ধংংড়পরধঃবফ রিঃয ঢ়ৎবফবংঃরহধঃরড়হ, খ্রীস্টানদের আরো ধারণা যে, তাদের খোদার পছন্দনীয় বা বষবপঃবফ  অবশ্যই স্বল্প হবে। গধহু ধৎব পধষষবফ নঁভ ভবি ধৎব পযড়ংবহ (গধঃযব-ি২২-১৪)

মূলকথা হচ্ছে, নির্বাচন খ্রীষ্টীয় ধর্মতত্ত্বের সাথে বিশেষভাবে সম্পূক্ত একটি বিষয়। এ বিষয়ে গধহ, গুঃয ্ ঊহপুপষড়ঢ়বফরধ গধমরপ, আরো বলা হয়েছে, “ঐড়বিাবৎ ঃযধঃ ঃযব ফড়পঃৎরহব ড়ভ বষবপঃরড়হ ভড়ঁহফ রঃং সড়ংঃ হড়ঃধনষব বীঢ়ৎবংংরড়হ রহ ঈযৎরংঃরধহরঃু.

আধুনিক কালের ইতিহাস

তবে আধুনিক ভোটদান ব্যবস্থার সূত্রপাত ঘটে ইংল্যান্ডে ১৬৮৮ সালে। ইংল্যান্ডে ১৬৮৮ সালে বিপ্লবের পর রাজনৈতিক ক্ষমতা পার্লামেন্টের হাতে চলে যায়। পালামেন্ট ১৮৩২ সালে প্রথম সংস্কার আইনে সমস্ত মধ্যবিত্ত শ্রেণীকে ভোটাধিকার দেয়। এরপর পর্যায়ক্রমে ১৮৬৭ সালে কারখানার শ্রমিকদের ১৮৮৪ সালে কৃষি মজুরদের, ১৯১৮ সালে সীমিত সংখ্যক নারীদের এবং ১৯২৮ সালে সকল নারীদের ভোটাধিকার দেয়া হয়।

১৯১৮ সালের পূর্বে বৃটেনে বিশ্ব বিদ্যালয়ের গ্রাজুয়েটরা সাধারণ কেন্দ্র ও বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্র এ দু’টি কেন্দ্রের ভোটাধিকারী ছিল। পরবর্তীতে অর্থাৎ ১৯১৮ সালে এ সকল পদ্ধতির সমাপ্তি ঘটিয়ে একুশ বছর বা তদুর্ধ বয়সের সকল সম্প্রদায়ের জন সার্বজনিন ভোটাধিকার দেয়া হয়।

অপরদিকে আমেরিকায় ১৮৭০ খৃস্টাব্দে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীতে বলা হয় যে, কোন ব্যক্তিকেতার জাতি, ধর্ম অথবা পূর্ব দাসত্বের জন্য ভোটদানের অধিকার থেকে বঞ্চিত করা যাবে না। ১৯৩৩ সালে সপ্তদশ সংশোধনীতে সিনেট সদস্যদের, জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটের নির্বাচনের ব্যবস্থা করা হয়। ১৯২০ সালে মহিলা ভোটাধিকার স্বীকৃত হয়। ১৯৭১ সালে ভোটারদের বযস সীমা কমিয়ে ১৮ বছরে আনা হয়।

ভোটের প্রকারভেদ ও ব্যালট প্রথা

ইসলামের নামে ভোট প্রধাও সম্পূর্ণ হারাম। কারণ ভোট হচ্ছে এমন একটি সিদ্ধান্ত নেয়ার পদ্ধতি যাতে প্রত্যেক ব্যক্তি পারে তার পছন্দনীয়কে চিহ্নিত করতে বা প্রকাশ করতে এবং যে পছন্দের বেশী হয়, তাই গ্রহণযোগ্য হয়।

উল্লেখ্য, সংবিধানে ভোটদানের জন্য কিছু শর্ত-শারায়েত করা হয়েছে। সেগুলো হচ্ছে দু’টি। (১) বাংলাদেশের নাগরিক হওয়া, (২) ভোটদাতার বয়স আঠারো বছরের কম নয়।

আর এক্ষেত্রে যে অযোগ্যতা, তা হলো- (১) কোন আদালত তাকে অপ্রকৃতিস্থ বলে ঘোষণা করেনি। (২) ১৯৭২ সালের বাংলাদেশে যোগসাজসকারী (বিশেষ ন্যায় পীঠ) আদেশের অধীন কোন অপরাধের জন্য দ-িত হননি।

উল্লেখ্য, ভোট হলো দু’প্রকার- (১) প্রকাশ্য ভোটদান, (২) গোপনে ভোটদান।

প্রকাশ্য ভোটদান ব্যবস্থায় ভোটদানকারীরা বিপরীত পক্ষীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিদের দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, তাই এটি সর্বত্রই পরিত্যক্ত হয়েছে। আর গোপনে ভোটদান ব্যবস্থায় ভোটদানকারীরা কারো দ্বারা কোন প্রকার ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না, তারা তাদের ভাষায় নির্ভয়ে ও স্বাধীনভাবে সার্বভৌমত্ত্ব বজায় রেখে ভোট প্রদান করতে পারে। তাই ব্যালট পেপারের মাধ্যমে ভোট প্রথা প্রায় সর্বত্রই চালু রয়েছে।

ব্যালট

ব্যালট হচ্ছে একটি কাগজের শীট, যার দ্বারা গোপন ভোট প্রদান করা হয়। ইধষষড়ঃ ‘ব্যালট’ শব্দটি এসেছে ইটালী ইধষষড়ঃরধ (ব্যালোটা) হতে। যার অর্থ হচ্ছে, ছোট বল। এটি এভাবে উৎপত্তি হয়েছে যে, প্রাচীনকালে এর দ্বারা ভোট গ্রহন করা হতো এবং গ্রীসে এই পদ্ধতির প্রচলন ছিল। জনতার দরবারে অথবা আইন সভায় খ্রীস্টপূর্ব পঞ্চম শতাব্দীতে এই পদ্ধতি চালু ছিল। সাধারণতঃ সাদা এবং কালো বল হ্যাঁ এবং না বোধক ভোটে ব্যবহৃত হতো। অপরদিকে আমেরিকায় উপনিবেশিক কালের শুরুতে সীম শস্যকণা ব্যালট হিসেবে ব্যবহৃত হতো।

উল্লেখ্য, কোন কোন সংগঠন এখনো নতুন সদস্য গ্রহণে ভোটাভুটিতে সাদা এবং কালো বলের ব্যবহার করে থাকে। বর্তমানে গণতান্ত্রিক দেশসমূহে কাগজের ব্যালট বা ব্যালট পেপার নির্বাচনে ভোটারদের ছদ্মনাম হিসেবে কাজ করে এবং এভাবেই অধিকাংশ ভোটারের ইচ্ছা প্রকাশ পায়।

গোপন ভোটদানের পদ্ধতি হিসেবে ব্যালট পেপার ব্যবহারের প্রথম প্রামাণিক ঘটনা ঘটে ১৬২৯ সালে আমেরিকার চার্চে। অতঃপর আমেরিকান ঔপনিবেশে এই ব্যালট পেপারের প্রচলন ছড়িয়ে পড়ে। এরপরে ধীরে ধীরে ব্যালট পেপারের অনেক সংস্কার হয় এবং পরবর্তীতে একই কলামে বিভিন্ন দলের প্রতীক সংযুক্ত হয়, যা সাধারণতঃ বর্ণমালা অনুযায়ী সংযুক্ত হয়।

