নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় ইসিম বা নাম মুবারক যতবার উচ্চারণ করা হবে এবং শুনা হবে, ততবারই উনার প্রতি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র দুরূদ শরীফ পাঠ করা ফরয

সংখ্যা: ২৯৮তম সংখ্যা | বিভাগ:

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছেন-

عَنْ حَضْرَتْ اَبـِـىْ هُرَيْـرَةَ رَضِىَ اللهُ تَـعَالـٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ رَغِمَ اَنْفُ رَجُلٍ ذُكِـرْتُ عِنْدَهٗ فَـلَمْ يُصَلِّ عَلَىَّ

অর্থ: “হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, ওই ব্যক্তি ধ্বংস হোক, যার সম্মুখে আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় ইসিম বা নাম মুবারক উচ্চারণ করা হলো, অথচ সে আমার প্রতি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ছলাত মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র দুরূদ শরীফ) পাঠ করলো না।” না‘ঊযুবিল্লাহ! (তিরমিযী শরীফ)

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছেন-

عَنْ اِمَامِ الْاَوَّلِ سَيِّدِنَا حَضْرَتْ كَـرَّمَ اللهُ وَجْهَهٗ عَلَيْهِ السَّلَامُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَلْـبَخِيْلُ الَّذِىْ مَنْ ذُكِـرْتُ عِنْدَهٗ فَـلَمْ يُصَلِّ عَلَىَّ

অর্থ: “ইমামুল আউওয়াল সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, ওই ব্যক্তি সবচেয়ে বড় বখীল (কৃপণ), যার সম্মুখে আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় ইসিম বা নাম মুবারক উচ্চারণ করা হয়, অথচ সে আমার প্রতি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ছলাত মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র দুরূদ শরীফ) পাঠ করে না।” না‘ঊযুবিল্লাহ!  (তিরমিযী শরীফ)

আর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বখীল বা কৃপণদের ব্যাপারে ইরশাদ মুবারক করেন,

اَلْبَخِيْلُ عَدُوُّ اللهِ وَلَوْ كَانَ عَابِدًا

অর্থ: “বখীল মহান আল্লাহ পাক উনার শত্রু, যদিও সে আবিদ অর্থাৎ ইবাদতগুজার হোক না কেন।” না‘ঊযুবিল্লাহ!

তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন,

 اَلْـبَخِيْلُ لَا يَدْخُلُ الْـجَنَّةَ وَلَوْ كَانَ عَابِدًا

অর্থ: “বখীল ব্যক্তি সম্মানিত জান্নাত মুবারক-এ প্রবেশ করবে না, যদিও সে আবিদ অর্থাৎ ইবাদতগুজার হোক না কেন।” না‘ঊযুবিল্লাহ!

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছেন-

عَنْ حَضْرَتْ كَعْبِ بْنِ عُجْرَةَ  رَضِىَ اللهُ تَـعَالـٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اُحْضُرُوا الْمِنْۢبَـرَ فَحَضَرْنَا فَـلَمَّا اِرْتَـقَى الدَّرَجَةَ قَالَ اٰمِيْـنَ فَـلَمَّا اِرْتَـقَى الدَّرَجَةَ الثَّانِـيَةَ قَالَ اٰمِيْـنَ فَـلَمَّا اِرْتَـقَى الدَّرَجَةَ الثَّالِثَةَ قَالَ اٰمِيْـنَ فَـلَمّاَ نَـزَلَ قُـلْنَا يَا رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَقَدْ سَـمِعْنَا مِنْكَ الْـيَـوْمَ شَيْـئًا مَا كُـنَّا نَسْمَعُهٗ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اِنَّ حَضْرَتْ جِبْـرِيْلَ عَلَيْهِ السَّلَامُ عَرَضَ لِـىْ فَـقَالَ بَـعُدَ مَنْ اَدْرَكَ رَمَضَانَ فَـلَمْ يُـغْفَرْ لَهٗ قُـلْتُ اٰمِيْـنَ فَـلَمَّا رَقِـيْتُ الثَّانِـيَةَ قَالَ بَـعُدَ مَنْ ذُكِـرْتَ عِنْدَهٗ فَـلَمْ يُصَلِّ عَلَـيْكَ قُـلْتُ اٰمِيْـنَ فَـلَمَّا رَقِـيْتُ الثَّالِثَةَ قَالَ بَـعُدَ مَنْ اَدْرَكَ اَبَـوَيْهِ الْكِـبَـرَ اَوْ اَحَدَهُـمَا فَـلَمْ يُدْخِلَاهُ الْـجَنَّةَ قُـلْتُ اٰمِيْـنَ

