ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি ও ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা-৪৯

সংখ্যা: ১৭৬তম সংখ্যা | বিভাগ:

আল্লামা আবুল বাশার মুহম্মদ রুহুল হাসান

 [শয়তান যে মানুষকে নেক সুরতে ধোঁকা দেয়, এ বিষয়টি ভালভাবে অনুধাবন করেছিল শয়তানের অনুচর ইহুদী এবং খ্রিস্টানরা। মুসলমানদের সোনালী যুগ এসেছিল শুধু ইসলামের পরিপূর্ণ অনুসরণের ফলে। শয়তানের চর ইহুদী খ্রিস্টানরা বুঝতে পেরেছিল মুসলমানদের মধ্যে বিভেদ, অনৈক্য, সংঘাত সৃষ্টি করতে পারলেই ইসলামের জাগরণ এবং বিশ্বশক্তি হিসেবে মুসলমানদের উত্থান ঠেকানো যাবে। আর তা করতে হবে ইসলামের মধ্যে ইসলামের নামে নতুন মতবাদ প্রবেশ করিয়ে। শুরু হয় দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা যার মূলে থাকে খ্রিস্টীয় ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদ। জন্ম হয় ওহাবী মতবাদের। ওহাবী মতবাদ সৃষ্টির মূলে থাকে একজন ব্রিটিশ গুপ্তচর হেমপার। মিসর, ইরাক, ইরান, হেজাজ ও তুরস্কে তার গোয়েন্দা তৎপরতা চালায় মুসলমানদের বিভ্রান্ত করার জন্য। “ঈড়হভবংংরড়হ ড়ভ ইৎরঃরংয ঝঢ়ু ধহফ ইৎরঃরংয বহসরঃু ধমধরহংঃ ওংষধস” গ্রন্থ হচ্ছে হেমপারের স্বীকারোক্তিমূলক রচনা। যা মূল গ্রন্থ থেকে ধারাবাহিকভাবে তার অনুবাদ প্রকাশ করা হচ্ছে। ইনশাআল্লাহ।

¬

ওহাবী মতবাদের নীল নকশা

(ধারাবাহিক)

ওহাবী নজদী লিখেছে, সে তার দেশ নজদে চলে যাচ্ছে। সেখানে তার ঠিকানাও উল্লেখ করেছে। আমি তখনি তার দেশের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম।

অত্যন্ত ক্লান্তিকর ভ্রমণ শেষে আমি তার ওখানে পৌঁছলাম। আমি তাকে বাড়ীতেই পেলাম। তার ওজন অনেক কমে গিয়েছিল। অবশ্য সে ব্যাপারে তাকে কিছু বলিনি। পরে জানলাম সে বিয়ে করেছে।

আমরা নিজেরা ঠিক করে নিলাম যে, সে মানুষের কাছে আমাকে তার ভৃত্য হিসেবে পরিচয় করিয়ে দিবে এবং আমাকে তার কাজে কোথাও পাঠিয়েছিল সেখান থেকে ফিরেছি। ওহাবী নজদী সেভাবেই আমাকে পরিচয় করিয়ে দিল।

আমি দু’বছর ওহাবী নজদীর সঙ্গে অবস্থান করেছিলাম। তার দাওয়াত প্রচারের বিষয়ে আমরা একটা কর্মসূচী নেই। শেষ পর্যন্ত হিজরী ১১৪৩ মোতাবেক ১৭৩০ খ্রিস্টাব্দে আমি তাকে একটা সিদ্ধান্ত নিতে উদ্বুদ্ধ করতে সক্ষম হই। ওহাবী নজদী তার চারপাশে কিছু সমর্থক যোগাড় করে তার ঘনিষ্ট লোকজনদের মধ্যে দাওয়াত প্রচার করতে লাগলো। দিনে দিনে তার কার্যক্রম বাড়তে থাকলো। আমি তার চারপার্শে¦ দেহরক্ষীর ব্যবস্থা করলাম শত্রুর আক্রমণ মোকাবেলা করার জন্যে। তারা যা চাইতো সে রকম অর্থ এবং সম্পদ দিতে থাকলাম। যখনই শত্রুরা মাথা চাড়া দিয়ে উঠতো আমি তাদের শান্ত করার চেষ্টা করতাম। তার আহ্বান যত বাড়তে থাকে তত তার শত্রুর সংখ্যাও বাড়তে থাকে। মাঝে মাঝে সে তার এই দাওয়াতের কার্যক্রম বন্ধ করে দিতে চাইতো। বিশেষত তার উপর ঘন ঘন আক্রমণ হতে দেখে ভীষণ হতাশ হয়ে পড়ে। কিন্তু আমি তাকে ছেড়ে কখনো যাইনি বরং তাকে উৎসাহিত করতে থাকি। আমি প্রায়শঃ বলতাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তোমার চেয়ে অনেক বেশী কষ্ট সহ্য করেছেন। তুমি জেনে রাখ সে পথেই রয়েছে সম্মান ও প্রতিপত্তি। যে কোন বিপ্লবীদের মত তোমাকেও কিছু দুর্যোগ পোহাতে হবে।