উল্লেখ্য, ১৯৫০ সালের মধ্যে এই ব্যালট প্রথা প্রায় সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে। অতএব, প্রমাণিত হলো ভোটের মাধ্যমে নেতা বা শাসক নির্বাচনের বর্তমান যে পদ্ধতি রয়েছে তা ইহুদী থেকে উৎপত্তি ঘটেছে এবং ইহুদী থেকে উৎপত্তি ঘটেছে এবং ইহুদী ও নাছারাদের দ্বারা প্রবর্তিত ও প্রচারিত এবং প্রসারিত হয়ে বাস্তবায়িত হচ্ছে।

স্মরণীয় যে, ইসলামের নামে গণতন্ত্র, নির্বাচন, ভোট ইত্যাদি হারাম ও কুফরী হওয়ার আরো একটি বড় কারণ হলো, গণতন্ত্রের মূল বিষয় বা ভিত্তিসমূহের মধ্যে অন্যতম হলো সার্বভৌমত্ত্ব জনগণের। অর্থাৎ জনগণই হচ্ছে গণতন্ত্রের বা সার্বভৌমত্ত্বের মূল।

অথচ আল্লাহ পা বলেন, “সর্বভৌমত্ত্ব স্বয়ং আল্লাহ পাক-এর।” এ প্রসঙ্গে সূরা মায়িদার ১২০ নং আয়াত শরীফে ইরশাদ হয়েছে,

لِلّٰهِ مُلْكُ السَّمٰوٰتِ وَالارْضِ وَمَا فِيْهِنَّ وَهُوَ عَلٰى كُلِّ شَىْءٍ  قَدِيْرٌ.

অর্থঃ আসমান ও যমীন এবং এর মধ্যে যা কিছু রয়েছ, সমস্ত কিছুরই মালিক আল্লাহ পাক। আর তিনিই সমস্ত কিছুর উপর ক্ষমতাবান।”

পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফে ইরশাদ হয়েছে,

هُوَ اللهُ الْخَالِقُ الْبَارِئُ  الْـمُصَوِّرُ لَهُ الْاَسْمَآءُ الْحُسْنٰى يُسَبِّحُ لَهٗ  مَا فِى السَّمٰوٰتِ  وَالْاَرْضِ وَهُوَ الْعَزِيْزُ الْحَكِيْمُ.

অর্থঃ তিনিই আল্লাহ তায়ালা, স্রষ্টা, উদ্ভাবক, রূপদাতা, উত্তম নামসমূহ তাঁরই। আসমান ও যমীন যা কিছু আছে সবই তাঁর পবিত্রতা ঘোষণা করে। তিনি পরাক্রান্ত প্রজ্ঞাময়।” (সূরা হাশর-২৪)

অন্যত্র ইরশাদ হয়েছে,

قُلِ اللّٰهُمَّ مٰلِكَ الْـمُلْكِ تُؤْتِى الْـمُلْكَ مَنْ تَشَآءُ وَتَنْزِعُ الْـمُلْكَ مِمَّنْ تَشَآءُ وَتُعِزُّ مَنْ تَشَآءُ وَتُذِلُّ مَنْ تَشَآءُ بِيَدِكَ الْخَيْرُ اِنَّكَ عَلٰى كُلِّ شَىْءٍ قَدِيرٌ.

অর্থঃ “বলুন, (হে হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!) আয় আল্লাহ পাক! সমগ্র রাজ্যের মালিক আপনি। আপনি রাজন্য যাকে ইচ্ছা প্রদান করেন এবং যাকে ইচ্ছা করেন রাজন্য ছিনিয়ে নেন। আর যাকে ইচ্ছা সম্মানদান করেন আর যাকে ইচ্ছা অপমানে পতিত করেন। আপনারই হাতে রয়েছে যাবতীয় কল্যাণ। নিশ্চয়ই আপনি সর্ব বিষয়ে ক্ষমতাশীল। (সূরা আল ইমরান-২৬)

অন্যত্র ইরশাদ হয়েছে,

وَللهِ مَا فِى السَّمٰوٰتِ وَمَا فِى الْاَرْضِ يَغْفِرُ لِـمَنْ يَّشَآءُ وَيُعَذِّبُ مَنْ يَّشَآءُ وَاللهُ غَفُوْرٌ رَّحِيْمٌ

অর্থঃ- আর যা কিছু আসমান ও যমীনে রয়েছে, সেসবই মহান আল্লাহ পাক-এর। তিনি যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করবেন, যাকে ইচ্ছা আযাব দান করবেন। আর আল্লাহ পাক হচ্ছেন, ক্ষমাকারী, করুণাময়। (সূরা আলে ইমরান-১২৯)

এছাড়া অনুরূপ আয়াত “সূরা আনয়াম-১৭,৫৭, সূরা ফাতির-১০, সূরা বাক্বারা-১১৭, সূরা শুরা-৭৩, সূরা আনয়াম-৯৫, সূরা মু’মিন-৬৮, সূরা আল ফুরকান-২, সূরা হাদীদ-৩, সূরা আস সাফফাত-১৮০-১৮২, সূরা জাছিয়াত-৩৬-৩৭সহ আরো অনেক আয়াতশরীফে মহান আল্লাহ পাক-এর সার্বভৌমত্বের কথা লিপিবদ্ধ রয়েছে।

কাজেই, “সার্বভৌমত্ত্ব জনগণের” একথা বলা ও মানাকুফরী। অবশ্য যদিও কেউ কেউ বলে থাকে যে, “সার্বভৌমত্ত্ব জনগণের” এটা আমরা মানিনা অথচ তারা পূর্ণরূপেই ইসলামের নামে গণতন্ত্র মানে ও করে। তাদের জন্য আফসুস, তারা এত অজ্ঞ যে,তারা গণতন্ত্র ও সার্বভৌমত্ত্বই বা কাকে বলে সে বিষয়ে তাদের বিন্দুতম জ্ঞান নেই বললেই চলে।

কারণ গণতন্ত্রে জনগণকে যে সার্বভৌমত্ত্বের অধিকারী বলা হয়েছে, সে সার্বভৌমত্ত্বের বহিঃপ্রকাশই ঘটে ভোট প্রয়োগের মাধ্যমে। অর্থাৎ গণতন্ত্রে জনগণ ভোট দেয়ার ব্যাপারে কারো মুখাপেক্ষী নয় এবং সে ভোট কাকে দেবে বা দেবে না, সে বিষয়েও কারো কাছে তাকে জবাবদিহি করতে হয় না।

মূলতঃ যারা নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করে বা তা সমর্থন করে,তারা সার্বভৌমত্ত্ব যে জনগণের, আল্লাহ পাক-এর নয়, তাই ইচ্ছায় হোক, অনিচ্ছায়ই হোক মেনে নেয় এবং ভোট দানের মাধ্যমে তার বহিঃপ্রকাশ ঘটায়।

মূলকথা হলো- ইসলামের দৃষ্টিতে ইসলামের নামে ভোট-নির্বাচন করা শরীয়তসম্মত নয়। কারণ ভোট-নির্বাচন সম্পূর্ণরূপেই ইহুদী-নাছারা তথা বেদ্বীন-বদদ্বীনদের বানানো মনগড়া নিয়ম-নীতি বা তর্জ-তরীকা। যা মুসলমানদের জন্য অনুসরণ করা সম্পূর্ণই হারাম।

এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হলে মাসিক আল বাইয়্যিনাত-এর ১৬০তম সংখ্যা থেকে ১৭৫তম সংখ্যা পাঠ করুন।

অতএব, ইসলামের নামে ভোট চাওয়া ও ভোট দেয়াই যেহেতু ইসলামের দৃষ্টিতে হারাম। তাই হারাম কাজের জন্য ছবি তোলা কস্মিনকালেও জায়িয হতে পারে না। কাজেই নির্বাচন কমিশনের এ যুক্তিও অশুদ্ধ, মনগড়া ও দলীলবিহীন বলে প্রমাণিত হলো।

