নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনিসমস্ত সুগন্ধির জামে’। সুগন্ধি ব্যবহার করা মহাসম্মানিত মহাপবিত্র সুন্নত মুবারক

সংখ্যা: ২৯৮তম সংখ্যা | বিভাগ:

সম্মানিত দ্বীন ইসলামে পুরুষ-মহিলা সকলের জন্য সুগন্ধি ব্যবহার করা জায়িয ও মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক উনার অন্তভুর্ক্ত। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সুগন্ধি অত্যন্ত পছন্দ করতেন এবং ব্যবহার মুবারক করতেন। সুবহানাল্লাহ!

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে- “হযরত আনাস ইবনে মালিক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, “নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যখন কোন পথ দিয়ে কোথাও মহাসম্মানিত তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করতেন, তখন উনার মহাসম্মানিত সুগন্ধি মুবারক সেই পথে ছড়িয়ে পড়ার কারণে আমরা অনুধাবন করতে পারতাম যে, তিনি এই পথে গমন করে কোথাও মহাসম্মানিত তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করেছেন।” (আবু দাউদ শরীফ, শামায়েলে তিরমিযী শরীফ, আখলাকুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)

নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সকল সুঘ্রাণের মহাসম্মানিত মালিক। উনার থেকে সর্বদা বেমেছাল সুঘ্রাণ মুবারক প্রকাশিত হতেন। যা অন্য কোথাও পাওয়া যায় না। তাই বিশিষ্ট ছাহাবী, হযরত আনাস বিন মালিক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু যিনি; একাধারে ১০ বছর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আন্জাম মুবারক দিয়েছেন। তিনি বলেন, “আমি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত খুশবু মুবারক উনার চেয়ে অন্তরমোহিত কোনো ঘ্রাণ, সুঘ্রাণ মুবারক (অন্য কোথাও) কখনো গ্রহণ করিনি।” সুবহানাল্লাহ! (মুসলিম শরীফ)

হযরত আনাস বিন মালিক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, আমি কখনো, কোন মৃগনাভী কিংবা এমন কোন আতর পাইনি, যার সুগন্ধি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত মহাপবিত্র নূরুত ত্বীব মুবারক (মহাসম্মানিত মহাপবিত্র ঘাম মুবারক) থেকে উত্তম ছিল। (অর্থাৎ সমস্ত সুগন্ধির থেকে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত মহাপবিত্র নূরুত ত্বীব মুবারক (মহাসম্মানিত মহাপবিত্র ঘাম মুবারক) ছিলেন সর্বশ্রেষ্ট, বেমেছাল। সুবহানাল্লাহ! (শামায়েলে তিরমিযী শরীফ, আখলাকুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)

সুগন্ধি ব্যবহার করা খাছ সুন্নত মুবারক:

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-

عَنْ حَضْرَتْ أَنَسٍ رَضِىَ اللهُ تَـعَالٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حُبِّبَ إِلَيَّ مِنَ الدُّنْـيَا النِّسَاءُ وَالطِّيْبُ وَجُعِلَ قُـرَّةُ عَيْنِيْ فِي الصَّلَاةِ

অর্থ: হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন- “দুনিয়ার মধ্যে আমার কাছে মহাসম্মানিত হযরত আযওয়াজে মুত্বাহ্হারাত আলাইহিন্নাস সালাম (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদেরকে) ও খুশবুকে প্রিয় করা হয়েছে। আর পবিত্র নামাযকে করা হয়েছে আমার নূরুল মুনাওওয়ার মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র চক্ষু মুবারক) শীতলকারী অর্থাৎ উম্মতের চক্ষুকে শীতলকারী।” (আহমাদ শরীফ- ১২২৯৩, নাসাঈ শরীফ- ৩৯৩৯, হাকেম- ২৬৭৬, ছহীহুল জামে শরীফ- ৩১২৪, আল মুনাব্বেহাত, আখলাকুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে-

قَالَتْ سَيِّدَتُـنَا حَضْرَتْ اُمُّ الْمُؤْمِنِيْنَ الثَّالِثَةُ الصِّدِّيْـقَةُ عَلَيْـهَا السَّلَامُ أَنَا طَيَّـبْتُ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ثُمَّ طَافَ فِيْ نِسَائِهٖ عَلَيْهِنَّ السَّلَامُ

