মওযূ ও ছহীহ হাদীছ শরীফ নির্ণয়ের প্রকৃত মানদণ্ড

সংখ্যা: ২৯৭তম সংখ্যা | বিভাগ:

খ্বালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,

وَرَفَـعْنَا لَكَ ذِكْرَكَ

অর্থ: “আর (আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব মাহবূব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!) আমি আপনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র যিকির মুবারক, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আলোচনা মুবারক, শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক বুলন্দ থেকে বুলন্দতর করেছি।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা আলাম নাশ্রহ্ শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৪)

মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব মাহবূব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র যিকির মুবারক, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আলোচনা মুবারক, শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক কতটুকু বুলন্দ করেছেন, এটা তিনি এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব মাহবূব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অর্থাৎ উনারাই সবচেয়ে ভালো জানেন। সুবহানাল্লাহ! তবে বাহ্যিকভাবে বুঝার জন্য মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কালিমা শরীফই যথেষ্ট। সুবহানাল্লাহ! স্বয়ং মহান আল্লাহ পাক তিনি নিজেই আশিক্ব হয়ে উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ইসিম বা নাম মুবারক উনার সাথে উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব মাহবূব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় ইসিম বা নাম মুবারক সংযুক্ত করে দিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! একমাত্র মহান আল্লাহ পাক তিনি ব্যতীত হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারাসহ সমস্ত কায়িনাতবাসী সকলের মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কালিমা শরীফ হচ্ছেন-

لَاۤ اِلٰهَ اِلَّا اللهُ مُحَمَّدٌ رَّسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ

এই বিষয়ে সমস্ত উম্মতের ইজমা প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন অর্থাৎ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র শরীয়ত উনার সর্বাধিক বিশুদ্ধ ফতওয়া হচ্ছেন- ক্বিয়ামত পর্যন্ত কেউ যদি শুধু لَاۤ اِلٰهَ اِلَّا اللهُ বলে, তাহলেও সে ঈমানদার হতে পারবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত مُحَمَّدٌ رَّسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ না বলবে। সুবহানাল্লাহ! নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক এক কথায় তিনি শুধু যিনি খ্বালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি নন; এছাড়া সমস্ত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক উনাদের অধিকারী হচ্ছেন তিনি। সুবহানাল্লাহ!

আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, রহমাতুল্লিল আলামীন মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “মহান আল্লাহ পাক তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে মহান আল্লাহ পাক উনার মাহবূব, মুরাদ ও সমগ্র কায়িনাতের মালিক হিসেবে সৃষ্টি মুবারক করেছেন। সুবহানাল্লাহ! মহান আল্লাহ পাক তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সমস্ত কিছু দিয়ে সৃষ্টি মুবারক করে উনাকে উনার সাথে সংযুক্ত করেছেন এবং উনার কুদরত মুবারক অর্থাৎ নিয়ন্ত্রনে রেখেছেন অর্থাৎ উনার হাক্বীক্বী যিয়ারত, ছোহবত, দীদার মুবারক-এ উনি ছিলেন, আছেন এবং অনন্তকাল থাকবেন। সুবহানাল্লাহ! এর মধ্যে কোনো জুদায়ী নেই। সুবহানাল্লাহ! আর মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে সংযুক্ত এবং সম্পৃক্ত হওয়ার কারণে উনারাও একই সম্মানে সম্মানিত এবং একই ফযীলত মুবারক উনাদের অধিকারী। উনারা শুধু মহান আল্লাহ পাক তিনি নন এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব মাহবূব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নন; এছাড়া সমস্ত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক উনাদের অধিকারী হচ্ছেন উনারা। সুবহানাল্লাহ!

এ প্রসঙ্গে যিনি খ্বালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,

اِنَّـمَا يُرِيْدُ اللهُ لِـيُذْهِبَ عَنْكُمُ الرِّجْسَ اَهْلَ الْبَـيْتِ وَيُطَهِّرَكُمْ تَطْهِيْـرًا

অর্থ: “হে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম! নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি চান আপনাদের থেকে সমস্ত প্রকার অপবিত্রতা দূর করে আপনাদেরকে পবিত্র করার মতো পবিত্র করতে। অর্থাৎ তিনি আপনাদেরকে পবিত্র করার মতো পবিত্র করেই সৃষ্টি মুবারক করেছেন।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা আহযাব শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৩৩)

