নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আখাছছুল খাছ তায়াল্লুক নিসবত মুবারক ব্যতীত হাক্বীক্বী ইলম অর্জন করা কখনোই সম্ভব নয়

সংখ্যা: ২৯৭তম সংখ্যা | বিভাগ:

وَمَاۤ اُوْ تِيْـتُمْ مِنَ الْعِلْمِ اِلَّا قَلِيْلًا

অর্থ:  (হে মানুষেরা) তোমাদেরকে সামান্য ইলম প্রদান করা হয়েছে। (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা বনী ইসলাইল শরীফ: সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ- ৮৫)

অন্য আয়াত শরীফে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-

يَـرْفَعِ اللهُ الَّذِيْنَ اٰمَنُـوْا مِنْكُمْ وَالَّذِيْنَ أُوتُوا الْعِلْمَ دَرَجَاتٍ

অর্থ: নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি তোমাদের মধ্যে যারা ঈমানদার তাদের এবং  যারা ইলম প্রাপ্ত উনাদের মর্যদা বৃদ্ধি করেছেন, সমুন্নত করেছেন। (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা মুজাদালাহ শরীফ: সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ-১১)

আর পবিত্র হাদীছ শরীফে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-

عَنْ حَضْرَتْ مُعَاوِيَةَ رَضِىَ اللهُ تَـعَالٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اِنَّمَا اَنَا قَاسِمٌ وَاللهُ يُعْطِىْ

অর্থ: হযরত মুয়াবিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি যাবতীয় নিয়ামত রাজী আমাকে হাদিয়া করেছেন। আমি সেগুলো বণ্টন করে থাকি।

উপরোক্ত পবিত্র আয়াত শরীফদ্বয় এবং হাদীছ শরীফ দ্বারা প্রতিভাত হয় যে, মাখলুকাতকে সামান্য ইলম দেওয়া হয়েছে। তবে নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে নিসবত মুবারক স্থাপনকারীগণ তথা উনার মুবারক বণ্টনে হিসসা লাভকারীগণ উনাদেরকে ইলম দেওয়া হয়েছে এবং উনাদের মর্যাদাও সমুন্নত করা হয়েছে।

অর্থাৎ নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আখাছছুল খাছ নিসবত মুবারক এবং তায়াল্লুক মুবারক ব্যতীত মাখলুকাতের কেউই কোন নিয়ামত, রহমত কস্মিনকালেও হাছিল করতে পারবে না। অপর দিকে নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আখাছ্ছুল খাছ নিসবত তায়াল্লুক মুবারক ব্যতীত কখনোই হাক্বীক্বী ইলম অর্জন করা সম্ভব নয়।

এ প্রসঙ্গে ইমাম ইবনু জাওযী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার একটি ঘটনা বিশেষভাবে উল্লেখ্য। তিনি একবার সম্মানিত ও পবিত্র সূরা আর-রহমান শরীফ উনার ছোট্ট একখানা পবিত্র আয়াত শরীফ-

كُلَّ يَـوْمٍ هُوَ فِىْ شَأْنٍ

উনার তাফসীর করলেন একাধারা দু্ই বৎসর। তবুও যেন তাফসীর বাকী রয়ে গেল। উনার ভিতরে একটা ফখরের ভাব পয়দা হলো, নিশ্চয়ই তিনি মস্ত বড় একজন তাফসীরকারক। উনার মতো তাফসীরকারক হয়তো আর কেউ নেই। অন্যথায় একখানা আয়াত শরীফ উনার তাফসীর দুই বৎসর করার পরও বাকী থাকার কথা নয়। এরই মধ্যে মহান আল্লাহ পাক উনার ইচ্ছায় এক আগন্তুক উনার তাফসীরের মজলিসে গিয়ে উনাকে প্রশ্ন করলেন, হুযূর! আপনি তাফসীর করছেন যে, মহান আল্লাহ পাক তিনি প্রত্যহ একেক শান মুবারকে অবস্থান করেন। বলুন তো মহান আল্লাহ পাক তিনি এখন কোন শান মুবারকে আছেন এবং এখন তিনি কি করছেন? এ প্রশ্ন শুনে হযরত ইমাম ইবনু জাওযী রহমতুল্লাহি আলাইহি চুপ হয়ে গেলেন। কোন উত্তর দিতে পারলেন না।