অর্থ: সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আমি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সুগন্ধি মুবারক লাগিয়ে দিয়েছি, অতঃপর তিনি সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের সাথে মহাসম্মানিত সাক্ষাৎ মুবারক করেছেন। (বুখারী শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ নং: ২৭০)

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে-

عَنْ حَضْرَتْ أَبِيْ أَيُّـوْبَ رَضِىَ اللهُ تَـعَالٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَرْبَعٌ مِنْ سُنَنِ الْمُرْسَلِيْنَ الْحَيَاءُ وَالتَّـعَطُّرُ وَالسِّوَاكُ وَالنِّكَاحُ

অর্থ: হযরত আবূ আইয়্যূব আল-আনছারী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, চারটি জিনিস হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত সুন্নত মুবারক – লজ্জা-শরম, সুগন্ধি ব্যবহার করা, মিসওয়াক করা এবং বিবাহ-শাদী মুবারক করা। (মিশকাত শরীফ, আর রাদ্দু আলা আল-কাত্তানী পৃঃ ১২, তিরমিযী শরীফ- ১০৮০)

মূলত, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নিজেই ছিলেন সমস্ত সুগন্ধির মহাসম্মানিত উৎস মুবারক। তারপরেও তিনি উম্মতকে তা’লীম দেয়ার জন্য সুগন্ধি ব্যবহার মুবারক করেছেন। খুশবু ব্যবহার নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার একখানা মহান আদর্শ মুবারক। সুবহানাল্লাহ!

সুগন্ধি হাদিয়া দেয়া-নেয়া উভয়টাই মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক:

মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-

قَالَ حَضْرَتْ أَنَسٌ رَضِىَ اللهُ تَـعَالٰى عَنْهُ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ لاَ يَـرُدُّ الطِّيْبَ‏.‏

অর্থ: হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেছেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সুগন্ধি ফিরিয়ে দিতেন না। (বুখারী শরীফ: ২৫৮২)

মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে-

قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اِذَا اُعْطِيَ اَحَدُكُمُ الرَّيْحَانَ فَلَا يَـرُدَّهٗ فَإِنَّهٗ خَرَجَ مِنَ الْجَنَّةِ

অর্থ: নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, যখন তোমাদের কাউকে সুগন্ধি (হাদিয়া) দেয়া হয়, তখন সে যেন তা ফিরিয়ে না দেয়। কেননা তা সম্মানিত জান্নাত হতে নিঃসৃত। (তিরমিযী শরীফ: ২৭৯১)

অর্থাৎ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত খিদমত মুবারকে সুগন্ধি/খুশবু হাদিয়া মুবারক হিসেবে পেশ করা হলে, তিনি তা গ্রহণ করতেন। ফিরিয়ে দিতেন না এবং সুগন্ধি হাদিয়া আসলে তা ফিরিয়ে দিতে নিষেধ করেছেন। কাজেই সুগন্ধি হাদিয়া দেয়া-নেয়া উভয়টাই মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক উনার অন্তভুর্ক্ত।

বিশেষ দিবসে সুগন্ধি ব্যবহার করা মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক:

মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-

عَنْ حَضْرَتْ سَلْمَانَ الْفَارِسِيِّ رَضِىَ اللهُ تَـعَالٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنِ اغْتَسَلَ يَـوْمَ الْجُمُعَةِ، وَتَطَهَّرَ بِمَا اسْتَطَاعَ مِنْ طُهْرٍ، ثُمَّ ادَّهَنَ أَوْ مَسَّ مِنْ طِيْبٍ، ثُمَّ رَاحَ فَـلَمْ يُـفَرِّقْ بَـيْنَ اثْـنَـيْنِ، فَصَلّٰى مَا كُتِبَ لَهٗ، ثُمَّ إِذَا خَرَجَ الْإِمَامُ أَنْصَتَ، غُفِرَ لَهٗ مَا بَـيْـنَهٗ وَبَيْنَ الْجُمُعَةِ الْأُخْرٰى‏‏.‏