আর মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছেন,

عَنْ اِمَامِ الْاَوَّلِ سَيِّدِنَا حَضْرَتْ كَرَّمَ اللهُ وَجْهَهٗ عَلَـيْهِ السَّلَامُ قَالَ اِنَّ النَّبِـىَّ صَلَّى اللهُ عَلَـيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يَـقُوْلُ نَـحْنُ اَهْلُ بَـيْتٍ طَهَّرَهُمُ اللهُ مِنْ شَجَرَةِ النُّـبُـوَّةِ وَمَوْضِعِ الرِّسَالَـةِ وَمُـخْتَلِفِ الْمَلَائِكَةِ وَبَـيْتِ الرَّحْـمَةِ وَمَعْدِنِ الْعِلْمِ

অর্থ: “ইমামুল আউওয়াল সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নিশ্চয়ই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সবসময় ইরশাদ মুবারক করতেন, আমরা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম। সুবহানাল্লাহ! মহান আল্লাহ পাক তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে (আমাদেরকে) সম্মানিত নুবুওওয়াত মুবারক উনার বৃক্ষ, সম্মানিত রিসালাত মুবারক উনার স্থান, বিভিন্ন হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদের, উনাদের দ্বারা সম্মানিত খিদমত মুবারক, সম্মানিত রহমত মুবারক উনার ঘর মুবারক এবং সম্মানিত ইলিম মুবারক উনার খনি মুবারক (ইত্যাদি সমস্ত কিছু) থেকে পবিত্র রেখেছেন, ছমাদ অর্থাৎ বেনিয়ায (অমুখাপেক্ষী) করেছেন।” সুবহানাল্লাহ! (তাফসীরে দুররে মানছূর ৬/৬০৬, ইবনে আবী হাতিম ৯/৩১৩৩)

অর্থাৎ উনাদেরকে সমস্ত কিছু থেকে পবিত্র করে, বেনিয়ায করে সমস্ত কিছুর মালিকানা হাদিয়া মুবারক করে সৃষ্টি মুবারক করেছেন। সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ!

এ কারণে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছেন,

عَنْ حَضْرَتْ اَنَسٍ رَضِىَ اللهُ تَـعَالـٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نَـحْنُ اَهْلُ بَـيْتٍ لَا يُـقَاسُ بِنَا اَحَدٌ

অর্থ: “হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আমরা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম। আমাদের সাথে অন্য কারো ক্বিয়াস বা তুলনা করা যাবে না।” সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! (দায়লামী শরীফ ৪/২৮৩, জামি‘উল আহাদীছ ২২/২১৯, জাম‘উল জাওয়ামি’ ১/২৪৯৫০, যাখাইরুল ‘উক্ববা ১/১৭, সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ১১/৭ ইত্যাদি)

কিন্তু মরদূদ শয়তান এবং তার শাগরিদ ইহুদী-নাছারা, কাফির-মুশরিক, মুনাফিক্ব ও বাতিল ফিরক্বার লোকেরা শুরু থেকেই সবসময় কোশেশ করেছে, কিভাবে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের শান-মান মুবারক খাটো করা যায়, উনাদেরকে নিয়ে চূ-চেরা, ক্বীল-ক্বাল করা যায়, উনাদেরকে হেয় প্রতিপন্ন করা যায়। না‘ঊযুবিল্লাহ! না‘ঊযুবিল্লাহ! না‘ঊযুবিল্লাহ! তাই তারা বিভিন্ন কূটকৌশলের আশ্রয় নিয়েছে। না‘ঊযুবিল্লাহ! মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ উনাকে তারা তাহরীফ বা পরিবর্তন-পরিবর্ধন করতে পারেনি, আর কস্মিনকালেও পারবে না। কারণ মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,

اِنَّا نَـحْنُ نَـزَّلْـنَا الذِّكْـرَ وَاِنَّا لَهٗ لَـحٰفِظُوْنَ

অর্থ: “নিশ্চয়ই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ আমিই নাযিল করেছি এবং নিশ্চয়ই আমিই উনাকে হেফাযত করবো।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা হিজ্র শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৯)