নির্বাচন কমিশনের ছবি সম্পর্কিত বক্তব্যের প্রতিবাদে মুজাদ্দিদে আ’যম, গাউছুল আ’যম, আওলাদে রসূল, ঢাকা রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী-এর সাহসী ও তাজদীদী উচ্চারণ

….. তারিখের জাতীয় দৈনিকে এসেছে, নির্বাচন কমিশনবলেছ, যারা ছবির বিরুদ্ধে বলবে তাদের জেল-জরিমানাহবে।” তারা আরো বলেছে, “যারা ছবিযুক্ত আইডি কার্ড  করবে না; তারা ২২টি নাগরিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হবে।”

নির্বচন কমিশনের উল্লিখিত কুরআন শরীফ-সুন্নাহ শরীফ বিরোধী বক্তব্যের প্রতিবাদে কোন মহল থেকেই কোন আওয়াজ আসেনি। এর তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন শুধুমাত্র খলীফাতুল্লাহ, খলীফাতু রসূলিল্লাহ মুজাদ্দিদে আ’যম, গাউছুল আ’যম, আওলাদে রসূল, ঢাকা রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী। তিনি জুমুয়ার নামাযেরমুবারকবয়ানে এবং যামানার তাজদীদী মুখপত্র দৈনিক আল ইহসানে নির্বাচন কমিশনের ছবি সম্পর্কিত কুরআন-সুন্নাহ বিরোধী বক্তব্যের প্রতিবাদে যে তেজস্বী ও সাহসী বয়ান ও প্রতিবাদ করেন নিম্নে তা হুবহু তুলে ধরা হলো-

(১)

নির্বাচন কমিশনের প্রতি রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা

মুদ্দা জিল্লুহুল আলী-এর আহ্বান

‘ছবি তোলার বিরুদ্ধে বললে জেল-জরিমানা হবে’-  ইসলাম বিরোধী এ কাট্টা কুফরী বক্তব্য মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতিতে তীব্র আঘাত হানায় তওবা করতে হবে। মুসলমানদের ধর্মীয় অধিকার রক্ষায় এ বক্তব্য অবশ্যম্ভাবীরূপে অতি শীঘ্রই প্রত্যাহার করতে হবে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার যেন মনে না করে যে, জরুরী অবস্থার নামে তারা ইসলামের বিরুদ্ধে যা ইচ্ছে তাই বলে এবং করে বেড়াবে।

– সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম

আল ইহসান প্রতিবেদন: যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ, মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমামুল আইম্মাহ, কুতুবুল আলম, আওলাদে রসূল, রাজারবাগ শরীফের হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী  বলেছেন, “ছবিসহ ভোটার হওয়ার ক্ষেত্রে কেউ যদি ছবি তোলার বিরুদ্ধে ফতওয়া দেয় তাহলে তার ১ বছরের জেল দেয়া হবে”- নির্বাচন কমিশনার সাখাওয়াত ছাহেবের এ বক্তব্য কাট্টা কুফরী হয়েছে। তিনি ধর্মব্যবসায়ীদের দ্বারা বিভ্রান্ত, প্রতারিত ও প্ররোচিত হয়ে এমনটি বলেছেন।

নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্ব নির্বাচন করা, শরীয়ত প্রণয়ন করা নয়। তার শরীয়ত বিরোধী এ বক্তব্য ১৮৪ কোটি মুসলমানের ঈমানী অনুভূতিতে গভীর আঘাত হেনেছে এবং তা মহা ইসলাম বিরোধী বক্তব্য হয়েছে। নির্বাচন কমিশনারের এ বক্তব্য এদেশের মুসলমানদের সাংবিধানিক অধিকার ক্ষুণœ করায় তা অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে। তার পাশাপাশি তত্ত্বাবধায়ক সরকার যেন মনে না করে যে, জরুরী অবস্থার নামে তারা ইসলামের বিরুদ্ধে যা ইচ্ছে তাই বলে এবং করে বেড়াবে।

ছবিসহ ভোটার তালিকা বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার সাখাওয়াত ছাহেবের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ, মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমামুল আইম্মাহ, কুতুবুল আলম, আওলাদে রসূল, রাজারবাগ শরীফের হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী গতকাল রাজারবাগ দরবার শরীফে সুন্নতী জামে মসজিদে জুমুয়ার বয়ানে এসব কথা বলেন।

মুজাদ্দিদে আ’যম, রাজারবাগ শরীফের হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বলেন, নির্বাচন কমিশনার ছাহেব ধর্মব্যবসায়ীদের দ্বারা বিভ্রান্ত ও প্ররোচিত হয়েছেন।

মুজাদ্দিদে আ’যম, রাজারবাগ শরীফের হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বলেন, “যদি পাসপোর্ট করার ক্ষেত্রে ছবি তোলা গুনাহ্্ না হয়, তাহলে ভোটার হওয়ার জন্য ছবি তোলা গুনাহ্ হবে কেন?”- নির্বাচন কমিশনার ছাহেবের এ বক্তব্য সম্পূর্ণ ভুল ও কুফরী। কারণ, ইসলামী শরীয়তে পাসপোর্ট করার জন্যও ছবি তোলা জায়িয নেই।

রাজারবাগ শরীফের হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বলেন, ধর্মব্যবসায়ী মাওলানারা তাদের ধর্মব্যবসা বৃদ্ধির জন্য ছবি তোলা জায়িয করেছে। পাসপোর্টে ছবি তোলা মেনে নিয়েছে। আর তাদের দ্বারাই নির্বাচন কমিশনার ছাহেব বিভ্রান্ত হয়েছেন।

রাজারবাগ শরীফের হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বলেন, অতীতেও ধর্মব্যবসায়ী মাওলানারা এরকম বড় বড় ফিৎনা তৈরি করেছে।

মুজাদ্দিদে আ’যম, রাজারবাগ শরীফের হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বলেন, এই ধর্মব্যবসায়ী মাওলানারাই পাকিস্তান আমলে সরকারকে খুশি করানোর জন্য জিন্নাহ-লিয়াকত আলীর রাষ্ট্রভাষা উর্দু করাকে মেনে নিয়েছিলো। সরকারকে খুশি করার জন্য তারা বলেছিলো, উভয় দেশের মাদ্্রাসায় যেহেতু উর্দুতেই পড়ানো হয় তাই উর্দু হোক রাষ্ট্রভাষা।

রাজারবাগ শরীফের হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী জানান, তখনকার ধর্মব্যবসায়ীদের- সরকার তোষণনীতির কারণেই রাষ্ট্রভাষা বাংলার জন্য আন্দোলনের প্রেক্ষিত তৈরি হয়েছিলো। জীবন দিতে হয়েছিলো।

রাজারবাগ শরীফের হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বলেন, আইয়ুব খানের আমলেও ধর্মব্যবসায়ী মাওলানারা দাদার সম্পত্তিতে নাতির ওয়ারিছ সত্ত্ব, তালাকের ভুল ফতওয়া ইত্যাদি ইসলাম বিরোধী আইন সমর্থন করেছিলো।

রাজারবাগ শরীফের হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বলেন, “পাসপোর্টে ছবি তোলা জায়িয হলে, ভোটার তালিকাতে ছবি তোলা জায়িয হবে না কেন”- একথা বলা কাট্টা কুফরী হয়েছে।

মুজাদ্দিদে আ’যম, রাজারবাগ শরীফের হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বলেন, সূরা হাশরে আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন, “আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যা এনেছেন তা আঁকড়িয়ে ধরো এবং আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম  যা থেকে বিরত থাকতে বলেছেন তা থেকে বিরত থাকো। আল্লাহ পাককে ভয় কর, নিশ্চয়ই আল্লাহ পাক কঠিন শাস্তিদাতা।”