অর্থ: হযরত সালমান ফারসী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, যে ব্যক্তি পবিত্র জুমু‘আর দিন গোসল করে এবং যথাসম্ভব উত্তমরূপে পবিত্রতা অর্জন করে, অতঃপর তেল মেখে নেয় অথবা সুগন্ধি ব্যবহার করে, অতঃপর (সম্মানিত মসজিদে) যায়, আর দু’জনের মধ্যে ফাঁক করে না এবং তার ভাগ্যে নির্ধারিত পরিমাণ নামায আদায় করে। আর ইমাম যখন (খুত্বার জন্য) বের হন তখন চুপ থাকে। তার এ পবিত্র জুমু‘আহ এবং পরবর্তী পবিত্র জুমু‘আহর মধ্যবর্তী সকল গুনাহ ক্ষমা করে দেয়া হয়। (বুখারী শরীফ: ৯১০)

নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অন্যদেরকে সাধ্যমতো সুগন্ধি ব্যবহারের আদেশ মুবারক দিয়েছেন। বিশেষ করে লোকসমাগমে গেলে, পবিত্র জুমু‘আর দিন, পবিত্র ঈদের দিন সুগন্ধি ব্যবহারের বিশেষ তাকিদ রয়েছে।

হযরত আবু সাঈদ খুদরী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, পবিত্র জুমু‘আর দিন যথাসম্ভব তোমরা সুগন্ধি ব্যবহার করো।’ (নাসায়ী শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ নং- ১৩৫৮)

যেসকল সুগন্ধি বেশি ব্যবহার করা

খাছ সুন্নত মুবারক:

নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যে সকল সুগন্ধি মুবারক ব্যবহার করেছেন তা নিম্নে কিছু তুলে ধরা হলো।

পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে- সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম উনার কাছে যেসব সুগন্ধি মুবারক থাকত, তার থেকে উত্তম সুগন্ধি মুবারক তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে লাগিয়ে দিতেন। (নাসায়ী শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ: ২৬৪১)

মেশক-আম্বর: নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মেশক খুব পছন্দ মুবারক করতেন। হরিণের নাভি থেকে এটা তৈরি করা হয়। এদেশে মেশককে কস্তুরিও বলা হয়।

পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-

عَنْ حَضْرَتْ أَبِيْ سَعِيْدٍ الْخُدْرِيِّ رَضِىَ اللهُ تَـعَالٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ‏ أَطْيَبُ الطِّيْبِ الْمِسْكُ

অর্থ: হযরত আবূ সাঈদ খুদরী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, মেশক সবচাইতে উত্তম সুগন্ধি। (মুসলিম শরীফ, তিরমিযী শরীফ-৯৯১)

চন্দন ও জাফরান: ‘আল-কামেল’ নামক গ্রন্থে সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম উনার থেকে বর্ণিত, ‘নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রিয় সুগন্ধি ছিল মেশক ও চন্দন।’

‘তামহীদ’ নামক কিতাবে সাইয়্যিদুনা হযরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি জাফরানের সুগন্ধি ব্যবহার করেছেন।

পুরুষ- মহিলার সুগন্ধি ব্যবহারের ক্ষেত্রে পার্থক্য রয়েছে। সুগন্ধির প্রকারভেদ :

সুগন্ধি দুই প্রকার- ১. রং গাঢ়, কিন্তু সুঘ্রাণ কম। ২. সুঘ্রাণ বেশি, কিন্তু রং খুবই হালকা।

মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে পুরুষদেরকে কম রংযুক্ত ও সুঘ্রাণযুক্ত সুগন্ধি ব্যবহার করতে বলা হয়েছে। কেননা, রং পুরুষের জন্যে সমীচীন নয়।

আর মহিলাদের সুগন্ধি রঙিন ও অপেক্ষাকৃত কম সুঘ্রাণযুক্ত হওয়া চাই, যাতে এ সুঘ্রাণ কোনো পর পুরুষ পর্যন্ত না পৌঁছে। হঁ্যা, মহিলারা যদি গৃহের অভ্যন্তরে থাকে- বাহিরে বের না হয়, তাহলে যে কোনো ধরনের সুগন্ধিই ব্যবহার করতে পারবে।

মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-

عَنْ حَضْرَتْ أَبِيْ هُرَيْـرَةَ رَضِىَ اللهُ تَـعَالٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ‏ طِيْبُ الرِّجَالِ مَا ظَهَرَ رِيْحُهٗ وَخَفِيَ لَوْنُهٗ وَطِيْبُ النِّسَاءِ مَا ظَهَرَ لَوْنُهٗ وَخَفِيَ رِيْحُهٗ