কিন্তু তারা অত্যন্ত কূটকৌশলে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে তাদের অনেক মনগড়া, মওযূ, বানোয়াট, বাতিল এবং ইসরাঈলী বর্ণনা প্রবেশ করিয়ে দিয়েছে। না‘ঊযুবিল্লাহ! মুহাদ্দিছীনে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা অক্লান্ত পরিশ্রম করে সেগুলো যাচাই-বাছাই করার কোশেশ করেছেন এবং উনাদের সাধ্য-সামর্থ্য অনুযায়ী যাচাই-বাছাই করেছেনও। এজন্য উনারা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ গ্রহণ করার ব্যাপারে অনেক শর্ত-শারায়েত নির্ধারণ করে দিয়েছিলেন। কিন্তু উনাদের অজান্তে একটা শর্ত বাদ পড়ে গেছে। আর সেটা হচ্ছেন- ‘নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার, উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আব্বা-আম্মা আলাইহিমাস সালাম উনাদের, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের, হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের, হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদের এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার শান মুবারক উনার খিলাফ কোনো বর্ণনা গ্রহণ করা যাবে না। সেটা যত বড় ছিক্বাহ্ রাবীই বর্ণনা করুক না কেন, তা মওযূ ও বাতিল হিসেবে পরিগণিত হবে। আর উনাদের শান মুবারক সম্মত কোনো বর্ণনা, সেটা যত দূর্বল রাবীই বর্ণনা করুক না কেন, তা অবশ্যই গ্রহণযোগ্য হবেন এবং ছহীহ হিসেবে পরিগণিত হবেন।’ সুবহানাল্লাহ! আর এই শর্ত সংযুক্ত না থাকার কারণে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার, উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আব্বা-আম্মা আলাইহিমাস সালাম উনাদের, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের, হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের, হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদের এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার শান মুবারক উনার খিলাফ অনেক মনগড়া, মওযূ, বানোয়াট, বাতিল এবং ইসরাঈলী বর্ণনা বিভিন্ন হাদীছ, তাফসীর, ফিক্বাহ-ফতওয়া, আক্বাইদ, উছূল, সীরাত, ইতিহাস ও অন্যান্য গ্রন্থে অনুপ্রবেশ ঘটেছে। না‘ঊযুবিল্লাহ! আর অসংখ্য মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ছহীহ হাদীছ শরীফ কিতাবে লিপিবদ্ধ হওয়া থেকে বাদ পড়ে গেছেন। আর যেগুলো লিপিবদ্ধ হয়েছেন, সেগুলোকে আবার বানোয়াট ও মওযূ হিসেবে পরিগণিত করা হয়েছে। না‘ঊযুবিল্লাহ! যার কারণে উনাদের হাক্বীক্বী শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক অনুধাবনে এবং উনাদের প্রতি সর্বোচ্চ বিশুদ্ধ আক্বীদাহ্ ও হুসনে যন মুবারক পোষণে পূর্ববর্তী ও পরবর্তী সমস্ত মুসলিম উম্মাহ্ ব্যর্থ হয়েছেন। না‘ঊযুবিল্লাহ! আর এ সকল কারণে ইহুদী-নাছারা, কাফির-মুশরিক, মুনাফিক্ব, বাতিল ৭২ ফেরক্বার লোকেরা ও নাস্তিকরা মুসলিম উম্মাহর মাঝে ফেতনার আগুন ছড়াতে সমর্থ হয়েছে। না‘ঊযুবিল্লাহ! বর্তমানে সেই ফেতনার আগুন লেলিহান শিখার ন্যায় দাউ দাউ করে জ্বলছে এবং গোটা মুসলিম উম্মাহকে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ছারখার করে দিচ্ছে। তাই এই সকল মওযূ হাদীছগুলো নির্ণয় করা এবং তার খণ্ডনমূলক জবাব দেয়া পূর্ববর্তী ও পরবর্তী গোটা মুসলিম উম্মাহর জন্য ফরযে আইন ছিলো। কাজেই বর্তমানে যারা আছে তাদের সকলের ঈমানী দায়িত্ব এবং ফরযে আইন হচ্ছে এই সুমহান কাজের আনজাম দেয়া।” সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম!

ছাহিবু সাইয়্যিদি সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, রহমাতুল্লিল আলামীন মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার, উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আব্বা-আম্মা আলাইহিমাস সালাম উনাদের, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের, হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের, হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদের এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার শান মুবারক উনার খিলাফ কোনো বর্ণনা, কোনো ক্বওল (কথা) বা লিখা গ্রহণ করা যাবে না। সেটা যত বড় ইমাম-মুজতাহিদ, ওলীআল্লাহ ও ছিক্বাহ্ রাবীই বর্ণনা করুক না কেন, বলুক না কেন বা লিখুক না কেন, তা অবশ্যই মওযূ ও বাতিল হিসেবে পরিগণিত হবে। আর উনাদের শান মুবারক সম্মত কোনো বর্ণনা, সেটা যত দূর্বল রাবীই বর্ণনা করুক না কেন, তা অবশ্যই গ্রহণযোগ্য হবেন এবং ছহীহ হিসেবে পরিগণিত হবেন।” সুবহানা মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম!