রাজারবাগ শরীফের হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বলেন, হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ, হযরত ইমাম-মুজতাহিদগণ তাঁরা আল্লাহ পাক-এর আদেশের কথা বলে হাদীছ শরীফের বরাত দিতেন। কারণ হিসেবে তাঁরা সূরা হাশর-এর উপরোক্ত আয়াত শরীফের প্রমাণ দিতেন। যাতে প্রতিভাত হয় যে, আল্লাহ পাক-এর হাবীব, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর কথা মূলতঃ আল্লাহ পাক-এরই কথা।

রাজারবাগ শরীফের হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী জানান, হাজার হাজার হাদীছ শরীফ রয়েছে যাতে উল্লেখ রয়েছে, ছবি তোলা, আঁকা, রাখা, দেখা হারাম। হারামকে যারা হালাল করতে চাবে তারা কাফির হয়ে যাবে। তাদেরকে প্রকাশ্য তওবা-ইস্তিগ্্ফার করতে হবে।

রাজারবাগ শরীফের হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বলেন, হাদীছ শরীফে রয়েছে, “নিশ্চয়ই ক্বিয়ামতের ময়দানে ঐ ব্যক্তির কঠিন শাস্তি হবে যে ছবি তোলে বা আঁকে।”

মুজাদ্দিদে আ’যম, রাজারবাগ শরীফের হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বলেন, হাদীছ শরীফে উল্লেখ আছে, যারা ছবি বা কোন আকৃতি তৈরি করবে ক্বিয়ামতের দিন আল্লাহ পাক সে আকৃতিকে প্রাণ দিবেন। তারা জীবন্ত হয়ে উক্ত ছবি তৈরিকারীকে জাহান্নামে শাস্তি দিতে থাকবে।

রাজারবাগ শরীফের হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বলেন, হাজার হাজার হাদীছ শরীফে ছবি তোলার বিরুদ্ধে রয়েছে। ইসলামী শরীয়তে ছবি তোলার বিরুদ্ধে রয়েছে। আর নির্বাচন কমিশনার ছাহেব শরীয়ত বিশেষজ্ঞ কোন লোক নন। তাই শরীয়তের স্পষ্ট, প্রকাশ্য ও দলীলভিত্তিক একটি বিষয়ে মন্তব্য করা তার আদৌ ঠিক হয়নি বরং কুফরী হয়েছে। তার কাজ নির্বাচন করা, শরীয়ত প্রণয়ন করা নয়।

রাজারবাগ শরীফের হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী হুশিয়ার করে বলেন, বর্তমান তত্ত্বাবধায়ক সরকার যাতে মনে না করে যে, জরুরী অবস্থার নামে তারা ইসলামের বিরুদ্ধে যা ইচ্ছে তাই বলে বেড়াবে, করে বেড়াবে।

রাজারবাগ শরীফের হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বলেন, অতীতে নমরূদ, শাদ্দাদ, ফিরআউনের মত ইসলাম বিরোধী মহা শক্তিশালী রাজা-বাদশাহ ধ্বংস হয়ে গেছে।

রাজারবাগ শরীফের হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বলেন, নমরূদ ১৭শ’ বছর রাজত্ব করেছিলো, শাদ্দাদ ১০০০ বছর রাজত্ব করেছিল, ফিরআউন ৪শ’ বছর রাজত্ব করেছিলো কিন্তু তারা এখন মাটির নিচে জাহান্নামের কীট।

রাজারবাগ শরীফের হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বলেন, নির্বাচন কমিশনার সাখাওয়াত ছাহেবের বক্তব্য বাংলাদেশের প্রচলিত সংবিধান বিরোধী হয়েছে। কারণ, সংবিধানে প্রত্যেক নাগরিকের ধর্মীয় অধিকার, মৌলিক অধিকার সংরক্ষিত হয়েছে। পাশাপাশি ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানলে বা ধর্মীয় অনুশাসনের বিপরীত মন্তব্য করলে তাও অপরাধ বলে স্বীকৃত রয়েছে।

রাজারবাগ শরীফের হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বলেন, মুসলমানদের ধর্মীয় অধিকারের অর্থ পুরো ইসলামই মানা। কিছু ইসলাম আর কিছু অনৈসলাম করা মুসলমানের ধর্মীয় স্বাধীনতা নয়। কারণ, আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন, “তবে কি তোমরা কিতাবের কিছু অংশ মানবে আর কিছু অংশ অস্বীকার করবে?”

রাজারবাগ শরীফের হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বলেন, ‘ভোটার কার্ডের জন্য ছবি তোলা যে জায়িয’- এ সম্পর্কে নির্বাচন কমিশনারকে কুরআন-সুন্নাহ থেকে দলীল দিতে হবে।

রাজারবাগ শরীফের হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী এ সময় জালালী কণ্ঠে বলেন, ‘ছবি তোলার বিরুদ্ধে বললে এক বছরের জেলের শাস্তি দেয়া হবে’- নির্বাচন কমিশনারকে এ শাস্তি দেয়ার অধিকার কে দিলো? তাকে বরং তার জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে। এ সময় উপস্থিত মুছল্লী ও শ্রোতাদের মাঝে শিহরণ খেলে যায়। তারা আলোড়িত হয়ে উঠেন।

রাজারবাগ শরীফের হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বলেন, বর্তমান সরকারের চেয়ে অনেক বড় বড় সরকার ইসলামের বিরোধিতা করার কারণে ধ্বংস হয়ে গেছে। বর্তমান সরকারও যদি একই পথে যায় তবে তাদেরও ধ্বংস অনিবার্য।

রাজারবাগ শরীফের হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বলেন, নির্বাচন কমিশনারের উচিৎ অবিলম্বে তার কুফরী বক্তব্য প্রত্যাহার করে খাছ তওবা করা। আর ছবি সম্বলিত ভোটার কার্ড বা আইডি কার্ড তৈরিতে যদি তারা বাধ্য করে তবে যত লোক এজন্য ছবি তুলবে সমস্ত গুনাহ নির্বাচন কমিশনারের হবে। যেমন, কোন হত্যা হলে আগে কাবিলের, মূর্তিপূজা হলে আগে আমর বিন লুহাইর হয়।

রাজারবাগ শরীফের হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বলেন, নির্বাচন কমিশনার যেহেতু ইসলাম বিশেষজ্ঞ নন আর বর্তমান মাওলানা নামধারীদের ছবি তুলতে দেখেছেন তাই হয়তোবা তিনি এরূপ বলেছেন। কিন্তু ইসলামকে ইসলাম হিসেবে মানতে হবে, পরিপূর্ণরূপে মানতে হবে।

 রাজারবাগ শরীফের হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বলেন, ইসলামে হালাল স্পষ্ট, হারামও স্পষ্ট। হারামকে যদি কেউ হালাল করতে চায় তাহলে সে মুরতাদ হয়। শরীয়তের ফায়সালায় মুরতাদ হলে তার তওবার জন্য সুযোগ তিনদিন। তা না করলে তার শাস্তি মৃত্যুদ-। এবং তার দাফনও নয় রবং তাকে গর্তের মধ্যে পুঁতে রাখতে হবে।

রাজারবাগ শরীফের হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বলেন, ‘ছবি তোলার বিরুদ্ধে বললে জেল-জরিমানা হবে‘- নির্বাচন কমিশনারের এ কুফরী বক্তব্যের প্রতিবাদে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। সর্বোতভাবে দলীলভিত্তিক প্রতিবাদ পাঠাতে হবে। এজন্য প্রয়োজনে মাসিক আল বাইয়্যিনাত-এর সাহায্য নেয়া যাবে বলে তিনি জানান।

(২)