দ্বিতীয় দিন আবার যখন তিনি তাফসীর করা শেষ করলেন সাথে সাথে উক্ত আগন্তুক ব্যক্তি একই প্রশ্ন করলেন, সেদিনও তিনি কোন জাওয়াব দিতে পারলেন না। তৃতীয় দিনও একই ঘটনা ঘটলো। তিনি যারপর নেই লজ্জিত হলেন। রাতের বেলা তিনি খুব কান্নাকাটি করলেন, তওবা-ইস্তিগফার করলেন এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উসীলা দিয়ে ফায়সালা কামনা করে ঘুমিয়ে পড়লেন।

স্বপ্নযোগে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সাক্ষাৎ মুবারক দিয়ে বললেন, হে ইবনে জাওযী! আপনার কি হয়েছে? ইবনে জাওযী রহমতুল্লাহি আলাইহি নিজের অক্ষমতার কথা ব্যক্ত করলেন। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন, যিনি আপনাকে প্রশ্ন করছেন, উনাকে আপনি চিনেন? তিনি বললেন যে, না। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন, প্রশ্নকারী ব্যক্তি হচ্ছেন হযরত খিযির আলাইহিস সালাম। তিনি আগামীকালও আসবেন এবং আপনাকে উক্ত বিষয়ে আবার প্রশ্ন করবেন। তখন আপনি জাওয়াবে বলবেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি হচ্ছেন ক্বদীম। উনার শান হচ্ছেন আযালী-আবাদী শান মুবারক। কাজেই, তিনি নতুন করে কোন কাজ শুরু করেন না। তিনি শুরুতে যা করেছেন এখনও তাই করেন। তবে কখনও কখনও উনার কোন কোন  শান মুবারক প্রকাশ পায়। সুবহানাল্লাহ!

সত্যিই পরের দিন আগন্তুক ব্যক্তি এসে যখন প্রশ্ন করলেন তখন সহসাই হযরত ইবনে জাওযী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি প্রশ্নের জাওয়াব দিয়ে দিলেন। জাওয়াব পেয়ে আগন্তুক ব্যক্তি তিনি বললেন, হে ইবনে জাওযী রহমতুল্লাহি আলাইহি! আপনি আপনার যিনি নবী ও রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি অধিক পরিমাণে ছলাত-সালাম পেশ করুন যিনি আপনাকে আমার সুওয়ালের জাওয়াব জানিয়ে দিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ!

বুঝা গেল, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে তায়াল্লুক-নিসবত ব্যতীত পবিত্র কুরআন শরীফ কিংবা পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের হাক্বীক্বী তাফসীর বা ব্যাখ্যা জানা ও করা সম্ভব নয়।

বলার অপেক্ষা রাখেনা যে, বর্তমান সময়ে নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক নিসবত হাসিল করত, হাক্বীক্বী ইলম অর্জন করতে হলে রাজারবাগ শরীফের মহাসম্মানিত মুরশিদ ক্বিবলা, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার মুবারক ছোহবত ইখতিয়ারের কোন বিকল্প নেই। কেননা তিনি হচ্ছেন যামানার লক্ষ্যস্থল ইমাম ও মুজতাহিদ। তিনি সকলের জন্য সর্বোত্তম উসিলা মুবারক। তিনি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পরিপূর্ণ নকশা মুবারক। যা বলার অপেক্ষাই রাখে না।

প্রসঙ্গত একটি বিষয় বিশেষভাবে উল্লেখ্য যে, বিগত ১৪৩৪ হিজরীতে রাজারবাগ শরীফের মহাসম্মানিত মুরশিদ ক্বিবলা, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম তিনি দীর্ঘ দিন পবিত্র জুমুয়া শরীফ উনার খুতবাতে মহান আল্লাহ পাক উনার কালাম-