অর্থ: “হযরত কা’ব ইবনে উজরাহ্ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি একদিন আমাদেরকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মিম্বর শরীফ উনার নিকটবর্তী হতে বললেন। আমরা সকলে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মিম্বর শরীফ উনার নিকটবর্তী হলাম। অতঃপর তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মিম্বর শরীফ উনার প্রথম ধাপে আরোহণ মুবারক করেই বললেন, আমীন! দ্বিতীয় ধাপে আরোহণ মুবারক করেও বললেন, আমীন! তৃতীয় ধাপে আরোহণ মুবারক করেও বললেন, আমীন! এরপর মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র খুতবা মুবারক শেষে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যখন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মিম্বর শরীফ থেকে অবতরণ মুবারক করলেন, তখন আমরা বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আজকে আমরা আপনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুস সালাম মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র যবান মুবারক) থেকে এমন কিছু মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ শুনলাম, যা আমরা আর কখনো শুনিনি। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, (আমি যখন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মিম্বর শরীফ উনার প্রথম সিঁড়িতে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুদ দারাজাত মুবারক অর্থাৎ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ক্বদম মুবারক রাখলাম) তখন হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি আসলেন এবং বললেন, সে ব্যক্তি ধ্বংস বা হালাক হোক, যে ব্যক্তি সম্মানিত রমাদ্বান শরীফ মাস পেলো, অথচ তারপরও নিজের গুনাহ্-খতাগুলো ক্ষমা করাতে পারলো না। আমি বললাম আমীন! অর্থাৎ সে ধ্বংস হোক। অতঃপর দ্বিতীয় সিঁড়িতে যখন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুদ দারাজাত মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ক্বদম মুবারক) রাখলাম, তখন হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, সে ব্যক্তি ধ্বংস বা হালাক হোক, যে ব্যক্তির সম্মুখে আপনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় ইসিম বা নাম মুবারক উচ্চারণ করা হলো অথচ সে আপনার প্রতি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ছলাত মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র দুরূদ শরীফ) পাঠ করলো না। আমি বললাম, আমীন! অর্থাৎ সেও ধ্বংস হোক। অতঃপর যখন তৃতীয় সিঁড়িতে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুদ দারাজাত মুবারক রাখলাম, তখন হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, সে ব্যক্তি ধ্বংস বা হালাক হোক, যে ব্যক্তি পিতা-মাতা দু’জনকে অথবা দু’জনের একজনকে বৃদ্ধ বা বৃদ্ধা অবস্থায় পেয়েও তাদের খিদমত করে সম্মানিত জান্নাত মুবারক হাছিল করতে পারলো না, সে ব্যক্তি হালাক বা ধ্বংস। আমি বলালাম, আমীন! অর্থাৎ সে ধ্বংস হোক। (আল মু’জামুল কাবীর লিত ত্ববারনী ১৯/১৪৪, মুস্তাদরাকে হাকিম ৪/১৭০, শু‘আবুল ঈমান ৩/১৩৪, ফাদ্বলুছ ছলাতি ‘আলান নাবিয়্যী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ১/৩৪, মিশকাত শরীফ ইত্যাদি)

সুতরাং উপরোক্ত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফসমূহ থেকে অত্যন্ত সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হলো যে, যতবার নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় ইসিম বা নাম মুবারক উচ্চারণ করা হবে এবং শুনা হবে, ততবারই উনার প্রতি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ছলাত মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র দুরূদ শরীফ) পাঠ করা ফরয। কেউ যদি তা পাঠ না করে, তাহলে সে বখীল অর্থাৎ মহান আল্লাহ পাক উনার শত্রুতে পরিগণিত হবে, সে হালাক বা ধ্বংস হবে এবং সে জাহান্নামীও হবে, এতে কোনো সন্দেহ নেই। বরং যারা সন্দেহ করবে অথবা চু-চেরা করবে, তারাও ধ্বংস হয়ে জাহান্নামী হবে। না‘ঊযুবিল্লাহ!

তাহলে এই ফতওয়া কিভাবে শুদ্ধ হতে পারে যে, জীবনে মাত্র একবার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ছলাত মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র দুরূদ শরীফ) পাঠ করা ফরয? না‘ঊযুবিল্লাহ! কস্মিনকালেও শুদ্ধ নয়; বরং সম্পূর্ণরূপেই ভুল এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র শরীয়ত উনার খিলাফ হওয়ার কারণে তা কখনোই গ্রহণযোগ্য তো নয়ই; বরং তা সম্পূর্ণরূপেই পরিত্যাজ্য ও কুফরী। না‘ঊযুবিল্লাহ!

খ্বালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ছাহিবু সাইয়্যিদি সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ, ছাহিবে নেয়ামত, রহমাতুল্লিল আলামীন মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার সম্মানার্থে আমাদের সবাইকে হাক্বীক্বী ছহীহ সমঝ, বিশুদ্ধ আক্বীদাহ্, হুসনে যন মুবারক ও সর্বোচ্চ আদব মুবারক নছীব করুন এবং মাল-জান সমস্ত কিছু কুরবান করে অনন্তকালব্যাপী দায়িমীভাবে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করার তাওফীক্ব দান করুন। আমীন!

-মুহাদ্দিছ মুহম্মদ ছালিহুদ্দীন।

আল হাদ্বির ওয়ান নাযির, ছাহিবু লাওলাক, ছাহিবু ক্বাবা ক্বাওসাইনি আও আদনা, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি শুধু মহান আল্লাহ পাক তিনি নন; এছাড়া সব

সম্মানিত ও পবিত্র সূরা তাহরীম শরীফ উনার শানে নুযূলকে কেন্দ্র করে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র শান মুবারক উনার খিলাফ কুফরী বক্তব্য ও তার খণ্ডনমূলক জবাব

নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের যারা বিরোধী তাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা এবং যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা সমস্ত উম্মতের জন্য ফরযে আইন

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ উনার সম্মানার্থে খরচ করার বেমেছাল ফযীলত মুবারক

সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুননাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি শারে’ বা সম্মানিত শরীয়ত প্রণেতা