ইসলামের দৃষ্টিতে ছবি তোলার বিরুদ্ধে বলা ফরয-ওয়াজিব তথা অন্যতম ধর্মীয় কাজ।

পাশাপাশি ছবির বিরুদ্ধে বলা জরুরী বিধানেও সমর্থনযোগ্য এবং সংবিধানও সম্মত।

আর জরুরী বিধান তথা সংবিধানের দৃষ্টিতে ধর্মীয় স্বাধীনতা পূর্ণাঙ্গভাবে সংরক্ষিত

– সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম

যামানার লক্ষ্যস্থল ওলীআল্লাহ, যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ, ইমামুল আইম্মাহ, মুহইস্ সুন্নাহ, কুতুবুল আলম, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা ইমাম রাজারবাগ শরীফের হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বলেছেন,  ইসলামের দৃষ্টিতে ছবি তোলার বিরুদ্ধে বলা ফরয-ওয়াজিব তথা অন্যতম ধর্মীয় কাজ। আর জরুরী বিধান তথা সংবিধানের দৃষ্টিতে ধর্মীয় স্বাধীনতা পূর্ণাঙ্গভাবে সংরক্ষিত।

মুজাদ্দিদে আ’যম রাজারবাগ শরীফের হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বলেন, কুরআন শরীফে, হাদীছ শরীফে ছবি তোলার বিরুদ্ধে রয়েছে। কাজেই ছবি তোলার পক্ষে বলার অর্থ হলো সরাসরি আল্লাহ পাক এবং আল্লাহ পাক-এর হাবীব, নূরে মুজাসসাম, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর বিরুদ্ধে বলা।

মুজাদ্দিদে আ’যম রাজারবাগ শরীফের হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বলেন,  ছবি তোলাকে জায়িয বলার অর্থ হারামকে হালাল বলা। আর যে আল্লাহ পাক ও তাঁর হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর বিরোধিতা করে, হারামকে হালাল বলে সে কাট্টা মুরতাদ।

মুজাদ্দিদে আ’যম রাজারবাগ শরীফের হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বলেন, সূরা হাশরে আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন, “আমার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যা এনেছেন তা আঁকড়িয়ে ধরো এবং আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যা থেকে বিরত থাকতে বলেছেন তা থেকে বিরত থাকো। এ বিষয়ে আল্লাহ পাককে ভয় কর, নিশ্চয়ই আল্লাহ পাক কঠিন শাস্তিদাতা।”

মুজাদ্দিদে আ’যম রাজারবাগ শরীফের হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বলেন, হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ, হযরত ইমাম মুজতাহিদগণ- তাঁরা আল্লাহ পাক-এর আদেশের কথা বলে হাদীছ শরীফের বরাত দিতেন। কারণ হিসেবে তাঁরা সূরা হাশর-এর উপরোক্ত আয়াত শরীফের প্রমাণ দিতেন। যাতে প্রতিভাত হয় যে, আল্লাহ পাক-এর হাবীব, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর কথা মূলতঃ আল্লাহ পাক-এরই কথা।

মুজাদ্দিদে আ’যম রাজারবাগ শরীফের হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বলেন, হাজার হাজার হাদীছ শরীফ রয়েছে যাতে উল্লেখ রয়েছে- “ছবি তোলা, আঁকা, রাখা, দেখা হারাম।”

মুজাদ্দিদে আ’যম রাজারবাগ শরীফের হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী ‘বুখারী শরীফের’ বরাত দিয়ে বলেন, আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, “নিশ্চয়ই ক্বিয়ামতের দিনে ঐ ব্যক্তির সবচাইতে কঠিন শাস্তি হবে যে ব্যক্তি ছবি তোলে বা আঁকে।”

মুজাদ্দিদে আ’যম রাজারবাগ শরীফের হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী অসংখ্য হাদীছ শরীফের বরাত দিয়ে আরো বলেন, “যে ব্যক্তি প্রাণীর ছবি তুলবে ক্বিয়ামতের দিন আল্লাহ পাক-এর তরফ থেকে তাকে বলা হবে-তুমি যে ছবিগুলো তুলেছিলে সেগুলোতে প্রাণ দাও। সে তাতে প্রাণ দিতে সক্ষম হবেনা। তখন আল্লাহ পাক তাতে প্রাণ  দিয়ে বলবেন, তোমাকে যে তৈরি করেছিল তাকে শাস্তি দেয়ার কাজে নিয়োজিত হয়ে যাও।” (নাসাঈ শরীফ)

মুজাদ্দিদে আ’যম রাজারবাগ শরীফের হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী ‘বুখারী শরীফ’ ও ‘মুসলিম শরীফের’ বরাত দিয়ে আরো বলেন, “যে ব্যক্তি প্রাণীর ছবি উঠাবে, সে রহমত ও জান্নাত থেকে বঞ্চিত হবে।”

মুজাদ্দিদে আ’যম রাজারবাগ শরীফের হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী হাদীছ শরীফের বরাত দিয়ে আরো  বলেন, “ঐ ঘরে রহমতের ফেরেশতা প্রবেশ করেনা যে ঘরে ছবি ও কুকুর থাকে।”

মুজাদ্দিদে আ’যম রাজারবাগ শরীফের হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বলেন, মসজিদ আল্লাহ পাক-এর ঘর। আল্লাহ পাক-এর যমীনে সবচাইতে পছন্দনীয় স্থান। আর ছবি তোলার বিপক্ষে হাজার হাজার হাদীছ শরীফ রয়ে গেছে। কাজেই মসজিদে ছবি তোলার পক্ষে বলা, ছবিযুক্ত আইডি কার্ডের পক্ষে বলার অর্থই হচ্ছে, আল্লাহ পাক-এর ঘরে আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর বিরুদ্ধে বলা।

মুজাদ্দিদে আ’যম রাজারবাগ শরীফের হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বলেন,  ইসলামে হালাল স্পষ্ট, হারামও স্পষ্ট। হারামকে যদি কেউ হালাল করতে চায় তাহলে সে মুরতাদ হয়। শরীয়তের ফায়সালায় মুরতাদ হলে তার তওবার জন্য সুযোগ তিনদিন। এরমধ্যে তওবা না করলে তার শাস্তি মৃত্যুদ-। এবং তার দাফনও নয় রবং তাকে গর্তের মধ্যে পুঁতে রাখতে হবে।

মুজাদ্দিদে আ’যম, রাজারবাগ শরীফের মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বলেন, হিন্দু ধর্মে, বৌদ্ধ ধর্মে মূর্তি পূজা ইবাদত। কিন্তু ইসলাম ধর্মে মূর্তি পূজার বিরুদ্ধে বলা ইবাদত। কারণ, আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “আমি আবির্ভূত হয়েছি বাদ্যযন্ত্র ও মূর্তিপূজা বন্ধের জন্য।”

মুজাদ্দিদে আ’যম, রাজারবাগ শরীফের মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বলেন, হিন্দু-বৌদ্ধদের জন্য যেমন মূর্তিপূজার বিরুদ্ধে না বলা তাদের ধর্মীয় স্বাধীনতা ও অধিকার। আর ইসলামের দৃষ্টিতে মূর্তিপূজার বিরুদ্ধে চেতনা জাগ্রত করা যেমন মুসলমানদের অধিকার তেমনি ইসলামের বিরুদ্ধে না বলা তথা ছবির বিরুদ্ধে বলাও মুসলমানের ধর্মীয় স্বাধীনতা ও অধিকার।