আমি জানতাম তার উপর যেকোন মুহূর্তে শত্রুর আক্রমণ হতে পারে তাই শত্রুপক্ষের ভিতর গোয়েন্দা নিয়োগ করেছিলাম। যখন শত্রু তার ক্ষতি করতে চাইতো, গোয়েন্দারা আমাকে জানিয়ে দিত এবং আমি তা প্রতিহত করতাম। একবার জানলাম, শত্রুরা ওহাবী নজদীকে মেরে ফেলার চেষ্টায় আছে। আমি তখনি তাদের সকল প্রচেষ্টা নষ্ট করে দেয়ার জন্য সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেই। যখন ওহাবী নজদীর চারপাশের লোক তাকে হত্যার প্রচেষ্টার খবর জেনে যায় তখন তারাও হত্যার পরিকল্পনাকারীদের ঘৃণা ও নিন্দা করতে থাকে। এতে করে হত্যা লিপ্সু ব্যক্তিরা নিজেরা নিজেদের ফাঁদে আটকে যায়।

ওহাবী নজদী আমাকে অঙ্গীকার করেছিলো যে, স্কিমের ছয়টি ধারাই সে বাস্তবায়িত করবে। সে আরও বলে, কিছু সময়ের জন্য আমি ধারাগুলোর আংশিক বাস্তবায়ন করবো। সে তার সিদ্ধান্তে সঠিক ছিল কেননা সে সময় সবগুলো ধারা বাস্তবায়ন সম্ভব ছিল না।

সে উপলব্ধি করেছিলো যে, কা’বা শরীফ ধ্বংস করা সম্ভব নয়। ফলে কা’বা শরীফ মূর্তি সদৃশ্য (নাঊজুবিল্লাহ) এ ধারণাটি প্রচার থেকে সে বিরত থাকে। এ ছাড়াও কুরআন শরীফ পরিবর্তন করে ছাপানোর পরিকল্পনাও সে বাদ দেয়। মক্কা শরীফ-এর শরীফ বংশীয় লোকদের এবং ইস্তাম্বুলের শাসকদের ওহাবী নজদী সবসময় ভয় পেতো। সে বলতো আমরা যদি এ দু’টি কাজ করি তবে শক্তিশালী আর্মি দ্বারা আমাদের আঘাত করা হবে। আমি তার মতকে সমর্থন করেছিলাম কেননা সে সঠিক ছিল। কারণ পরিস্থিতি আমাদের অনুকূলে ছিল না। কয়েক বছর পর, কমনওয়েলথ মন্ত্রণালয়, দেরিয়ার আমির বিন সউদকে আমাদের পথে নিয়ে আসতে সক্ষম হই। তারা আমার কাছে বার্তা পাঠায় আমি যেন এই দু’ব্যক্তি (ওহাবী নজদী এবং বিন সউদ) এর মধ্যে পারস্পরিক মমতা এবং সমঝোতা প্রতিষ্ঠা করি। মুসলমানদের হৃদয় জয় করার উদ্দেশ্যে আমরা ওহাবী নজদীকে ধর্মীয়ভাবে এবং বিন সউদকে রাজনৈতিকভাবে কাজে লাগাই।

এটা ঐতিহাসিক সত্য যে, ধর্মের উপর প্রতিষ্ঠিত রাষ্ট্র দীর্ঘস্থায়ী হয় এবং প্রায়োগিক প্রচেষ্টায় বেশী শক্তিশালী হয়ে থাকে।

চলবে।

যুগের আবূ জাহিল, মুনাফিক ও দাজ্জালে কাযযাবদের বিরোধিতাই প্রমাণ করে যে, রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিলআলুহুল আলী হক্ব। খারিজীপন্থী ওহাবীদের মিথ্যা অপপ্রচারের দাঁতভাঙ্গা জবাব-৪৯

চাঁদ দেখা ও নতুন চন্দ্রতারিখ নিয়ে প্রাসঙ্গিক আলোচনা-১৮

বাতিল ফিরক্বা ওহাবীদের অখ্যাত মুখপত্র আল কাউসারের মিথ্যাচারিতার জবাব-১২ হাদীছ জালিয়াতী, ইবারত কারচুপি ও কিতাব নকল করা ওহাবীদেরই জন্মগত বদ অভ্যাস

‘থার্টিফাস্ট নাইট, ভালেন্টাইন ডে আর পহেলা বৈশাখের’ নামে হুজ্জোতির জন্য ধর্মব্যবসায়ীদের কৌশলগত নিষ্ক্রীয়তা, স্বার্থবাদী মৌসুমী রাজনৈতিক তৎপরতা এবং সংস্কৃতি বিপননকারীদের দূরভিসন্ধিতা ও মধ্যবিত্তের  তত্ত্ব-তালাশহীন প্রবণতা তথা হুজুগে মাতা প্রবৃত্তিই দায়ী

পহেলা বৈশাখ বাংলা সনের প্রথম দিন। দিনটি পালিত হচ্ছে বাঙালীর ঐতিহ্য ধরে রাখার চেতনা হিসেবে। মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ইত্যাদি পরিচয়ের বাইরে আলাদাভাবে এ বাঙালী পরিচয়ের দাবী। কিন্তু পহেলা বৈশাখ উদযাপনকারীরা একদিকে যেমন জানেনা যে, বাংলা সনের ‘সন’ কথাটি আরবী। ‘পহেলা’ শব্দটি ফারসী। আর হালখাতা শব্দতো প্রকাশ্য মুসলমানী।