অর্থ: হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, ‘পুরুষ এমন সুগন্ধি ব্যবহার করবে, যার থেকে সুবাস ছড়াবে। কিন্তু রং কম থাকবে। আর মহিলাদের সুগন্ধি হবে, যার মধ্যে রং থাকবে, কিন্তু সুবাস কম থাকবে।’ (তিরমিযী শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ নং: ২৭১১)

মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে-

عَنْ حَضْرَتْ عِمْرَانَ بْنِ حُصَيْنٍ رَضِىَ اللهُ تَـعَالٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ لِي النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ‏ إِنَّ خَيْـرَ طِيْبِ الرَّجُلِ مَا ظَهَرَ رِيحُهٗ وَخَفِيَ لَوْنُهٗ وَخَيْـرَ طِيْبِ النِّسَاءِ مَا ظَهَرَ لَوْنُهٗ وَخَفِيَ رِيحُهٗ ‏.‏

অর্থ: হযরত ইমরান ইবনে হুসাইন রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমাকে ইরশাদ মুবরক করেন, নিশ্চয়ই পুরুষের জন্য উত্তম সুগন্ধি হলো, যে সুগন্ধির ঘ্রাণ আছে কিন্তু রং কম এবং মহিলাদের জন্য উত্তম সুগন্ধি হলো, যে সুগন্ধির রং আছে কিন্তু ঘ্রাণ কম। (তিরমিযী শরীফ- ২৭৮৮)

যে সময় সুগন্ধি ব্যবহার থেকে

বিরত থাকতে হবে:

১.   পবিত্র হজ্জ ও উমরাহ করার সময় ইহরাম অবস্থায়।

২. মহিলাদের জন্য ইদ্দত/ শোক পালনরত অবস্থায়।

সুগন্ধি/আতর ব্যবহারের মহাসম্মানিত সুন্নতী তারতীব মুবারক:

১. ডান হাতের তালুতে নেয়া।

২. নাকে দেওয়া।

৩. কানে দেওয়া।     ৪. এরপর শরীরে মাখা।

৫. সবসময় আতর ব্যবহার করা।

৬. পবিত্র ঈদের দিনে এবং পবিত্র জুমুআর দিনে আতর লাগানো। বিশেষ বিশেষ দিবস বা আইয়্যামুল্লাহ শরীফে আতর লাগানো মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক।

৭. কোন মজলিসে শরীক হওয়ার আগে আতর লাগানো।

৮. মৃত ব্যক্তিকে কাফন পরিধান করানোর সময় আতর দেওয়া।

৯. আহাল-আহলিয়া (নিরিবিলি) অবস্থানের পূর্বে।

উল্লেখ্য, সুগন্ধি মন-মস্তিস্কের উত্তম খাদ্য। যা দ্বারা তা তরতাজা থাকে, শক্তি অর্জিত হয় এবং মনে প্রশান্তি আসে। ইবাদত-বন্দেগী, মুরাকাবা-মোশাহাদা, নামায ও যিকির-আযকারে খুশবু ব্যবহার দিল ইতমিনানের কারণ। সুবহানাল্লাহ!

মহান আল্লাহ পাক তিনি সকলকে সর্বদা পবিত্র সুন্নত মুবারক অনুসরণ-অনুকরণ করার তাওফীক্ব দান করুন। আমীন।

-আহমদ হুসাইন

আল হাদ্বির ওয়ান নাযির, ছাহিবু লাওলাক, ছাহিবু ক্বাবা ক্বাওসাইনি আও আদনা, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি শুধু মহান আল্লাহ পাক তিনি নন; এছাড়া সব

সম্মানিত ও পবিত্র সূরা তাহরীম শরীফ উনার শানে নুযূলকে কেন্দ্র করে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র শান মুবারক উনার খিলাফ কুফরী বক্তব্য ও তার খণ্ডনমূলক জবাব

নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের যারা বিরোধী তাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা এবং যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা সমস্ত উম্মতের জন্য ফরযে আইন

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ উনার সম্মানার্থে খরচ করার বেমেছাল ফযীলত মুবারক

সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুননাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি শারে’ বা সম্মানিত শরীয়ত প্রণেতা