মুজাদ্দিদে আ’যম, রাজারবাগ শরীফের মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বলেন, বুখারী, মুসলিম, আবু দাউদ, নাসাঈ শরীফ, তিরমিযী, মিশকাত, মুছান্নফ ইবনে আবু শায়বা, দায়লামী, ইবনে মাজাহ,শরহে নববী, ফতহুল বারী, উমদাতুল ক্বারী, মুজামুল মুফহারিম, রিয়াজুস্ সালেহীন, মুসনদে আহমদ, মুজামুল মুফহারিম, শরহে সুয়ূতী, মুয়াত্তা মালিক, মুযাহিরে হক, তোহফাতুল আহওয়াযী, তাহাবী ইত্যাদি হাজার হাজার হাদীছ শরীফ তার শরাহ ও ফিক্বাহ্র কিতাবে বর্ণিত রয়েছে যে, “ছবি তোলা,আঁকা, রাখা, দেখা সম্পূর্ণরূপে হারাম।“

মুজাদ্দিদে আ’যম, রাজারবাগ শরীফের মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বলেন, ইসলামের দৃষ্টিতে যে কোন হারাম কাজের বিরুদ্ধে বলা আলিম সমাজের উপর ফরয-ওয়াজিব। কারণ, আল্লাহ পাক কুরআন শরীফে ইরশাদ করেন, “তোমাদের মধ্যে এমন একটা দল বের হয়না কেন, যারা দ্বীনি ইলম অর্জন করবে এবং তাদের ক্বওমকে হারাম কাজ সম্পর্কে ভয় প্রদর্শন করবে।” (সূরা তওবা-১২২)

মুজাদ্দিদে আ’যম, রাজারবাগ শরীফের মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বলেন, কুরআন শরীফে আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন, “তোমরাই শ্রেষ্ঠ উম্মত। কাজেই তোমাদের দায়িত্ব তোমরা নেক কাজে আদেশ করবে এবং বদ কাজে নিষেধ করবে।” (সূরা আলে ইমরান-১১০))

মুজাদ্দিদে আ’যম, রাজারবাগ শরীফের মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বলেন, বর্ণিত আয়াত শরীফ ও হাদীছ শরীফের প্রেক্ষিতে দিবালোকের ন্যায় এই সাব্যস্ত হয় যে, ছবি তোলার মত হারাম কাজের বিরুদ্ধে বলা ইসলামের জন্য বিশেষ ধর্মীয় কাজ তথা একান্ত ধর্মীয় কাজ তথা একান্ত ধর্মীয় স্বাধীনতার শামীল।

মুজাদ্দিদে আ’যম, রাজারবাগ শরীফের মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বলেন, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সংবিধান প্রথমেই ‘পরম দয়ালু আল্লাহ পাক-এর নামে’ বলে আরম্ভ করা হয়েছে।

মুজাদ্দিদে আ’যম, রাজারবাগ শরীফের মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বলেন, সংবিধানের প্রস্তাবনায় সর্বশক্তিমান আল্লাহ পাক-এর প্রতি আস্থা ও বিশ্বাসের কথা বলা হয়েছে।

মুজাদ্দিদে আ’যম, রাজারবাগ শরীফের মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বলেন, সর্বশক্তিমান আল্লাহ পাক-এর প্রতি পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাসের অর্থ হলো কুরআন-সুন্নাহ্্য় বর্ণিত আল্লাহ পাক ও তাঁর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর তরফ থেকে বর্ণিত প্রতিটি আদেশ-নিষেধের প্রতি পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস রাখা; কুরআন-সুন্নাহ্য় বর্ণিত হারামকে হারাম জানা এবং তা করানো ও করার ক্ষেত্র বন্ধ করা; আর হালালকে হালাল জানা এবং তা করতে পৃষ্ঠপোষকতা করা।

মুজাদ্দিদে আ’যম, রাজারবাগ শরীফের মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বলেন, কুরআন-সুন্নায় ঘোষিত কোন নিষিদ্ধ কাজ সরকারিভাবে পালনের নির্দেশ দেয়ার অর্থ হলো- ‘সর্বশক্তিমান আল্লাহ পাক-এর প্রতি পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাসের’ খিলাপ ভাবধারা প্রতিপন্ন করা।

মুজাদ্দিদে আ’যম, রাজারবাগ শরীফের মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বলেন, কুরআন-সুন্নায় ছবি তোলা সম্পর্কে হাজার হাজার নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। কাজেই ‘এযুগে ছবি না তুললে চলবে না’- বলার অর্থ হলো এ যুগে সর্বশক্তিমান আল্লাহ পাক-এর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাসের প্রতি অনাস্থা জ্ঞাপন।

মুজাদ্দিদে আ’যম, রাজারবাগ শরীফের মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বলেন, বাংলাদেশ সরকারের সংবিধানেও ধর্ম পালনের সুনির্দিষ্ট অধিকার দেয়া হয়েছে।

মুজাদ্দিদে আ’যম, রাজারবাগ শরীফের মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বলেন, বাংলাদেশ সরকারের সংবিধানের ৪১ নম্বর ধারায় ধর্মীয় স্বাধীনতা অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, প্রত্যেক নাগরিকের যে কোন ধর্ম অবলম্বন, পালনসহ প্রচারের অধিকার রয়েছে।

মুজাদ্দিদে আ’যম, রাজারবাগ শরীফের মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বলেন, জরুরী বিধানের ১৪১(খ) ধারা অনুযায়ী জরুরী অবস্থার সময় সংবিধানের ৩৬, ৩৭, ৩৮, ৩৯, ৪০ ও ৪২ নং অনুচ্ছেদসমূহের বিধান স্থগিতকরণের কথা বলা হলেও ৪১ নম্বর অনুচ্ছেদ সম্পর্কে কিছু বলা হয়নি।

মুজাদ্দিদে আ’যম, রাজারবাগ শরীফের মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বলেন, সংবিধানে উল্লিখিত মৌখিক অধিকার যেমন, (৩৬) চলাফেরার স্বাধীনতা, (৩৭) সমাবেশের স্বাধীনতা, (৩৮) সংগঠনের স্বাধীনতা, (৩৯) চিন্তা ও বিবেকের স্বাধীনতা, (৪০) পেশা বা বৃত্তির স্বাধীনতা, (৪২) সম্পত্তির অধিকার ইত্যাদির বিষয়ে জরুরী অবস্থার বিধি-নিষেধ আরোপিত হলেও ৪১ নম্বর অনুচ্ছেদ যাতে ধর্মীয় স্বাধীনতার কথা বলা হয়েছে সেক্ষেত্রে জরুরী বিধিমালার কোন প্রয়োগের কথা বলা হয়নি।

মুজাদ্দিদে আ’যম, রাজারবাগ শরীফের মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বলেন, ইসলাম পালনের, ইসলামের কথা বলার অধিকার দিয়েছেন স্বয়ং আল্লাহ পাক ও তাঁর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর বিরোধিতা যারা করবে তারা নমরূদ, সাদ্দাদ, ফিরআউনের ভূমিকায় অবতীর্ণ হবে এবং তাদের পরিণতি তাদের মতই হবে।

মুজাদ্দিদে আ’যম, রাজারবাগ শরীফের মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বলেন, আল্লাহ পাক সবকিছুর উপর ক্ষমতাবান। আল্লাহ পাক-এর হাবীব, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আখিরী রসূল। তাঁর শরীয়ত ক্বিয়ামত পর্যন্ত বলবৎ থাকবে। এখানে পরিবর্তনের, পরিবর্ধনের, সংযোজন, বিয়োজনের কোন অবকাশ নেই। যদি কেউ তা করতে চায় তবে তারা কাদিয়ানীদের অন্তর্ভুক্ত হবে।