ছাহিবু সাইয়্যিদি সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, রহমাতুল্লিল আলামীন মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন, “নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার, উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আব্বা-আম্মা আলাইহিমাস সালাম উনাদের, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের, হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের এবং হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদের শান মুবারক উনার খিলাফ কোনো কথা বা লিখা, সেটা যত বড় ইমাম-মুজতাহিদ, ওলীআল্লাহ বলুক না কেন বা লিখুক না কেন, তা কস্মিনাকালেও গ্রহণ করা যাবে না। এগুলো বলা, লিখা, গ্রহণ করা এবং সমর্থন করা প্রত্যেকটাই কাট্টা কুফরী।” না‘ঊযুবিল্লাহ!

এটাই চূড়ান্ত ফায়ছালা মুবারক। কেননা ছাহিবু সাইয়্যিদি সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, রহমাতুল্লিল আলামীন মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম তিনি শুধু মহান আল্লাহ পাক তিনি নন এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব মাহবূব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নন; এছাড়া সমস্ত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক উনাদের মালিক এবং তিনি একমাত্র মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব মাহবূব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অর্থাৎ উনারা দু’জন ব্যতীত সকলের মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র শায়েখ আলাইহিস সালাম। আর সকলে উনার মুরীদের অন্তর্ভুক্ত। হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদের পরে সবচেয়ে বড় ওলীউল্লাহ হযরত মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনিসহ পৃথিবীর ইতিহাসে এই পর্যন্ত যত হযরত আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম এবং হযরত মুজাদ্দিদ রহমতুল্লাহি আলাইহিম অতীত হয়েছেন, উনারা প্রত্যেকেই আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, রহমাতুল্লিল আলামীন মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত খিদমত মুবারক-এ, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ছোহবত মুবারক-এ বিভিন্ন সময় বিভিন্নভাবে এসে এবং বিভিন্ন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দিয়ে মহাসম্মানিত বিশেষ নিয়ামত মুবারক হাছিল করেছেন এবং হাছিল করে যাচ্ছেন। সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম!

কাজেই ছহীহ হাদীছ শরীফ নির্ণয়ের প্রকৃত মানদণ্ড হচ্ছেন-

* নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র শান মুবারক উনার খিলাফ না হওয়া,

* উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আব্বা-আম্মা আলাইহিমাস সালাম উনাদের মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র শান মুবারক উনার খিলাফ না হওয়া,

* মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র শান মুবারক উনার খিলাফ না হওয়া,

* মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আবনাউ রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত বানাতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র শান মুবারক উনার খিলাফ না হওয়া,

* মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র শান মুবারক উনার খিলাফ না হওয়া,

* হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত শান মুবারক উনার খিলাফ না হওয়া,

* হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদের সম্মানিত শান মুবারক উনার খিলাফ না হওয়া এবং

* মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার সম্মানিত শান মুবারক উনার খিলাফ না হওয়া।

আর এর বিপরীত যত বর্ণনা রয়েছে, প্রত্যেকাটাই মওযূ।

খ্বালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, রহমাতুল্লিল আলামীন মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার সম্মানার্থে সমস্ত মুসলমান পুরুষ-মহিলা, জিন-ইনসান, ছোট-বড় সবাইকে এবং আমাদের সবাইকে হাক্বীক্বী ছহীহ সমঝ, সর্বোচ্চ বিশুদ্ধ আক্বীদাহ্ ও হুসনে যন মুবারক নছীব করুন। আমীন! আমীন! আমীন!

-মুহাদ্দিছ মুহম্মদ আমীন।

মহান আল্লাহ পাক তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে নবী-রসূল হিসেবে, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হিসেবে, উনার মাহবূব, মুরাদ ও সমগ্র কায়িনাতের মালিক হিসেবে সৃষ্টি মুবারক করেছেন

নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আব্বা-আম্মা আলাইহিমাস সালাম উনারাই হচ্ছেন সম্মানিত ঈমান। উনাদের মুহব্বত মুবারক ব্যতীত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কালিমা শরীফ পূর্ণ হয় না

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের প্রতি সমস্ত সৃষ্টির হক

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আবনাউ রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত বানাতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র গোলামী মুবারক করা সমস্ত সৃষ্টির জন্য ফরয

ছাহিবু সাইয়্যিদি সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, রহমাতুল্লিল আলামীন মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার বেমেছাল মহাসম্মানিত তা‘য়াল্লুক্ব-নিসবত মুবারক