وَلَا تُـحِلُّوْا شَعَآئِرَ اللهِ

এই পবিত্র আয়াত শরীফ উনার তাফসীর মুবারক করেন। তখন মহান আল্লাহ পাক এবং নূরে মুসাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের একখানা বিশেষ শান মুবারক জাহির হয়। রাজারবাগ শরীফের মহাসম্মানিত মুরশিদ ক্বিবলা, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম তিনি বর্ণনা করেন, “উনাকে প্রাচীর বেষ্টিত বিস্তীর্ণ পরিধির আযীমুশ্বান একটি স্থান দেখানো হয়। যেখানে সমস্ত কিতাবাদী ও লিখনী একত্রিত করা হয়। আর এ কিতাবাদীসমূহ পরিদর্শিত স্থানের খুব সামান্য অংশই দখল করেছে। সেখানে মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ হতে বলা হলো যে,  এ সমস্ত কিতাবাদী ও লিখনীতে অনেক ভুল। এগুলো কেবল পুথিগত বিদ্যা এবং হাকীকত শূণ্য। অতপর নূরে মুসাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি জাহির মুবারক হলেন এবং একই বিষষের পূণরাবৃত্তি করেন। পরিশেষে উনাকে যাবতীয় ইলম ও হিকমতেপূর্ণ প্রাচীর বেষ্টিত বিস্তীর্ণ পরিধির আযীমুশ্বান অপর একটি স্থান দেখানো হয়। উনাকে বলা হলো, যাবতীয় ইলমেপূর্ণ এই সমস্ত ইলম আপনাকে হাদিয়া মুবারক করা হলো। সুবহানাল্লাহ!” অর্থাৎ, রাজারবাগ শরীফের মহাসম্মানিত মুরশিদ ক্বিবলা, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনাকে মহান আল্লাহ পাক এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের পক্ষ হতে সমস্ত বিষয়ে সর্বপ্রকার ইলম মুবারক আনুষ্ঠানিকভাবে হাদিয়া মুবারক করা হয়েছে। যা সাধারণ মানুষের চিন্তা-কল্পনার উর্ধ্বে।

মূল কথা হলো, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে যার যত বেশি নিসবত মুবারক স্থাপিত হয়েছে, তিনি তত বেশি নিয়ামত হাছিল করবেন। অপর দিকে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে যার যত বেশি দূরত্ব, সে তত বেশি লাঞ্চিত ও অপমাণিত।

কাজেই, সকলের দায়িত্ব কর্তব্য হলো, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে দায়েমী নিসবত মুবারক স্থাপনের সর্বোচ্চ কোশেশ করা। আর এ ক্ষেত্রে রাজারবাগ শরীফের মহাসম্মানিত মুরশিদ ক্বিবলা, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার মুবারক পৃষ্ঠপোষকতায় জারিকৃত অনন্তকালব্যাপী সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ মাহফিল সর্বাধিক সহজ অবলম্বন। যা বলাই বাহুল্য।

মহান আল্লাহ পাক তিনি সকলকে বিষয়টি হাকীকীভাবে উপলব্ধি করত তা আমলে বাস্তবায়ন করার তাওফীক দান করুন। আমীন।

-আহমদ নুছাইর।

মহান আল্লাহ পাক তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে নবী-রসূল হিসেবে, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হিসেবে, উনার মাহবূব, মুরাদ ও সমগ্র কায়িনাতের মালিক হিসেবে সৃষ্টি মুবারক করেছেন

নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আব্বা-আম্মা আলাইহিমাস সালাম উনারাই হচ্ছেন সম্মানিত ঈমান। উনাদের মুহব্বত মুবারক ব্যতীত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কালিমা শরীফ পূর্ণ হয় না

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের প্রতি সমস্ত সৃষ্টির হক

মওযূ ও ছহীহ হাদীছ শরীফ নির্ণয়ের প্রকৃত মানদণ্ড

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আবনাউ রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত বানাতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র গোলামী মুবারক করা সমস্ত সৃষ্টির জন্য ফরয