মুজাদ্দিদে আ’যম, রাজারবাগ শরীফের মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বলেন, আল্লাহ পাক কুরআন শরীফে ইরশাদ করেন, “কোন মুসলমান নর-নারীর জন্য জায়িয হবে না, আল্লাহ পাক ও তাঁর হাবীব, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যে ফায়সালা করেন বা যা বর্ণনা করেন ও বলেন তার বিপরীত কোন মন্তব্য পেশ করা। যে ব্যক্তি আল্লাহ পাক ও তাঁর রসূল, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর আদেশ অমান্য করে তারা প্রকাশ্যে পথভ্রষ্টতায় পতিত হয়।” (সূরা আহযাব-৩৬)

মুজাদ্দিদে আ’যম, রাজারবাগ শরীফের মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বলেন, প্রত্যেক সরকারের উচিত প্রত্যেক মুসলমানকে তার ধর্মীয় স্বাধীনতা ভোগ করতে দেয়া। পরিপূর্ণ ইসলাম পালন করতে দেয়া। কেননা, আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন, “হে মুসলমানগণ! তোমরা পরিপূর্ণভাবে ইসলামে প্রবেশ কর।”

মুজাদ্দিদে আ’যম, রাজারবাগ শরীফের মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বলেন, অনেক সরকারই অনেক সময় তাদের সুবিধা-অসুবিধার জন্য ইসলামী অনুশাসনের উপর বিধি-নিষেধ আরোপ করে। এটা কিন্তু সংবিধান বিরোধী, এমনকি জরুরী বিধিমালা বিরোধীও। সবচাইতে আশ্চর্যজনক ও কঠিন বিষয় হলো, কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াসের উপর কোন বিধি-নিষেধ আরোপ করার অর্থ হলো আল্লাহ পাক ও তাঁর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর বিরোধিতা করা যা আল্লাহদ্রোহী ও রসূলদ্রোহী’র অন্তর্ভুক্ত। অর্থাৎ যা প্রকৃতপক্ষে ইসলাম বিরোধী। কারণ, আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন, “তবে কি তোমরা কিতাবের কিছু অংশ মানবে আর কিছু অংশ অস্বীকার করবে।”

মুজাদ্দিদে আ’যম, রাজারবাগ শরীফের মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বলেন, সংবিধানের ৪১(ক) ধারায় বলা হয়েছে, “প্রত্যেক নাগরিকের যে কোন ধর্ম অবলম্বন, পালন বা প্রচারের অধিকার রয়েছে।” আর হাদীছ শরীফে ইরশাদ হয়েছে, “তোমরা একটি আয়াত শরীফ হলেও তা প্রচার করে বেড়াও। সবাইকে অবগত করাও।”

মুজাদ্দিদে আ’যম, রাজারবাগ শরীফের মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বলেন, ছবি তোলার বিরুদ্ধে বলা, নারী নেতৃত্বের বিরুদ্ধে বলা, হরতাল, লংমার্চ, ব্লাসফেমী আইনের বিরুদ্ধে বলা, ইসলামের দোহাই দিয়ে ও ইসলামের লেবাসে ভোট ও নির্বাচন করার বিরুদ্ধে বলা, মৌলবাদ ও জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে বলা- ইসলামের দৃষ্টিতে ঈমানী কর্তব্য তথা মৌলিক ধর্মীয় স্বাধীনতার অন্তর্গত। কেননা, হাদীছ শরীফে ইরশাদ হয়েছে, “তোমরা যখন কোন পাপ কাজ হতে দেখ তখন হাত দ্বারা বাধা দিও। না পারলে মুখ দ্বারা বাধা দাও।” অন্য হাদীছ শরীফে ইরশাদ হয়েছে, “কোন অন্যায় সাধিত হবার পরও যারা বাধা দেয় না তার বিরুদ্ধে বলে না তারা বোবা শয়তান।”

মুজাদ্দিদে আ’যম, রাজারবাগ শরীফের মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বলেন, ইসলামের দৃষ্টিতে যেসব মাওলানা ছবি তোলার বিরুদ্ধে বলবে না তারা বোবা শয়তান আর যারা ছবির পক্ষে বলবে অর্থাৎ ছবি তোলা জায়িয বলবে তারা মুরতাদ। তারা আল্লাহদ্রোহী ও রসূলদ্রোহী’র অন্তর্ভুক্ত। প্রকৃতপক্ষে তারা মুসলমানদের ধর্মীয় স্বাধীনতার বিরোধী কাজ করছে। এদের থেকে মুসলমানদেরকে সতর্ক থাকতে হবে।

(৩)

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ফায়সালা মুতাবিক, ‘ছবি’ যা শরীয়তে সম্পূর্ণ হারাম তা না তুললে যদি ২২টি নাগরিক সুবিধা ও অধিকার হতে বঞ্চিত হতে হয়-

তবে মুসলমান দাবী করার পরও আল্লাহ পাক ও তাঁর হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর আদেশ অমান্য করে ছবি তুললে তারা কতটুকু সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবে?

– সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম

যামানার লক্ষ্যস্থল ওলীআল্লাহ, যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ, মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমামুল আ’ইম্মাহ, কুতুবুল আলম, আওলাদে রসূল, রাজারবাগ শরীফের হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বলেছেন, “তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ফায়সালা মুতাবিক ছবি- ‘যা শরীয়তে সম্পূর্ণ হারাম’ তা না তুললে যদি ২২টি নাগরিক সুবিধা ও অধিকার হতে বঞ্চিত হতে হয়, তবে মুসলমান দাবী করার পরও আল্লাহ পাক ও তাঁর হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর আদেশ অমান্য করে ছবি তুললে সে কতটুকু সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবে?”

ছবি তুলে আইডি কার্ড না করলে তাকে ২২টি নাগরিক সুবিধা থেকে

বঞ্চিত করা হবে”- নির্বাচন কমিশনের এ ঘোষণার প্রতিক্রিয়ায় গতকাল

 রাজারবাগ শরীফে তিনি একথা বলেন।

মুজাদ্দিদে আ’যম, রাজারবাগ শরীফের হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বলেন, কুরআন শরীফে ইরশাদ হয়েছে, ‘কোন নর ও নারীর জন্য কস্মিনকালেও জায়িয হবে না, যে বিষয়ে আল্লাহ পাক ও তাঁর রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যে ফায়সালা বা নির্দেশ দিয়েছেন তার বিপরীত মত পোষণ করা। অর্থাৎ কোন ঈমানদার পুরুষ ও ঈমানদার নারীর সে বিষয়ে ভিন্ন মত প্রকাশ করার ক্ষমতা নেই।  যে ব্যক্তি আল্লাহ পাক ও তাঁর রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর ফায়সালা বা আদেশের বিপরীত মত পোষণ করে বা অমান্য করে সে প্রকাশ্য গুমরাহে গুমরাহ হবে।’ (সূরা আহযাব)

মুজাদ্দিদে আ’যম, রাজারবাগ শরীফের হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বলেন, ছবি তোলা আল্লাহ পাক-এর নিষেধ। আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নিষেধ। সেক্ষেত্রে উদ্ধৃত আয়াত শরীফ অনুযায়ী নির্বাচন কমিশনের ছবি তোলার পক্ষে আইন জারির কোনো ক্ষমতা নেই। আর তারপরেও যদি তারা করে তবে তারা প্রকাশ্য পথভ্রষ্ট। যা আয়াত শরীফে বর্ণিত হয়েছে।

মুজাদ্দিদে আ’যম, রাজারবাগ শরীফের হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বলেন, হাদীছ শরীফে বর্ণিত হয়েছে, ক্বিয়ামতের দিন ঐ ব্যক্তির সবচেয়ে কঠিন শাস্তি হবে যে ছবি তোলে বা আঁকে।’ (বুখারী শরীফ)

আর নির্বাচন কমিশন ছবি তোলার আদেশ দিয়ে হাদীছ শরীফে উদ্ধৃত ক্বিয়ামতের ময়দানে সবচেয়ে কঠিন শাস্তি পাবার উপযুক্ত হচ্ছে এবং অন্যকেও করছে।

মুজাদ্দিদে আ’যম, রাজারবাগ শরীফের হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বলেন, হাদীছ শরীফে বর্ণিত রয়েছে, যে কেউ একটা বদ কাজের সূচনা করলো, যতজন লোক তাতে জড়িত হলো সবার বদকাজের গুনাহ ঐ গুনাহ্র সূচনাকারীর ঘাড়ে বর্তাবে।’ এর প্রেক্ষিতে বলতে হয় যে, ছবি তোলার মত হারাম কাজের সূচনা করে নির্বাচন কমিশন লক্ষ-কোটি হারাম গুনাহ্র বোঝা নিজেদের ঘাড়ে চাপাবে।

মুজাদ্দিদে আ’যম, রাজারবাগ শরীফের হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বলেন, হাদীছ শরীফে ইরশাদ হয়েছে, ‘যারা ছবি তুলবে ক্বিয়ামতের ময়দানে আল্লাহ পাক তাদেরকে সেসব ছবিতে প্রাণ দিতে বলবেন। কিন্তু তারা তা পারবে না। তখন আল্লাহ পাক তাতে প্রাণ দিবেন। আর তারা তখন জীবন্ত হয়ে ছবি তুলনেওয়ালাকে পাকড়াও করবে।’ এ হাদীছ শরীফ থেকে প্রতিভাত হয় যে, নির্বাচন কমিশন ক্বিয়ামতের ময়দানে লক্ষ-কোটি আক্রমণকারী দ্বারা আক্রান্ত হবে।

মুজাদ্দিদে আ’যম, রাজারবাগ শরীফের হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বলেন, কুরআন শরীফে আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি দ্বীন ইসলাম ব্যতীত অন্য কোন ধর্ম তলব বা অনুসরণ করে তার থেকে তা কখনও গ্রহণ করা হবে না এবং সে পরকালে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে।’ আয়াত শরীফের দ্বারা প্রতিভাত হয় যে, নির্বাচন কমিশনের ছবি তোলার ফায়সালা গ্রহণ করা হবে না। এবং তারা পরকালে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে।

মুজাদ্দিদে আ’যম, রাজারবাগ শরীফের হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বলেন, হাদীছ শরীফে ইরশাদ হয়েছে, ‘যে ব্যক্তি যে সম্প্রদায়ের সাথে মিল রাখে তার হাশর-নশর তার সাথে হবে।’ এ হাদীছ শরীফ দ্বারা প্রতিভাত হয় যে, যারা ছবি তুলবে তাদের হাশর-নশর পৌত্তলিকদের সাথে হবে।

মুজাদ্দিদে আ’যম, রাজারবাগ শরীফের হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বলেন, কুরআন শরীফে ইরশাদ হয়েছে, ‘যারা আল্লাহ পাক-এর হুকুম অনুযায়ী কাজ করে না তারা জালিম, ফাসিক, কাফির।’ নির্বাচন কমিশন আল্লাহ পাক-এর হুকুমের খিলাফ কাজ করে এ আয়াত শরীফে বর্ণিত হুকুমের আওতাভুক্ত হয়েছে।

মুজাদ্দিদে আ’যম, রাজারবাগ শরীফের হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বলেন, হাদীছ শরীফে ইরশাদ হয়েছে, “যারা সুন্নতের বিরোধিতা করবে তাদেরকে আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ক্বিয়ামতের দিন হাউজে কাউছারের পানি নিতে গেলে বলবেন, ছোহকান, ছোহকান অর্থাৎ দূর হয়ে যাও, দূর হয়ে যাও।’ (নাউযুবিল্লাহ) নির্বাচন কমিশন সুন্নতের বিরোধিতা করে ছবি তোলার কথা বলে সে অবস্থায়ই পতিত হবে। (নাউযুবিল্লাহ)

মুজাদ্দিদে আ’যম, রাজারবাগ শরীফের হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বলেন, আল্লাহ পাক ও তাঁর হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর হুকুমের খিলাফ হুকুম দেয়ায় নির্বাচন কমিশন দুনিয়া ও আখিরাতে কঠিন ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তাদের কঠিন অবস্থা হবে কবরে, সুওয়াল-জাওয়াবে। (নাউযুবিল্লাহ)

মুজাদ্দিদে আ’যম, রাজারবাগ শরীফের হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বলেন, আল্লাহ পাক-এর সন্তুষ্টি সবচেয়ে বড় নিয়ামত। যার সাথে জড়িত লক্ষ-কোটি নিয়ামত। দুনিয়াতে ২২টি সুবিধা বঞ্চিত করে নির্বাচন কমিশন সে লক্ষ-কোটি নিয়ামত থেকে বঞ্চিত হবে।

মুজাদ্দিদে আ’যম, রাজারবাগ শরীফের হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বলেন, আল্লাহ পাক-এর অসন্তুষ্টি হলো সবচেয়ে বড় আযাব। এর সাথে জাহান্নামের লক্ষ-কোটি শাস্তি জড়িত। ছবি না তুলনেওয়ালাদের প্রতি হয়রানির ব্যবস্থা করে নির্বাচন কমিশন সে লক্ষ-কোটি আযাবের মধ্যে পড়বে।

মুজাদ্দিদে আ’যম, রাজারবাগ শরীফের হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বলেন, ছহীহ ইসলামী ইলম না থাকায় উলামায়ে ‘ছূ’দের দ্বারা প্রতারিত হয়ে তারা এরকম উল্টাপাল্টা কথা বলছে। তাদের উচিত উলামায়ে ‘ছূ’দের ত্যাগ করে তওবা করা ও দ্বীন ইসলামে ফিরে আসা।

(অসমাপ্ত)

পরবর্তী সংখ্যার অপেক্ষায় থাকুন

ফতওয়া বিভাগ- গবেষণা কেন্দ্র মুহম্মদিয়া জামিয়া শরীফ ইসলামের নামে গণতন্ত্র ও নির্বাচন করা, পদপ্রার্থী হওয়া, ভোট চাওয়া ও দেয়া হারাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া- (১৫)

ফতওয়া বিভাগ- গবেষণা কেন্দ্র মুহম্মদিয়া জামিয়া শরীফ ইসলামের নামে গণতন্ত্র ও নির্বাচন করা, পদপ্রার্থী হওয়া, ভোট চাওয়া ও দেয়া হারাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া- (৮)

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ, মহাসম্মানিত ইজমা শরীফ এবং মহাসম্মানিত ক্বিয়াস শরীফ উনাদের আলোকে- সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦তামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মানহানীকারীদের একমাত্র শরঈ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড এবং তৎসংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে আখাছ্ছুল খাছ সম্মানিত বিশেষ ফতওয়া মুবারক (৩৩তম পর্ব)

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ, মহাসম্মানিত ইজমা শরীফ এবং মহাসম্মানিত ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে সম্মানিত ও পবিত্র ইসলামী মাস ও বিশেষ বিশেষ রাত ও দিন মুবারক উনাদের সম্মানিত আমল মুবারকসমূহ উনাদের গুরুত্ব, ফযীলত এবং বেদ্বীন-বদদ্বীনদের দিবসসমূহ পালন করা হারাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৫৯তম পর্ব)

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ, মহাসম্মানিত ইজমা শরীফ এবং মহাসম্মানিত ক্বিয়াস শরীফ উনাদের আলোকে- মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক যারা ভাঙবে, ভাঙ্গার কাজে সাহায্য-সহযোগিতা করবে বা সমর্থন করবে তাদের প্রত্যেকের শরঈ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড ও তৎসংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া- (পর্ব-৩৪)